বাংলা নববর্ষ ১৪৩২ উদযাপন উপলক্ষে আজ (১৪ এপ্রিল) সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের সামনে থেকে শুরু হয়েছে ঐতিহ্যবাহী ‘বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা’। সকাল ৯টায় শুরু হওয়া এই শোভাযাত্রায় অংশ নিয়েছেন হাজারো মানুষ, যারা উৎসবের রঙে রঙিন হয়ে হাজির হয়েছেন প্রাণের টানে।
সকালে সরেজমিনে দেখা যায়, চারুকলা প্রাঙ্গণ রূপ নিয়েছে এক উৎসবমুখর মিলনমেলায়। ভোরের আলো ফোটার সঙ্গে সঙ্গে মানুষজন জড়ো হতে শুরু করেন। রমনা, টিএসসি, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানসহ আশপাশের এলাকাগুলোতেও ছিল মানুষের ঢল।
শোভাযাত্রায় অংশ নেন চারুকলা অনুষদের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী, সাংস্কৃতিক সংগঠনের সদস্য এবং নানা বয়সী সাধারণ মানুষ। ঢাবির উপাচার্য ড. নিয়াজ আহমেদ খানের নেতৃত্বে দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এবং শিক্ষকরাও এতে অংশগ্রহণ করেন।
শোভাযাত্রায় মুখোশ, পাপেট, বাঁশের তৈরি বিশাল বাঘ, পাখি, মাছসহ গ্রামীণ জীবন ও প্রকৃতিনির্ভর মানুষের সংগ্রামের চিত্র ফুটে ওঠে। রঙিন পোশাকে, ফুলের মালা ও চুড়িতে সেজে নারী-পুরুষ সবাই একত্রে এই আনন্দে মেতে ওঠেন। শিশুদের মুখেও ছিল আনন্দের ঝিলিক—তারা ছোট ছোট মুখোশ পরে ও হাতে পতাকা নিয়ে অংশ নেয় মিছিলে।
শুধু ঢাকাতেই নয়, দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকেও মানুষ এসেছেন এই শোভাযাত্রায় অংশ নিতে। এক দর্শনার্থী বলেন, “প্রতি বছর এই শোভাযাত্রার জন্য অপেক্ষা করি। এটি আমাদের সংস্কৃতির প্রতি ভালোবাসা ও ঐক্যের প্রতীক।”
আমজাদ হোসেন নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, “এত মানুষ একসঙ্গে হওয়ার আনন্দই সবচেয়ে বড়। ঐতিহ্যকে এভাবে উদযাপন করার অনুভূতি সত্যিই অন্যরকম।”
শোভাযাত্রাকে ঘিরে কঠোর নিরাপত্তার ব্যবস্থা ছিল চোখে পড়ার মতো। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা সতর্কভাবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
‘নববর্ষের ঐকতান, ফ্যাসিবাদের অবসান’—এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে শোভাযাত্রাটি চারুকলা অনুষদ থেকে শুরু হয়ে শাহবাগ মোড়, টিএসসি, শহীদ মিনার, শারীরিক শিক্ষা কেন্দ্র, দোয়েল চত্বর ও বাংলা একাডেমির সামনে দিয়ে ঘুরে আবার চারুকলা প্রাঙ্গণে ফিরে আসে।