বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এক দফা দাবিতে জানিয়েছে তারা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তার মন্ত্রিসভার পদত্যাগ চায়।
শনিবার (৩ জুলাই) কোটা সংস্কার আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া সংগঠনটির সমন্বয়ক মো. নাহিদ ইসলাম ঢাকায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এই ঘোষণা দেন।
কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে জড়ো হওয়া হাজার হাজার ছাত্র-জনতার উদ্দেশ্যে দেওয়া এক বক্তব্যে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তার মন্ত্রিসভাকে পদত্যাগ করতে হবে।
তিনি আরও ঘোষণা দেন যেন আগামীকাল রোববার (৪ আগস্ট) থেকে সারা দেশে অসহযোগ আন্দোলন চালিয়ে যাওয়া হয়।
নাহিদ বলেন, ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন থেকে আমরা খুব দ্রুতই ছাত্র-নাগরিক অভ্যুত্থানের জন্য সর্বস্তরের নাগরিক, ছাত্রসংগঠন ও সব পেশাজীবী মানুষের সঙ্গে মিলে সম্মিলিত মোর্চা ঘোষণা করব। সবার সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের জাতীয় রূপরেখা আমরা সবার সামনে হাজির করব।’
নাহিদ আরও বলেন, "শুধু শেখ হাসিনা নন, মন্ত্রিসভাসহ পুরো সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে। এই ফ্যাসিবাদী শাসনব্যবস্থার বিলোপ করতে হবে। আমরা এমন একটি বাংলাদেশ গঠন করতে চাই, এমন একটি রাজনৈতিক বন্দোবস্ত তৈরি করতে চাই, যেখানে আর কখনো কোনো ধরনের স্বৈরতন্ত্র-ফ্যাসিবাদ ফিরে আসতে না পারে।"
যে স্বতঃস্ফূর্ত ছাত্র-নাগরিক বিপ্লবের সূত্রপাত ঘটেছে, তার সঙ্গে সর্বস্তরের মানুষকে যোগ দিতে এবং প্রতি পাড়া-মহল্লায় সবাইকে সংগঠিত হওয়ার আহ্বান জানান নাহিদ।
নাহিদ সেনাবাহিনী ও নিরাপত্তাবাহিনীর উদ্দেশ্যে বলেন, "এ সরকারকে জনগণ প্রত্যাখ্যান করেছে। আপনারা সরকারকে সমর্থন না দিয়ে জনগণকে সমর্থন দিন।"
শনিবার ( ৩ আগস্ট) দুপুর থেকে নানা শ্রেণিপেশার মানুষ কেন্দ্রিয় শহীদ মিনারে জড়ো হতে শুরু করেন। সময়ের সাথে সাথে আন্দোলনকারীদের সংখ্যা বাড়তে থাকে। হাজার হাজার মানুষের ভিড়ে শহীদ মিনার চত্বর ও এর আশপাশের এলাকার জনারণ্যে পরিণত হয়। রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে একত্রিত হন শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষজন। হাজারো মানুষের মুহুর্মুহু স্লোগানে কেঁপে উঠছে পুরো এলাকা।
কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার এলাকায় আজ পায়ে হাঁটার পাশাপাশি রিকশা, সিএনজিসহ যে যেভাবে পারছেন শহীদ মিনারে আসছেন শিক্ষার্থীরা। তাদের সঙ্গে দেখা গেছে অভিভাবকদেরও। আছেন বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কর্মী , শিক্ষক সহ আরও অনেকে। রিকশাচালকদের একটি বড় অংশও আন্দোলনে যোগ দেন এবং স্লোগানে ভরিয়ে তোলেন। সমাবেশ যোগ দেওয়া জনমানুষের ভিড় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের প্রাঙ্গণ থেকে ছড়িয়ে গেছে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, জগন্নাথ হলসহ অন্য রাস্তায়ও।