রংপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে পুলিশ ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে স্বর্ণশ্রমিক মুসলিম উদ্দিন মিলন নিহতের ঘটনায় জাতীয় সংসদের সাবেক স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীসহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের হয়েছে। এতে সাবেক চারজন সংসদ সদস্য ও রংপুর বিভাগীয় কমিশনার, রংপুর রেঞ্জ ডিআইজি, মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার, জেলা প্রশাসকসহ আওয়ামী লীগ নেতাদের আসামি করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট) দুপুরে মেট্রোপলিটন কোতোয়ালি আমলি আদালতের বিচারক রাজু আহম্মেদ বাবুর আদালতে মামলাটি করেছেন রংপুর নগরীর পূর্ব গনেশপুর এলাকার স্বর্ণশ্রমিক মুসলিম উদ্দিন মিলনের স্ত্রী দিলরুবা আক্তার (৩২)।
মামলায় রংপুর বিভাগীয় কমিশনার জাকির হোসেন, রংপুর রেঞ্জের সাবেক ডিআইজি আব্দুল বাতেন, রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের সাবেক কমিশনার মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান, সাবেক জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোবাশ্বের হাসান, রংপুর জেলার সাবেক পুলিশ সুপার মোঃ শাহজাহান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এ সার্কেল) হুসাইন মোহাম্মদ রায়হান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বি সার্কেল) আবু আশরাফ সিদ্দিকী, সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, সাবেক স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী, সাবেক সংসদ সদস্য নাছিমা জামান ববি, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি আব্দুল মালেক, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হক প্রামাণিক, আওয়ামী লীগ নেতা রাশেক রহমান, সাবেক সংসদ সদস্য আবুল কালাম মোহাম্মদ আহসানুল হক চৌধুরী ডিউক, জেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক ছায়াদাত হোসেন বকুল, মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি শফিয়ার রহমান সাফি ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক তুষার কান্তি মন্ডলের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া আরও অনেককে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।
মামলার আবেদনে বলা হয়, গত ১৯ জুলাই বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে সিটি বাজার এলাকায় পুলিশ ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে ছাত্র-জনতার সংঘর্ষ হয়। এসময় ৮ থেকে ১৭ নং আসামিদের প্ররোচনা ও উস্কানিতে ১ থেকে ৭ নং আসামিদের নির্দেশে ২, ৩, ৪, ৬ ও ৭ নং আসামিসহ হেলমেট পরিহিত পুলিশ সদস্যরা এলোপাথাড়ি গুলি ছোঁড়ে। এতে মিলন গুলিবিদ্ধ হলে তাকে উদ্ধার করে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে আসামিদের চাপে মরদেহের ময়নাতদন্ত না করেই তড়িঘড়ি করে দাফন করা হয়।
মামলা দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বৈষম্য বিরোধী আইনজীবী আন্দোলনের সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট পলাশ কান্তি নাগ। এই হত্যা মামলাটি পরিচালনা করেন রংপুর মেট্রোপলিটন আমলী আদালতের আইনজীবি
মোফাজ্জল হোসেন বকুল।