অন্তর্বর্তী
সরকারের প্রধান উপদেষ্টা
ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে দায়ের করা মামলার অভিযোগ গঠন ও মামলার পুরো
কার্যক্রম বাতিল করেছে দেশের সর্বোচ্চ আদালত, আপিল বিভাগ। আজ (২৩ এপ্রিল) সকাল
সাড়ে ৯টায় প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত
আহমেদের নেতৃত্বাধীন চার সদস্যের আপিল বেঞ্চ সর্বসম্মতভাবে এ রায় ঘোষণা
করেন। এর মাধ্যমে হাইকোর্টের
দেওয়া আগের রায় বাতিল করে ড. ইউনূসের পক্ষে
রায় দেন তারা।
এই
মামলায় রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে অংশ নেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন
উদ্দিন, দুদকের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট আসিফ হোসাইন এবং ড. ইউনূসের পক্ষে
উপস্থিত ছিলেন ব্যারিস্টার আবদুল্লাহ আল মামুন। ব্যারিস্টার
মামুন বলেন, তারা অভিযোগ গঠনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে আবেদন করেছিলেন। কিন্তু হাইকোর্ট আবেদনটি খারিজ করে দেন। পরে আপিল বিভাগে আবেদন করলে আদালত মত দেন, মামলাটি
চলতে পারে না। কারণ, এটি অবৈধভাবে প্রত্যাহার করা হয়েছিল।
তিনি
আরও জানান, ড. ইউনূস প্রধান
উপদেষ্টার দায়িত্ব নেওয়ার পরপরই মামলাটি হঠাৎ করে প্রত্যাহার করা হয়। ৮ আগস্ট তিনি
দায়িত্ব নেন এবং ১১ আগস্ট কোনো
নোটিশ বা যথাযথ আইনি
প্রক্রিয়া ছাড়াই মামলাটি প্রত্যাহার করা হয়। এই নিয়ে আদালতে
তারা যুক্তি দেন যে, মামলাটি প্রত্যাহারের কোনো আইনগত ভিত্তি ছিল না এবং পুরো
প্রক্রিয়াটিই ছিল ত্রুটিপূর্ণ। এছাড়া মামলার প্রকৃতপক্ষে কোনো ভিত্তিও ছিল না—শ্রমিকদের টাকা
সরাসরি তাদের অ্যাকাউন্টে বিতরণ করা হয়েছিল, যা কোম্পানির অর্থ
নয়। এই মামলার উদ্দেশ্য
ছিল শুধুই ইউনূসকে হয়রানি ও অপমান করা।
২০২৩
সালের ৩০ মে দুর্নীতি
দমন কমিশনের (দুদক) উপ-পরিচালক গুলশান
আনোয়ার প্রধান বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। অভিযোগে বলা হয়, আসামিরা ২৫ কোটি ২২
লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন এবং তা অবৈধভাবে স্থানান্তর
করেছেন, যা মানি লন্ডারিং
প্রতিরোধ আইনে অপরাধ হিসেবে বিবেচিত। এরপর গত বছরের ১২
জুন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪
এর বিচারক সৈয়দ আরাফাত হোসেন ড. ইউনূসসহ ১৪
জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন। এই আদেশের বিরুদ্ধে
ইউনূসসহ সাতজন হাইকোর্টে আবেদন করলে ২৪ জুলাই হাইকোর্ট
তা খারিজ করে দেন। এরপর ইউনূস আপিল বিভাগে আবেদন করেন, এবং দীর্ঘ শুনানি শেষে আজ আপিল বিভাগ
মামলার কার্যক্রম পুরোপুরি বাতিল করে দেন।
আইনজীবী
আবদুল্লাহ আল মামুন জানান,
ড. ইউনূস সব সময় আইনের
প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকেছেন এবং শুরু থেকেই বলে আসছেন—যদি তিনি দোষী প্রমাণিত হন, তবে আইনানুযায়ী শাস্তি মেনে নেবেন।