এবার অপেক্ষার পালা শেষ। 'ঝক ঝকাঝক ট্রেন চলেছে, ট্রেন চলেছে ঐ, ট্রেন চলেছে, ট্রেন চলেছে ট্রেনের বাড়ি কই'। তখনও কুয়াশা কাটবেনা হয়তে পুরোপুরি। চট্টগ্রামের দোহাজারী স্টেশন ধরে হুইসেল বাজিয়ে চলে পর্যটন নগরী কক্সবাজার চলে আসবে বেশ ক’টি ট্রেন।
চট্টগ্রামের দোহাজারী থেকে পর্যটন নগর কক্সবাজারে নবনির্মিত রেলপথ দিয়ে প্রথম পরীক্ষামূলক ট্রেন চালু হতে যাচ্ছে আগামী ১৫ অক্টোবর। এজন্য পটিয়া রেলস্টেশনে ছয়টি বগির একটি ট্রেন প্রস্তুত রাখা হয়েছে বলে নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে।
পটিয়া রেলওয়ে স্টেশনমাস্টার নেজাম উদ্দিন বলেন, কালুরঘাট সেতু সংস্কারের কারণে সেতু দিয়ে যানবাহন ও ট্রেন চলাচল বন্ধ হওয়ার আগেই গত ৬ আগস্ট ট্রায়াল ট্রেন পটিয়া স্টেশনে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। স্থানীয় লোকজন অপেক্ষায় আছেন, কখন ট্রেনে করে কক্সবাজার যাবেন।
রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, ১ সেপ্টেম্বর থেকে রেললাইনে পাথর দেওয়ার কাজও শুরু হয়েছে। এই পাথর আনা হয়েছে সিলেট থেকে। এর মধ্যে পটিয়া স্টেশন থেকে কাঞ্চননগর এবং বেঙ্গুরা পর্যন্ত প্রতিদিন লাইনে পুরোদমে পাথর বিছানোর কাজ চলছে।

জানা গেছে, দোহাজারী থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত ১০১ কিলোমিটার লাইনের মধ্যে মোট প্রকল্পের কাজ ৮৮ শতাংশ ইতিমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। বাকি সাতকানিয়া ও লোহাগাড়া এলাকার দিকে প্রায় ৪ কিলোমিটার কাজ বাকি আছে। তা চলতি মাসেই শেষ হবে। প্রায় ১৮ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণাধীন প্রকল্পটির কাজ ২০১৮ সালে শুরু হয়। আগামী বছরের ২৪ জুন পর্যন্ত এই প্রকল্পের মেয়াদ থাকলেও তার আগে আগামী ডিসেম্বরের দিকে পুরোপুরি কাজ শেষ হবে। বাণিজ্যিক ভিত্তিতে চালানোর জন্য তার আগেই বুঝিয়ে দেওয়া যাবে।
রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত এ রেলপথের দূরত্ব হচ্ছে ১৫০ কিলোমিটার। দোহাজারী থেকে সাতকানিয়া, লোহাগাড়া, চকরিয়া, রামু হয়ে পাহাড় ও নদীপথ দিয়ে পর্যটন নগর কক্সবাজার পর্যন্ত এই ট্রেন লাইন চলে গেছে। কক্সবাজারের আইকনিক স্টেশনসহ সব মিলিয়ে ৯টি স্টেশন নির্মাণ করা হচ্ছে রেলপথটিতে। ৬টি স্টেশনের কাজ অক্টোবরে শেষ হবে। বাকিগুলোর কাজ ডিসেম্বর মাসে শেষ হবে।
বাংলাদেশ রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলের বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা আনিসুর রহমান বলেন, প্রকল্পের কাজ বুঝিয়ে দেওয়ার পর বাণিজ্যিক ভিত্তিতে এই লাইনে ট্রেন চালু হবে। নতুন এই রেলপথ চালু হলে চট্টগ্রাম থেকে মাত্র আড়াই ঘণ্টায় পর্যটন নগর কক্সবাজারে পৌঁছানো যাবে।