আহ! আজ আমি মুক্ত-
নেই কোনো বেড়ি,
কোনো শৃঙ্খল।
নিচে রাজপথ সুদূর বিস্মৃত,
পাশে শ্যামল তৃণদল
নির্মল শিশিরে স্নাত।
স্নিগ্ধ চাঁদের আলো,
হাস্যোজ্জ্বল তারার ঝিকিমিকি,
সবই মধুর, সবই উজ্জ্বল।
এগিয়ে চলে মোটরযান,
দাঁড়িয়ে সহচর,
চোখে অশ্রুজলপ্রপাত-
আমি আমরা-
নেই কোনো ব্যবধান।
ন’মাসের যুদ্ধে পাকসেনা খান
খাড়া করে যে,
দূরত্বের প্রাচীর-
তার হলো অবসান।
কুর্মিটোলা টু রেসকোর্স,
খোলা গাড়ি বহমান
এগোচ্ছে যাত্রী,
আমি নই শুধু
আমার সম্মুখে-পেছনে,
ডানে-বায়ে লাখে লাখ প্রাণ।
নজরুল-তাজ, মনসুর-জামান,
গায়ে গা জড়ানো অনুভূতি,
চরম ক্লান্তি অথচ,
পরিস্ফুট -
নির্ভরতার প্রোজ্জ্বল আকুতি।
চেয়ে চাতক পাখির মতো
কতশত সোনার সন্তান,
মনে নেই ক্লান্তি অভিমান-
অগুনতি দিনের যুদ্ধজয়ী প্রাণ।
ফিরেছি পিতার আসনে
নিরাপত্তাহীন জীবনভর,
সম্মুখীন করে খুঁড়েছিল-
আমার ফাঁসির কবর।
যত নিপীড়ন-
পশ্চিমা অবহেলা,
আয়ু’র গতিকে করে হ্রাস,
জীবন খাতে সারাবেলা।
আমার ভাগ্য বরাদ্দ
যতটুকু শলিতা,
পুড়েছে অধিক তার -
যার বর্ণনা ইতিহাসে হয় না।
সহজ-সরল পৌঢ়ত্বের ছাপ,
ঢাকবার নেই জো,
দৃষ্টি তখনও স্পর্শ করেনি-
ঘুমহারা সহযাত্রীর রাত্রি-নিশিবোঁ।
সেবার প্রকৃতিতে গড়া
দুখিনী রেণুর প্রাণ, হাসু-কামাল-জামাল-রাসেল
আদুরে ডাক বিস্মৃত অম্লান।
গাড়ি ধীরলয়ে চলে এগিয়ে
দূরের ক্ষীণ আলো রশ্মি,
ক্রমে উজ্জ্বল হয়-
দূরের সরুপথ ঠেলে।
বেড়ে চলে আকাক্সক্ষা
জাগে নতুন আশা,
বহনকারী গাড়ি থামে রেসকোর্স- ময়দান লোকে ঠাসা।
যেখানে দাঁড়িয়ে আমি
শুনাই স্বাধীনতার গান,
এবারের সংগ্রাম -
স্বাধীনতার সংগ্রাম হয় অভিধান।
সেদিনের মতো বজ্রকণ্ঠে নয় জ্বালাময়ী ভাষণ,
ব্যক্ত করি আজ-
নতুন আশার স্বপন।
আমার কর্তব্যের অনুভূতি,
দেশ গড়ার অঙ্গীকার,
স্ব-কণ্ঠে শুনাই আমি-
রাওয়ালপিন্ডির লৌহকপাট খোলার।
কোন রূপকথার গল্প নয়
কেবলই সত্য অভিধান,
আমার সম্মুখে -
ফাঁসির ঘোষণা উড়ায় পাক নিশান।
হুকুম নয়, আহ্বান
এসো ছাত্রযুবক-যোদ্ধা,
মিলেমিশে দেশ গড়ি-
কৃষক-শ্রমিক জনতা।
এসো অর্থবহ করি স্বাধীনতা,
শোষণ নয়-শাসিতের শাসন,
মেনে নাও বাংলায়-
আইনি-অধীনতা।
শুনলো না, মানলো না
নষ্ট ভ্রষ্ট কীট দষ্ট শয়তান,
সোনার বাংলায় আওয়াজ- অস্ত্র-মেশিন গান।
লুটেপুটে খাওয়া দল দিকবিদিক
আমার স্বপ্নের বুকে ছুরি,
গর্জে উঠে-
শাসালাম চারদিক।
হায়েনার মতো রক্ত ঝরালো
ভাইয়ে ভাইয়ের,
রূপসী বাংলার জমিন পুড়ে
স্বাধীন বাংলা নিঃশেষ।
ভুলে গেলো জয়বাংলা
ত্রিশ লাখ শহীদী প্রাণ,
আমি কঠোর হলাম,
ভুলে গেল তবু সম্ভ্রমহারা-
মা-বোনের অবদান।
ওরা ভুলে গেলো ভাষা শহীদ
ভাষাশিল্পীর গান,
ওরা ভুলে গেলো
বীর বাঙালির করুণ পরিণাম।
বলেছি আমি নওজোয়ান
রক্ত দিয়ে কেনা স্বাধীনতা,
রক্ষায় তা -
মুজিবই দেবে প্রথম প্রাণ।
লুটেপুটে খাওয়া দল দিকবিদিক
আমার স্বপ্নের বুকে ছুরি,
গর্জে উঠে-
শাসালাম চারদিক।
হায়েনার মতো রক্ত ঝরালো
ভাইয়ে ভাইয়ের,
রূপসী বাংলার জমিন পুড়ে
স্বাধীনতা নিঃশেষ।
ভুলে গেলো জয়বাংলা
ত্রিশ লাখ শহীদীপ্রাণ,
আমি কঠোর হলাম,
ভুলে গেল ওরা সম্ভ্রমহারা-
মা-বোনের অবদান।
ওরা ভুলে গেলো ভাষাশহীদ
ভাষাশিল্পীর গান,
ওরা ভুলে গেলো
বাঙালা মায়ের করুণ পরিণাম।
বলেছি আমি নওজোয়ান
রক্ত দিয়ে কেনা স্বাধীনতা,
রক্ষায় তা -
মুজিবই দেবে প্রথম প্রাণ।
শকুনিরা চালালো দেহে গুলি,
হিংস্রতায় রক্তাক্ত হলো-
আমার বত্রিশ নম্বরের ভূমি।
স্বাধীনতা শুধু নয়,
গেলাম দিয়ে আমিসহ
পরিবারের প্রাণ,
গর্জে উঠুক-
শুরু হোক মুক্তির সংগ্রাম।
স্বাধীনতা তুমি
ঘুরে দাঁড়াও একদিন,
রেখে গেছি রক্তঋণ-
হাসিনার তরে আসবেই সুদিন।
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর
যোগাযোগ: । [email protected] । বিজ্ঞাপন ও বার্তা সম্পাদক: 01894944220
ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।
© 2024 Sangbad Sarabela All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh