নড়াইলে দেশের প্রথম ছয় লেনের মধুমতি সেতু এবং নারায়ণগঞ্জে তৃতীয় শীতলক্ষ্যা সেতুর উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ।
সোমবার (১০ অক্টোবর) দুপুর ১টা ১০ মিনিটে প্রধানমন্ত্রী তাঁর কার্যালয় থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এ সেতু দু’টি উদ্বোধন ঘোষণা করেন।
জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সির (জাইকা) অর্থায়নে ৯৬০ কোটি টাকা ব্যয়ে মধুমতি নদীর ওপর ৬৯০ মিটার দীর্ঘ মধুমতি সেতু নির্মিত হয়েছে, যা স্থানীয়ভাবে ‘কালনা সেতু’ নামে পরিচিত।
২৭ দশমিক ১ মিটার চওড়া সেতুটিতে চারটি উচ্চ গতির লেন ৪ দশমিক ৩০ কিলোমিটার অ্যাপ্রোচ রোড এবং দুটি সার্ভিস লেনসহ ছয়টি লেন রয়েছে।
সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের ক্রস বর্ডার রোড নেটওয়ার্ক ইম্প্রুভমেন্ট প্রজেক্টের আওতায় জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সির (জাইকা) অর্থায়নে এ সেতু নির্মাণ করা হয়েছে।
এটি নড়াইল, গোপালগঞ্জ, খুলনা, মাগুরা, সাতক্ষীরা, চুয়াডাঙ্গা, যশোর এবং ঝিনাইদহ জেলাকে সংযুক্ত করেছে।
প্রকল্প কর্মকর্তাদের মতে, সেতুটি চালু হওয়ার মাধ্যমে দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলের মানুষ দ্রুত সড়ক যোগাযোগ সুবিধা পাবে। কারণ সেতুটি কালনাঘাট থেকে রাজধানী ঢাকা পর্যন্ত ১০০ কিলোমিটারেরও বেশি দূরত্ব কমিয়ে দেবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৫ সালের ২৪ জানুয়ারি গোপালগঞ্জ জেলার কাশিয়ানী উপজেলা এবং নড়াইল জেলার অন্তর্গত লোহাগড়া উপজেলার মধ্যে মধুমতি সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।
নড়াইলের জেলা প্রশাসক হাবিবুর রহমান বলেন, প্রধানমন্ত্রী ২০০৮ সালে নড়াইলের সুলতান মঞ্চে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, কালনা পয়েন্টে একটি সেতু হবে। প্রধানমন্ত্রীর সেই প্রতিশ্রুতি সোমবার পূরণ হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, আর্থ-সামাজিক, ব্যবসা-বাণিজ্য প্রভূত ক্ষেত্রে উন্নতি সাধিত হবে। এ এলাকার সব স্টেকহোল্ডার, নদীর দুই পাড়ের অগণিত ছাত্র শিক্ষক, যারা ছোট খাটো ব্যবসায়ী, ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা, তারা অপেক্ষা করছেন, তারা মনে করেন, মধুমতী সেতু দিয়ে তাদের জীবনমানের পরিবর্তন হবে।
ঢাকার সঙ্গে সারা দেশের কমিউনিকেশন নেটওয়ার্কের ক্ষেত্রে নড়াইল হাব হিসেবে পরিচিতি পেতে যাচ্ছে বলেও মন্তব্য করেন জেলা প্রশাসক।
অন্যদিকে তৃতীয় শীতলক্ষ্যা সেতু, যা বীর মুক্তিযোদ্ধা একেএম নাসিম ওসমানের নামে নামকরণ করা হয়েছে, এটি নারায়ণগঞ্জ শহরকে বন্দর উপজেলার সঙ্গে সংযুক্ত করবে, অর্থনীতি চাঙ্গা করবে, পদ্মা সেতুর মাধ্যমে চট্টগ্রাম ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জেলার মধ্যে যোগাযোগ সহজতর করবে।
সেতুটির প্রকল্প পরিচালক শোয়েব আহমেদ বলেন, ১ দশমিক ২৯ কিলোমিটার দীর্ঘ সেতুটি দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল থেকে চট্টগ্রাম অঞ্চলগামী যানবাহন এবং একইভাবে চট্টগ্রাম থেকে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলগামী যানবাহন যানজট এড়াতে এবং সময় বাঁচাতে নারায়ণগঞ্জ শহরকে বাইপাস করতে সক্ষম করবে।
সেতুটি পূর্বে বন্দর উপজেলার মদনগঞ্জকে পশ্চিমে নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার সৈয়দপুরের সঙ্গে যুক্ত করবে। এখন মোটরচালিত নৌযানই নদীর দুই পাড়ের মানুষ ও অন্যান্য এলাকার জনসাধারণের জন্য পারাপারের প্রধান মাধ্যম।
যানবাহনগুলো রাজধানীর পাশাপাশি নারায়ণগঞ্জ শহরকে বাইপাস করতে পারবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এতে রাজধানী ও নারায়ণগঞ্জ শহরের ওপর চাপও কমবে।
প্রকল্পটি ২০১০ সালে একনেকে অনুমোদন পেলেও ২০১৮ সালের ২৮ জানুয়ারি নির্মাণকাজ শুরু হয়।