প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, মানুষের মধ্যে যে ঐক্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, সেসব প্রতিকূলতার সত্ত্বেও ঐক্য অটুট রাখার আহ্বান জানাচ্ছি। তিনি উল্লেখ করেন, নতুন প্রজন্মের আত্মত্যাগের বিনিময়ে আমরা নতুন বাংলাদেশ পেয়েছি, এবং সেই বাংলাদেশকে ধরে রাখতে সবার মধ্যে আরও দৃঢ় ঐক্য গড়ে তুলতে হবে।
আজ (৩১ মার্চ) রাজধানীর জাতীয় ঈদগাহ মাঠে ঈদুল ফিতরের নামাজের পর সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
ড. ইউনূস বলেন, যারা নতুন বাংলাদেশ গড়তে নিজের জীবন উৎসর্গ করেছেন এবং আহত হয়ে স্বাভাবিক জীবন হারিয়েছেন, তাদের জন্য দোয়া করা উচিত। তাদের স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়তে জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলতে হবে। তিনি আরও বলেন, আমরা যেন একটি ঐক্যবদ্ধ জাতি হিসেবে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে পারি, তার জন্য আমাদের সবার কাজ করতে হবে। যাঁরা নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখে আত্মাহুতি দিয়েছেন, তাদের স্বপ্ন আমরা বাস্তবায়ন করব। যত বাধাই আসুক, ঐক্যবদ্ধ জাতি হিসেবে নতুন বাংলাদেশ গড়ে তুলব।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আজ বাংলাদেশে প্রতিটি গ্রামে, বাজারে, গঞ্জে ও শহরে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হচ্ছে। জাতির পক্ষ থেকে সবাইকে ঈদ মোবারক। যাঁরা ঈদের জামাতে শরিক হতে পারেননি, তাদেরকেও ঈদ মোবারক। মা-বোনের ঘরে যারা আছেন, তাদেরকেও ঈদ মোবারক। প্রবাসী ভাইদের যারা বিদেশে আছেন এবং হয়তো ঈদের জামাতে অংশগ্রহণ করতে পারছেন না, তাদের ঈদ মোবারক। পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে যারা আছেন, তাদেরও আমরা ভুলে যাইনি। তাদের ঈদ মোবারক। যাঁরা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন এবং জামাতে আসতে পারেননি, তাদেরকেও ঈদ মোবারক।
ড. ইউনূস বলেন, ঈদ হল নৈকট্য অর্জনের দিন, ভালোবাসার দিন। তিনি সবাইকে আহ্বান জানিয়ে বলেন, আমরা যেন এই দিনটি সঠিকভাবে উদযাপন করতে পারি এবং ভালোবাসা পৌঁছে দিতে পারি। আজকের দিনটি এক অটুট ঐক্য গড়ে তোলার দিন। স্থায়ী ঐক্য গড়ার লক্ষ্যে আমাদের সবাইকে কাজ করতে হবে। ঈদের জামাতে আমাদের এই কামনা থাকবে।
এছাড়া, তিনি মোনাজাতে তাদের স্মরণ করে দোয়া করার আহ্বান জানান, যাঁরা নতুন বাংলাদেশ গড়ার জন্য নিজের জীবন বিলিয়ে দিয়েছেন। তিনি দোয়া করেন, আহতরা যেন স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে পারেন।
এর আগে, সকাল সাড়ে ৮টায় জাতীয় ঈদগাহ মাঠে ঈদুল ফিতরের নামাজে অংশ নেন প্রধান উপদেষ্টা। বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের খতিব মুফতি মোহাম্মদ আবদুল মালেক ইমাম হিসেবে এবং ক্বারী হিসেবে ছিলেন বায়তুল মোকাররমের মুয়াজ্জিন মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান। জামাত শেষে মুসলিম উম্মাহসহ দেশ ও জাতির কল্যাণ, সুখ-শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।