সোমবার (৮ মে) স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টার পরে কলকাতার একটি হাসপাতালে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। পশ্চিমবঙ্গের স্থানীয় সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজার জানায়, কথাসাহিত্যিক সমরেশ মজুমদার বেশ কিছু দিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন। সোমবার বাইপাসের ধারে একটি বেসরকারি হাসপাতালে তিনি মারা গেছেন।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, গত ২৫ এপ্রিল মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণের কারণে তাকে ভর্তি করানো হয়েছিল সাহিত্য অকাডেমি পুরস্কার জয়ী সাহিত্যিককে। এর পর শ্বাসযন্ত্রের সমস্যা বাড়তে থাকে। আগে থেকেই সমরেশের সিওপিডি সমস্যা ছিল। হাসপাতালে ‘ঘুমের মধ্যে শ্বাসকষ্টের সমস্যা’ (স্লিপ অ্যাপমিয়া) বাড়তে থাকে।

সমরেশ মজুমদারের জন্ম ১৯৪২ সালের ১০ মার্চ পশ্চিমবঙ্গের জলপাইগুঁড়িতে। প্রয়াত এই লেখকের প্রাথমিক শিক্ষা জলপাইগুড়ি জেলা স্কুলে। ষাটের দশকের গোড়ায় তিনি কলকাতায় এসেছিলেন। ভর্তি হয়েছিলেন স্কটিশ চার্চ কলেজের বাংলা (সাম্মানিক) স্নাতক বিভাগে। এর পর স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে।
তার শৈশব কেটেছে ডুয়ার্সের গয়েরকাটা চা বাগানে। তার প্রথম গল্প “অন্যমাত্রা” লেখাই হয়েছিলো মঞ্চনাটক হিসাবে, আর সেখান থেকেই তার লেখকজীবনের শুরু। তার লেখা অন্যমাত্রা ছাপা হয়েছিলো দেশ পত্রিকায় ১৯৬৭ সালে। সমরেশ মজুমদারের প্রথম উপন্যাস “দৌড়” ছাপা হয়েছিলো দেশেই ১৯৭৬ সালে।

তিনি শুধু তার লেখনী গল্প বা উপন্যাসের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখেননি; ছোটগল্প, ভ্রমণকাহিনি থেকে গোয়েন্দাকাহিনি, কিশোর উপন্যাস লেখনীতে তার জুড়ি মেলা ভার। তার ট্রিলজি ‘উত্তরাধিকার, কালবেলা, কালপুরুষ’ বাংলা সাহিত্য জগতে তাকে বিশেষ খ্যাতির অধিকারী করেছে।


এছাড়াও সমরেশ মজুমদারের উল্লেখযোগ্য উপন্যাসগুলোর মধ্যে আছে- সাতকাহন, গর্ভধারিণী, তেরো পার্বণ, স্বপ্নের বাজার, উজান, গঙ্গা, ভিক্টোরিয়ার বাগান, আট কুঠুরি নয় দরজা, অনুরাগ উল্লেখযোগ্য।
১৯৮২ সালে আনন্দ পুরস্কার, ১৯৮৪ সালে সাহিত্য আকাদেমি পুরস্কারে ভূষিত হন সমরেশ মজুমদার। এছাড়াও তিনি সত্য আকাদেমি পুরষ্কার, বঙ্কিম পুরস্কার এবং আইআইএমএস পুরস্কার অর্জন করেছেন।