× প্রচ্ছদ বাংলাদেশ বিশ্ব রাজনীতি খেলা বিনোদন বাণিজ্য লাইফ স্টাইল ভিডিও সকল বিভাগ
ছবি ভিডিও লাইভ লেখক আর্কাইভ

আজ কিংবদন্তি কথাসাহিত্যিক হুমায়ুন আহমেদের জন্মদিন

ডেস্ক রিপোর্ট

১৩ নভেম্বর ২০২৪, ১১:৪৭ এএম । আপডেটঃ ১৩ নভেম্বর ২০২৪, ১২:২৯ পিএম

ছবিঃ সংগৃহীত।

বাংলা সাহিত্যের প্রবাদ পুরুষ হুমায়ুন আহমেদের ৭৬তম জন্মবার্ষিকী আজ। ১৯৪৮ সালের এদিনে(১৩ নভেম্বর)  নেত্রকোনার কেন্দুয়ার কুতুবপুরে হুমায়ূন আহমেদের জন্ম। বাবা ফয়জুর রহমান আহমেদ ও মা আয়েশা ফয়েজ। তিন ভাই ও দুই বোনের মধ্যে তিনি সবার বড়। হুমায়ূন আহমেদ তার দীর্ঘ চার দশকের সাহিত্যজীবনে উপহার দিয়েছেন সাড়া জাগানো সব উপন্যাস। তৈরি করেছেন হিমু, মিসির আলীর মতো জনপ্রিয় চরিত্র। নির্মাতা হিসেবেও উপহার দিয়েছেন জনপ্রিয় নাটক এবং চলচ্চিত্র। বহু পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন তিনি। তার মধ্যে একুশে পদক, বাংলা একাডেমি পুরস্কার, হুমায়ূন কাদির স্মৃতি পুরস্কার, লেখক শিবির পুরস্কার, মাইকেল মধুসূদন দত্ত পুরস্কার, জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ও বাচসাস পুরস্কার উল্লেখযোগ্য।

প্রতি বছরই প্রয়াত হুমায়ূন আহমেদের জন্ম মৃত্যুবার্ষিকীর দিনে সকাল থেকে তার হাতেগড়া নুহাশ পল্লীর লিচু তলায় ভিড় করতে শুরু করেন ভক্ত, কবি, লেখক আর নাট্যজনেরা। ফুল দিয়ে গভীর শ্রদ্ধা আর ভালোবাসায় স্মরণ করেন জনপ্রিয় এই লেখক-নির্মাতাকে।

দিনটি উপলক্ষে গাজীপুরের নুহাশ পল্লীতে কোরআনখানি, মিলাদ দোয়া মাহফিল এবং এতিমদের খাবার বিতরণসহ নেওয়া হয় নানা কর্মসূচি। এবারও হুমায়ূন আহমেদের জন্মদিন উপলক্ষে বুধবার সকাল থেকে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে তার ভক্তরা নুহাশ পল্লীতে যেতে শুরু করেছেন বলে জানা গেছে।

হলুদ পাঞ্জাবি পরা হিমু নীল শাড়ি পরে রুপা সেজে হিমু পরিবহনের সদস্যরাও হাজির হচ্ছেন দলে দলে। এরপর লেখকের কবরে ফুল দিয়ে গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন নানা শ্রেণিপেশার মানুষ।

ঢাকা কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাস করার পর তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে রসায়ন এবং নর্থ ডাকোটা স্টেট বিশ্ববিদ্যালয়ে পলিমার রসায়ন শাস্ত্র অধ্যয়ন করেন। বিদেশে পড়াশোনা শেষে দেশে ফিরে এসে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক হিসেবে দীর্ঘকাল কর্মরত ছিলেন। পরবর্তীকালে লেখালেখি এবং চলচ্চিত্র নির্মাণের স্বার্থে অধ্যাপনা ছেড়ে দেন।

১৯৭২ সালে প্রকাশিত হয় হুমায়ূন আহমেদের প্রথম উপন্যাসনন্দিত নরকে' ১৯৭৪ সালে প্রকাশিত হয় দ্বিতীয় উপন্যাসশঙ্খনীল কারাগার' এই উপন্যাস দুটির কারণে তখনকার সাহিত্যবোদ্ধা মহলে বেশ প্রশংসিত হন তিনি।

এরপর দীর্ঘ প্রায় ৫০ বছরের লেখকজীবনে নিজেকে বাংলা সাহিত্যের জনপ্রিয়তায় শীর্ষে নিয়ে যান। গল্প বলার অসামান্য ভঙ্গির কারণেগল্পের জাদুকরহিসেবে তাকে গণ্য করা হয়। তার লেখা গল্প-উপন্যাসে মধ্যবিত্ত শ্রেণির জীবনধারার নিঃসংকোচ বর্ণনা পাওয়া যায়।

দুই শতাধিক উপন্যাস লিছেন হুমায়ূন আহমেদ। এর মধ্যে রয়েছেজোছনা জননীর গল্প’, ‘দেয়াল’, ‘বাদশাহ নামদার’, ‘কবি’, ‘শ্রাবণ মেঘের দিন’, ‘লীলাবতী’, ‘গৌরীপুর জংশন’, ‘নৃপতি’, ‘বহুব্রীহি’, ‘মধ্যাহ্ন’, ‘এইসব দিনরাত্রি’, ‘দারুচিনি দ্বীপ’, ‘নক্ষত্রের রাতইত্যাদি। তাঁর সৃষ্ট চরিত্রহিমুমিসির আলীব্যাপক আলোড়ন তোলে। সায়েন্স ফিকশন এবং কিশোর গল্প লিখেও তিনি দারুণ খ্যাতি অর্জন করেন।

আশির দশক থেকে শুরু করে তার নির্মিতবহুব্রীহি’, ‘এইসব দিনরাত্রি’, ‘কোথাও কেউ নেই’-এর মতো নাটকগুলো বর্তমান প্রজন্মের কাছে এখনো সমানতালে জনপ্রিয় হয়ে আছে। নাটকগুলোর আলোচিত সংলাপগুলো এখনো অনেকের মুখে শোনা যায়।

টেলিভিশন নাট্যকার হিসেবে হুমায়ূন আহমেদকে আবিষ্কার করেন নওয়াজিশ আলী খান। তার অনুপ্রেরণায় ১৯৮৩ সালে টেলিভিশনের জন্য লেখেন তার প্রথম নাটকপ্রথম প্রহর'

গল্প-উপন্যাসের মতো এখানেও তিনি একের পর এক জনপ্রিয় কাজের জন্ম দিতে থাকেন। টেলিভিশন কথাসাহিত্যের সেই যুগপৎ মেলবন্ধনে বাংলাদেশের দর্শক-পাঠকদের তিনি এক বিস্ময়কর জাদুকরের মতো মুগ্ধতায় বুঁদ করে রেখেছিলেন পরবর্তী কয়েক দশক। একই জাদুতে তিনি বাংলাদেশের পুস্তক প্রকাশনা শিল্পে এক নতুন দিনের সূচনা করে দিয়েছিলেন। তার উপস্থিতিতে জাগ্রত হয়ে উঠত অমর একুশে বইমেলা।

হুমায়ূন আহমেদের চিত্রনাট্য পরিচালনায় চলচ্চিত্রগুলোর মধ্যেআগুনের পরশমণি’, ‘শ্রাবণ মেঘের দিন’, ‘দুই দুয়ারী’, ‘চন্দ্রকথা’, ‘শ্যামল ছায়া’, ‘নয় নম্বর বিপদ সংকেত’, ‘ঘেটুপুত্র কমলাদর্শক সমালোচকদের মন জয় করেছে।

২০১১ সালের সেপ্টেম্বরে তাঁর শরীরে মারণব্যাধি ক্যান্সার ধরা পড়ে।

এরপর উন্নত চিকিৎসা নিতে তিনি চলে যান যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে। সেখানে প্রথমে ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠলেও পরে আবার তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। শেষে ২০১২ সালের ১৬ জুলাই তাঁকে নেওয়া হয় লাইফ সাপোর্টে। সে অবস্থায়ই ১৯ জুলাই বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে ১১টার দিকে হুমায়ূন আহমেদ শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।

২৩ জুলাই দেশে ফিরিয়ে আনা হয় হুমায়ূন আহমেদের মরদেহ। ২৪ জুলাই তাঁর গড়ে তোলা নুহাশপল্লীর লিচুতলায় তাঁকে সমাহিত করা হয়।

হুমায়ুন আহমেদ চলে গেছেন। কিন্তু তার সৃষ্ট বাকের ভাই, মিসির আলী কিংবা হিমু চরিত্রগুলো এখনো যেন হেঁটে বেড়ায় শহর থেকে মফস্বলে। বাংলা একাডেমির অমর একুশে বইমেলায় একক লেখক হিসেবে মৃত্যুর ১২ বছর পর এখনো তাঁর বই সর্বাধিক বিক্রি হয়।

নিন্দুকেরা বলে বেড়ায় হুমায়ুন আহমেদ বাজারি লেখক। আফসোসের ব্যাপার হচ্ছে। তার মৃত্যুর ১২ বছর পরেও এদেশের সাহিত্য অঙ্গনে আর কোনো লেখকের আবির্ভাব ঘটেনি যিনি তার কাজের মাধ্যমে শুধু গুটিকয় সাহিত্যাবিশারদ নয় দেশের সর্বস্তরে পৌঁছে গেছেন।

হুমায়ূন আহমেদের ৭৬তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে আজ বিকাল ৪টায় বাংলা একাডেমির কবি শামসুর রাহমান সেমিনার কক্ষে সেমিনারের আয়োজন করা হয়েছে। স্বাগত বক্তৃতা করবেন সংস্কৃতি, পত্রিকা মিলনায়তন বিভাগের পরিচালক (চলতি দায়িত্ব) . সরকার আমিন। প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন কথাসাহিত্যিক সালাহ উদ্দিন শুভ্র। আলোচনায় অংশ নেবেন অধ্যাপক আহমেদ মাওলা অধ্যাপক সুমন রহমান। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ আজম।

Sangbad Sarabela

সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর

যোগাযোগ: । [email protected] । বিজ্ঞাপন ও বার্তা সম্পাদক: 01894944220

ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।

আমাদের সঙ্গে থাকুন

© 2024 Sangbad Sarabela All Rights Reserved.