ছবিঃ সংগৃহীত।
মার্কিন প্রভাবশালী ম্যাগাজিন দ্য নিউ ইয়র্কার-এ প্রকাশিত লেখার জন্য সম্মানজনক পুলিৎজার পুরস্কার অর্জন করেছেন ফিলিস্তিনি কবি মোসাব আবু ত্বহা। আজ (৬ মে) তাকে ‘মন্তব্য প্রতিবেদন’ বিভাগে লেখা নিবন্ধগুলোর জন্য এ পুরস্কার প্রদান করা হয়।
পুরস্কার
জয়ের পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে
নিজের অনুভূতি প্রকাশ করে আবু ত্বহা লেখেন, আমি সম্পাদকীয় বিভাগে পুলিৎজার পুরস্কার জিতেছি। এ অর্জন এক
আশার আলো। এ থেকে জন্ম
হোক এমন এক গল্প—যা
বলা হবে বারবার, প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে।
এই
আবেগঘন বক্তব্যে তিনি গাজার আরেক কবি রিফাত আলআরি-কে শ্রদ্ধা জানান,
যিনি ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে ইসরায়েলি হামলায় নিহত হন। রিফাতের লেখা শেষ কবিতার নাম ছিল 'ইফ আই মাস্ট
ডাই, লেট ইট বি অ্যা
টেল'—বাংলায় যার অর্থ দাঁড়ায়, 'আমার যদি মরতেই হয়, তাহলে তা হোক এক
উপাখ্যান।'
ইসরায়েলি
আগ্রাসনের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদের কারণে ২০২৩ সালে আবু ত্বহাকে আটক করেছিল ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। পরবর্তীতে তাকে মিসরে মুক্তি দেওয়া হয় এবং সেখান
থেকে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে আশ্রয় নেন। যুক্তরাষ্ট্রে এসে তিনি দ্য নিউ ইয়র্কার-এ গাজায় নিজের
তিক্ত অভিজ্ঞতা, ধ্বংস, ও মানবিক বিপর্যয়ের
চিত্র তুলে ধরতে শুরু করেন।
এক
নিবন্ধে তিনি লেখেন, গত এক বছরে
আমার স্মৃতির বহু উপাদান হারিয়েছি—কোনো বস্তু, স্থান, এমনকি বহু মানুষকে। গাজার প্রতিটি ধ্বংসস্তূপ যেন একটি অ্যালবাম, যার প্রতিটি পাতায় শুধু মৃত মানুষের ছবি।
তবে
যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস নিয়েও তিনি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। বিশেষ করে ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রেসিডেন্ট হিসেবে প্রত্যাবর্তনের পর এবং তার ইসরায়েলপন্থি অবস্থানের কারণে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন আবু ত্বহা। তিনি জানান, তাকে বহিষ্কারের দাবিতে বিভিন্ন ইসরায়েলপন্থি গোষ্ঠী সোচ্চার। সেই আশঙ্কায় সম্প্রতি তিনি বেশ কিছু বিশ্ববিদ্যালয় সেমিনার বাতিল করেছেন।
কাতারভিত্তিক
সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা-র
এক পডকাস্টে তিনি বলেন, একবার ভাবুন, আপনি গাজার একটি স্কুলে শেল্টারে পরিবারসহ আশ্রয় নিয়েছেন। চারদিকে বোমা, অথচ আপনি পরিবারের জন্য কিছুই করতে পারছেন না—না খাবার,
না ওষুধ, না পানি। এরপর
আপনি সেই যুক্তরাষ্ট্রে বসে আছেন, যে দেশ এই
যুদ্ধে অর্থ ও মদদ দিচ্ছে।
ব্যাপারটা কতটা হৃদয়বিদারক হতে পারে!
এ
বছরের পুলিৎজার পুরস্কারে নিউইয়র্ক টাইমস সর্বোচ্চ চারটি বিভাগে সম্মাননা পেয়েছে—ব্যাখ্যামূলক প্রতিবেদন, স্থানীয় প্রতিবেদন, আন্তর্জাতিক প্রতিবেদন ও ব্রেকিং নিউজ
ফটোগ্রাফি। আন্তর্জাতিক বিভাগে সুদানের সংঘাত নিয়ে প্রতিবেদনের জন্য তারা পুরস্কার পেয়েছে। ব্রেকিং নিউজ বিভাগে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে লক্ষ্য করে গুলির ঘটনার তাৎক্ষণিক কাভারেজের জন্য ওয়াশিংটন পোস্ট এবং ফেন্টানিল সংকট নিয়ে অনুসন্ধানী প্রতিবেদন করার জন্য রয়টার্স পুরস্কার পেয়েছে।
প্রতিবছর যুক্তরাষ্ট্রের কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পুলিৎজার পুরস্কার ঘোষণা করা হয়। এ পুরস্কারের জুরি বোর্ডে থাকেন স্বনামধন্য সাংবাদিক ও শিক্ষাবিদরা।
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর
যোগাযোগ: । [email protected] । বিজ্ঞাপন ও বার্তা সম্পাদক: 01894944220
ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।
© 2025 Sangbad Sarabela All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh