ছবিঃ সংগৃহীত।
আজ ২১ নভেম্বর,
সশস্ত্র বাহিনী দিবস। যথাযথ মর্যাদা ও উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে দিবসটি উদযাপিত হচ্ছে।
দেশের সব সেনানিবাস, নৌঘাঁটি এবং বিমান বাহিনী ঘাঁটির মসজিদসমূহে দেশের কল্যাণ ও সমৃদ্ধি
কামনা করে ফজরের নামাজ শেষে বিশেষ মোনাজাতের মধ্য দিয়ে দিবসের কর্মসূচি শুরু হয়েছে।
এর আগে দিবসটি
উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি ও সশস্ত্র বাহিনীর সর্বাধিনায়ক মো: সাহাবুদ্দিন এবং প্রধান উপদেষ্টা
অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস পৃথক বাণী দিয়েছেন।
রাষ্ট্রপতি
ও প্রধান উপদেষ্টার বাণী : দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি ও সশস্ত্র বাহিনীর
সর্বাধিনায়ক মো. সাহাবুদ্দিন এবং প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস
পৃথক বাণী দিয়েছেন। বাণীতে রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘জুলাই-আগস্ট মাসে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে সশস্ত্র বাহিনীর দায়িত্ববোধ, ধৈর্য ও দেশপ্রেম সাধারণ
মানুষের প্রশংসা অর্জন করেছে। সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যগণ সর্বদা রাষ্ট্র ও নেতৃত্বের প্রতি
পরিপূর্ণ অনুগত থেকে কঠোর অনুশীলন ও দেশপ্রেমের সমন্বয়ে
সশস্ত্র বাহিনীর গৌরব সমুন্নত রাখবেন—এ প্রত্যাশা করি।’
প্রধান
উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস
বলেন, ‘দেশের স্বাধীনতাসংগ্রাম থেকে শুরু করে বন্যা, খরা, ঝড়, বৃষ্টি, ঘূর্ণিঝড়সহ সব প্রাকৃতিক দুর্যোগে
সশস্ত্র বাহিনী দুর্গত জনগণের শেষ ভরসার স্থান। বরাবরের মতো এবারও দেশের ক্রান্তিলগ্নে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী জনগণের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে। ছাত্র-শ্রমিক-জনতার গণঅভ্যুত্থান এবং পরবর্তী সময় বন্যাপরিস্থিতি মোকাবিলা, শিল্পকারখানায় নিরাপত্তা প্রদানসহ দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়ন ও অস্ত্র উদ্ধারসহ
সব কার্যক্রমে বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তা প্রদানের জন্য আপনাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। আমি আশা করি, সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যগণ দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার
পাশাপাশি জনগণের সঙ্গে একত্রে কাজ করে যাবে।’
১৯৭১ সালের
২১ নভেম্বর ইতিহাসে এক গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। এই দিনে বাংলাদেশের সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনীর
সদস্যরা প্রথমবারের মতো সম্মিলিতভাবে যৌথ অভিযান পরিচালনা করেন। সম্মিলিত এই অভিযানের
কারণে পাকিস্তানি শত্রু বাহিনীকে প্রতিহত করে মুক্তির দিকে অগ্রসর হতে থাকে। তিন বাহিনীর
সমন্বিত আক্রমণ বিজয়কে ত্বরান্বিত করে। মুক্তিযুদ্ধে সশস্ত্র বাহিনীর এই অবদানকে অবিস্মরণীয়
করে রাখতে প্রতি বছর ২১ নভেম্বর পালিত হয় সশস্ত্র বাহিনী দিবস। এবারে দিবসটির গভীর
তাৎপর্য রয়েছে। চব্বিশের ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে সশস্ত্র বাহিনীর ভূমিকা ছিল অনন্য।
ছাত্র-জনতার এই আন্দোলনে সশস্ত্র বাহিনী সমর্থন না দিলে ইতিহাস অন্যরকম হতে পারত।
আইএসপিআর
জানায়, সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে প্রধান উপদেষ্টা ঢাকা সেনানিবাসের আর্মি মাল্টিপারপাস কমপ্লেক্সে নির্বাচিত খেতাবপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা ও উত্তরাধিকারীদের সংবর্ধনা দেবেন।
এ সময় প্রধান উপদেষ্টা খেতাবপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে শুভেচ্ছা স্মারক বিতরণ ও শুভেচ্ছা বিনিময়
করবেন।
অনুষ্ঠানে
মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (প্রতিরক্ষা ও জাতীয় সংহতি
উন্নয়নবিষয়ক), তিন বাহিনীর প্রধানগণ, প্রধান উপদেষ্টার মূখ্য সচিব, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার (পিএসও) ও প্রতিরক্ষা সচিব,
মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ পদস্থ বেসামরিক ও সামরিক কর্মকর্তারা
উপস্থিত থাকবেন।
দিবসটি
উদযাপন উপলক্ষে প্রধান উপদেষ্টার পক্ষ থেকে আজ ২১ নভেম্বর
বিকেল ৪টায় ঢাকা সেনানিবাসস্থ সেনাকুঞ্জে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে। সংবর্ধনায় উল্লেখযোগ্য আমন্ত্রিত অতিথিদের মধ্যে রয়েছেন প্রধান বিচারপতি, সাবেক রাষ্ট্রপতিরা, সাবেক প্রধান উপদেষ্টারা, উপদেষ্টা ও উপদেষ্টার পদমর্যাদাসম্পন্ন
ব্যক্তিবর্গ, বাংলাদেশে বিদেশী রাষ্ট্রদূতরা, আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রধান, বিচারপতি, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব, প্রধান উপদেষ্টার মূখ্য সচিব, তিন বাহিনীর সাবেক প্রধানরা, সাবেক সামরিক কর্মকর্তা, স্বাধীনতা পুরস্কার ও একুশে পদকপ্রাপ্ত
ব্যক্তিবর্গ, সাংবাদিক, শিক্ষাবিদ, রাজনৈতিক ও বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ,
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করা, স্বাধীনতা যুদ্ধের সকল বীর শ্রেষ্ঠের উত্তরাধিকারী, স্বাধীনতা যুদ্ধ এবং স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে ঢাকা এলাকায় বসবাসরত খেতাবপ্রাপ্ত কর্মকর্তা/তাদের উত্তরাধিকারী, উচ্চপদস্থ বেসামরিক কর্মকর্তা এবং তিন বাহিনীর কর্মরত ও অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা।
অনুষ্ঠানটি
বাংলাদেশ টেলিভিশন সরাসরি সম্প্রচারের ব্যবস্থাগ্রহণ করেছে।
ঢাকা
ছাড়াও বরিশাল, কক্সবাজার, বগুড়া, সিলেট, ঘাটাইল, চট্টগ্রাম, কুমিল্লা. যশোর, রংপুর ও খুলনা সেনানিবাস/ঘাঁটিতে সংশ্লিষ্ট এরিয়া সদরদপ্তরের ব্যবস্থাপনায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে।
এদিকে,
দিনটি যথাযোগ্য মর্যাদায় পালনের জন্য ঢাকার বাইরে দেশের অন্যান্য সেনা গ্যারিসন, নৌ এবং বিমান
বাহিনী ঘাঁটিতেও বিভিন্ন কর্মসূচি পালিত হবে। ঢাকা, খুলনা, চাঁদপুর, বরিশাল ও চট্টগ্রামে বিশেষভাবে
সজ্জিত নৌবাহিনীর জাহাজসমূহ ২১ নভেম্বর বেলা
২টা থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত সর্বসাধারণের দেখার জন্য নিকটস্থ ঘাটগুলোতে অবস্থান/নোঙ্গরকৃত অবস্থায় রাখা হবে।
সশস্ত্র
বাহিনী দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে গতকাল ২০ নভেম্বর বাংলাদেশ
টেলিভিশন রাত ৮টার বাংলা সংবাদের পর সশস্ত্র বাহিনীর
পরিবেশনায় ‘বিশেষ অনির্বাণ’ অনুষ্ঠান সম্প্রচার করে। এছাড়া ২১ নভেম্বর বৃহস্পতিবার
সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় বাংলাদেশ বেতার ‘বিশেষ দূর্বার’ অনুষ্ঠান সম্প্রচার করে। টেলিভিশনের জন্য নির্মিত ‘বিশেষ অনির্বাণ’ অনুষ্ঠানটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলসমূহেও পরবর্তীতে পর্যায়ক্রমে সম্প্রচারিত হয়।
সশস্ত্র
বাহিনী দিবস উপলক্ষে ২১ নভেম্বর বিভিন্ন
জাতীয় দৈনিকগুলোতে বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশিত হয়েছে। এ উপলক্ষে সশস্ত্র
বাহিনীর পরিচালনাধীন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে রচনা ও চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার
আয়োজন করা হয়।
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর
যোগাযোগ: । [email protected] । বিজ্ঞাপন ও বার্তা সম্পাদক: 01894944220
ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।
© 2024 Sangbad Sarabela All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh