নক্ষত্র বলয়ে
নক্ষত্র বলয়ে কী দিকভ্রান্তরায় আছড়ে পড়ে?
সুদূর প্রান্তে নিহারিকাদের অভিলাস যাত্রা
দিনশেষে ঝরা পাতার মতো খসে পড়া জমিনে
সহস্র আলোকবর্ষের মাপজোক জেঁকে বসে
দলছুট পিঁপিলিকার পাল।
ঝাক বেঁধে রাতের আঁধারে জ্যোৎস্নার গন্ধ শুকে।
উঠে আসে পাহাড় থেকে পাহাড়ে
আসমান থেকে আরশে
নদী থেকে সাগর, সৈকত থেকে সমুদ্রে।
জোনাকিরাও রাত্রিদের বাধ সাধে
শুয়ো পোকার গন্ধে গুমোট আঁধারেও
আশা-নিরাশার ডানা ঝাপটায়।
সহসাই বজ্র নিনাদে জেগে ওঠে নিঝুম দ্বীপ
ওঁৎ পেতে থাকা কৃষ্ণগহ্বর এড়িয়ে
বেঁচে থাকার আদিম জৌলুস অথবা
আধুনিক চেষ্টায় গড়ে তোলে অন্তরীপ।
এরপর হঠাৎ পাহাড়গুলো ভাঙতে ভাঙতে
সমুদ্রের গভীরতায় বিলীন হয়।
দিকভ্রান্ত নদীগুলো উঠে যায় আকাশসীমায়
তখন জেগে থাকে শুধু ল্যাম্পপোস্ট।
ঝরাপাতায় আবার শিশির জমে বৃষ্টিস্নাত বারিধারায়
মাঠ ঘাট প্রান্তর ছাপিয়ে নালা নর্দমা পুকুর নদী খাল
অবশেষে সুবিশাল সমুদ্রে আছড়ে পড়ে নক্ষত্রদের দল।
একদিন হঠাৎ
একদিন অগ্রহায়ণের ধানখেতে
শালিক পাখিটা নেমে এলে
বিমুগ্ধ প্রজাপতির অপলক দৃষ্টি আর
পানকৌড়িরা ডুব সাঁতারে চলে।
সেদিন পুবালী বাতাসে
আলবেঁধে চলে যে কিষাণী
অদূরে বাবলা ছায়ায় বসে থাকা
বাছা তার সচকিত চাহনী।
সেই দিবসের ধরিত্রী যেন
আমার বসন্ত, চিরচেনা ফালগুন।
যার স্নেহ মায়ায় ভরেছে অন্তর
হৃদয়ে হৃদয়ে বহিছে অনুরণ।
একদিন পৌষের সোনাঝরা রোদে
আলো ঝলমল স্ফটিকের মতো
যদি দেখা মেলে তার
উঠানের কোণে নীল প্রজাপতিও
হয়ে ওঠে ইতোস্তত।
একদিন ভোরের কুয়াশায়
পিঁপিলিকার দল ছুটে এলে
তখনই বুঝেছি সুমিষ্ট বাতাস
চারিপাশে বহিছে পাল তুলে।
একদিন সূর্যমুখীও হয়ে ওঠে গণমুখী
চাপাদের দলে গগণবিদারী স্লোগান
গোলাপের ভিড়ে সুগন্ধি সমাবেশে
নিমিষেই হয়ে ওঠে অম্লান।
একদিন প্রচণ্ড ঝড়ে দখিন দুয়ারে
আম্রপালির শাখায় দিলে দোল
ঘরছাড়া কিশোরী বেমালুম ভুলে থাকে
স্নেহ সুধার বিদগ্ধ কোল।