নবীন মাঝি, এবার তোমার নৌকা ছাড়ো
চেয়ে দেখ ওই ঈশান কোণে কালো মেঘ
শুভ্র সাদা তুলার মতো উড়ছিলো যেগুলো
আচমকা সেখানে ধোঁয়ার কুণ্ডলীতে অমানিশার অন্ধকার।
নবীন মাঝি, এখনো সময় আছে, নৌকা ছাড়ো
এখনো গোধূলি যায়নি মিলিয়ে,
পশ্চিম আকাশে এখনো ফিকে হয়নি সোনালি আভা।
তবে এসময় আর থাকবে না বেশিক্ষণ
নিকোশ কালো আঁধার হবে চারপাশ
ঘুটঘুটে আঁধারে হারাবে তোমার বৈঠা
দাড়, মাস্তুল, পাল কিছুই খুঁজে পাবে না তখন।
ওই দেখ এক ঝিলিক ফিঁকে রাঙা রোদ
এইতো সুযোগ তীরে ভেড়াও তরী
নতুন দিনের যাত্রী নিয়ে আবারও নৌকা ছাড়ো।
নবীন মাঝি, শক্ত বৈঠা তোমার, দৃঢ় মনোবল
সুপ্রসস্ত বুকের ছাতি, পেটানো শরীর,
তুমিই পারবে ঝঞ্ঝা বিক্ষুব্ধ বিশাল জলরাশি পেরোতে।
তুমি না বাইলে বৈঠা কে আর বাইবে বলো
কে আছে তল্লাটে পথহারা যাত্রীদের পথ দেখায়।
ওপারে শান্তির নিবাস, সবুজ ক্ষেতে সোনালি হাতছানি
এপারে অপেক্ষার প্রহর, ক্ষুব্ধ জনতার ক্রন্দন
যুগের চাহিদা পার হতে হবে স্ফুলিঙ্গের মতো ধাবমান, প্রচণ্ড গতিতে
নইলে সমূলে বিনাশ, সহসায় নামবে কাল দিবানিশি।
নবীন মাঝি, তোমাকেই বলছি
বড় অসহায় এ জাতি
তারও চেয়ে বড় সহায় সম্বলহীন এই বসতি।
এখানে শস্যের দানায় বুভুক্ষ কীটের নিবাস।
বাতাসের বারুদের গন্ধ, চৈত্রের বিদায়েও আসে না বসন্ত,
ক্রন্দনে ক্রন্দনে ধুসর হয়েছে শারদীয় কাশফুল
আষাঢ়, শ্রাবণও ভুলে গেছি বেমালুম।
তবে আর শঙ্কা কেন নবীন মাঝি
বার্ধক্যের সমস্ত ব্যর্থতা আজ তোমার কাঁধে
নারী ও শিশুর সুরক্ষা তোমার দায়িত্ব।
ধরণীতে নতুন সূর্যোদয় তোমাকেই আনতে হবে
নবীন মাঝি এই হোক তোমার আজন্ম প্রতীজ্ঞা।