গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেছেন,ইসকনের ব্যানারে আওয়ামী পেতাত্মরা চট্রগ্রামে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ কে পরিকল্পনা করে নৃশংসভাবে হত্যা করেছে। যাতে করে মুসলমান ক্ষ্যাপে গিয়ে হিন্দুদের উপর হামলা করে। তারা সেই ভিডিওগুলো আমেরিকা-ভারতসহ বিভিন্ন দেশে পাঠিয়ে দিয়ে ডোনাল্ড ট্রামকে দেখাতে চায়। ডোনাল্ড ট্রাম্প এর ছবি নিয়ে মিছিল করতে বলে শেখ হাসিনা। মিছিলে হামলা করলে, সেই ছবি ও ভিডিও নিয়ে পরবর্তিতে রাজনীতি করতে পারে। এই শেখ হাসিনা গত ১৫ বছরে বলে আসলো, বিরোধী দল বিদেশীদের দিকে তাকিয়ে থাকে। অথচ সেই শেখ হাসিনাই বিদেশীদের সহায়তায় ভারতে পালিয়ে আছে।
আজ (৩০ নভেম্বর) বিকেলে নগরীর পাবলিক লাইব্রেরী মাঠে 'পরিবর্তন সম্ভব, পরিবর্তন চাই' এই শ্লোগানে গণসংলাপ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
জোনায়েদ সাকি বলেন, ফ্যাসিস্ট সরকার ১৬ বছর ধরে গুম-খুন নির্যাতন করে ভয় দেখিয়ে, হামলা-মামলা করে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিলো। রংপুরের আবু সাঈদ জীবন দিয়ে সেই ভয়ের রাজনীতি ও ত্রাসের রাজত্ব ভেঙ্গে দিয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলো সংগ্রাম করেছে, নির্যাতন সহ্য করেছে। সেই সংগ্রামের উপর দাড়িয়ে ছাত্র-জনতা বুকের রক্ত দিয়ে একটা অভুত্থ্যান তৈরী করেছে। এই অভুত্থ্যানের উপর দাড়িয়ে আছে অন্তর্বর্তিকালীন সরকার। তারা দেশ পরিচালনা করছে।
তিনি আরো বলেন, ফ্যাসিস্টদের কোন রাজনৈতিক অধিকার থাকে না। ফ্যাসিস্টরা খুন-গুম করবে, বিনা বিচারে হত্যা করবে, আবার তারা লুটেপুটে খাবে। এই সুযোগ তাদের দেয়া হবে না। বাংলাদেশের মাটিতে সমস্ত ফ্যাসিস্টদের বিচার করতে হবে। বাংলাদেশ আর কখনও ফ্যাসিস্ট সরকারে ফিরে যাবে না। এজন্য ফ্যাসিস্ট সরকারের আইন কানুন রেখে গণতন্ত্র রক্ষা করা যাবে না। এজন্য নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত করতে হবে। গণতান্ত্রিক সংবিধান দরকার। রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠানগুলো সংস্কার দরকার। আইনের সংস্কার। এজন্য গণতান্ত্রিক নির্বাচন দরকার। আর যাতে এ দেশের মানুষের ভোটাধিকার কেড়ে নিতে না পারে। নানা দিক থেকে ষড়যন্ত্র হবে। আমাদের বিভাজন করতে পারে, ছাত্রদের মধ্যে বিভাজন করতে পারে। এজন্য আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। বাংলাদেশকে আর চোখ রাঙ্গাতে দেয়া যাবে না। আমরা সকল দেশের সাথে বন্ধুত্ব করতে চাই। মনে রাখবেন আমাদের তরুণরা রক্ত দিতে শিখেছে। তারা জীবন দিয়ে হলেও দেশ রক্ষা করবে।
তরুণদের উদ্দেশ্যে তিনি আরো বলেন, বলেন, আগামীর বাংলাদেশে আপনাদের শিক্ষার ব্যবস্থা হবে। যে নির্বাচনের পর এই তরুণ সমাজ কোন রকম ঘুষ এবং হ্যালো ছাড়াই চাকুরী পাবে। সেই রকম বাংলাদেশ গঠনে অতন্ত্র প্রহরীর ভুমিকায় অবতীর্ণ হতে হবে। নতুন রাজনৈতিক শক্তি গড়ে তুলতে হবে। সেই রাজনৈতিক শক্তির মাধ্যমে এই দেশকে এগিয়ে নিতে হবে আমাদের।
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেন, আমরা অন্তবর্তিকালীন সরকারকে সমর্থন করি। কিন্তু এই অন্তবর্তিকালীন সরকারের আমলেও মানুষ কষ্টে আছে। দ্রব্যমুল্য বেশি, কৃষকের সারের দাম বেশি, হত্যাকান্ডের এখনও বিচার হয়নি। অনেক বিচার শুরুই হচ্ছে না। জুলাই বিপ্লবের বিচার করতে হবে, বিগত ১৫ বছরে যে হত্যা খুন গুম হয়েছে তার বিচার করতে হবে সরকারকে।
গণসংলাপে গণসংহতি আন্দোলনের রংপুর জেলা আহ্বায়ক তৌহিদুর রহমান এর সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন গণসংহতি আন্দোলনের সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য বাচ্চু ভূঁইয়া, বাংলাদেশ কৃষক মজুর সংহতি আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল আলিমসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ। এতে সংগঠনটির বিভাগের আট জেলার নেতাকর্মীরা অংশ নেন।
উল্লেখ্য নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত প্রতিষ্ঠা করে বৈষম্যহীন গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গড়ে তোলার লক্ষ্যে গণসংহতি আন্দোলন রংপুর জেলা শাখার আয়োজনে এ গণসংলাপ অনুষ্ঠিত হয়।