মানুষের জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত হচ্ছে বিয়ে। আর এই বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার মাধ্যমেই আমরা একজন মানুষের সাথে সারাজীবনের জন্য সংসার শুরু করি।
কিন্তু সারা জীবনের এই সম্পর্কের জন্য অনেক মেয়েরাই ভয় পায়। আর ভয় পাওয়াটা খুব স্বাভাবিক। কারণ, তাকে পুরো পরিবার রেখে চলে যেতে হয় স্বামীর সংসারে। কোন ধরনের পুরুষকে বিয়ে করলে এই সংসার জীবন সুখের হবে? এ ব্যাপারে মনোবিদ গেভিন ভ্যান্সের নেতৃত্বে যুক্তরাষ্ট্রের ওকল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান বিভাগ একটি গবেষণা করেছে।
গবেষণায় জানা যায়, যেসব পুরুষ উচ্চ আবেগীয় বুদ্ধিমত্তার অধিকারী, তাঁদের দাম্পত্য জীবনে সফল আর সুখী হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। কেননা তাঁরা সঠিক মানুষটাকেই দাম্পত্যসঙ্গী হিসেবে বেছে নিতে পারেন। অর্থাৎ পুরুষের আবেগীয় বুদ্ধিমতা দেখে আকৃষ্ট হওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ।
সামাজিক ও পেশাগত জীবনের সফলতায় বুদ্ধিমত্তা যেমন ইতিবাচক প্রভাব ফেলে তেমনই রোমান্টিক সম্পর্কেও সবাসরি ও গভীর প্রভাব বিস্তার করে। ‘পারসোনালিটি অ্যান্ড ইনডিভিজ্যুয়াল ডিফারেন্সেস’ জার্নালে প্রকাশিত এই গবেষণায় ২০২ জন পুরুষের ওপর জরিপ চালানো হয়। যাচাই করা হয় তাদের বুদ্ধিমত্তা। ১৮ থেকে ৬৫ বছর বয়সী পুরুষরা দাম্পত্য জীবনে সুখী ও রোমান্টিক হয় এবং তারা মানসিক দক্ষতা, যৌক্তিক বিশ্লেষণের মাধ্যমে জীবনঘনিষ্ঠ সমস্যা সমাধানে সক্ষম।
এ গবেষণায়, উচ্চ বুদ্ধিমত্তাসম্পন্ন পুরুষেরা জানিয়েছেন, তারা তাদের রোমান্টিক সম্পর্কে সুখী ও সন্তুষ্ট। তারা খুব কমই তাদের দাম্পত্যসঙ্গীকে নিয়ন্ত্রণ করতে চান। সিদ্ধান্ত গ্রহণে সঙ্গীর সঙ্গে আলোচনা করেন।
বুদ্ধিমান মানেই যে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষায় ভালো ফলাফল, সফল পেশাজীবন বা আর্থিকভাবে সচ্ছল এমনটা সব সময় না-ও হতে পারে। বুদ্ধিমান পুরুষেরা খুব কমই সঙ্গীকে নিয়ন্ত্রণ বা পরিবর্তন করতে চান। বরং একসঙ্গে বেড়ে ওঠার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তারা সহজে ক্ষমা করে এগিয়ে যেতে পারেন আর যেকোনো পরিস্থিতিতে সমস্যা সমাধানের ওপর জোর দেন।
গবেষণার অন্যতম পর্যবেক্ষণ হলো, উচ্চ বুদ্ধিমত্তাসম্পন্ন পুরুষেরা সঙ্গীর ওপর আবেগীয়ভাবে নির্ভরশীল। তাঁরা হয়তো অন্যদের তুলনায় সঙ্গীর সঙ্গে কম সময় কাটান। তবে যেটুকু সময় কাটান, ‘কোয়ালিটি সময়’ কাটান। বুদ্ধিমান পুরুষেরা দায়িত্বশীল এবং সঙ্গীকে কথা দিয়ে কথা রাখেন।
অন্য দিকে যাদের আবেগীয় বুদ্ধিমত্তা কম, তাঁরা সঙ্গীকে নিয়ে হীনম্মন্যতায় ভোগেন। সম্পর্কে থেকে তাঁদের মধ্যে নানা ধরনের দ্বিধাদ্বন্দ্ব কাজ করে। তাঁদের মধ্যে সঙ্গীকে পরিবর্তন বা নিয়ন্ত্রণ করতে চাওয়ার প্রবণতা বেশি থাকে। তাঁরা সঙ্গীর যে গুণ দেখে আকৃষ্ট হয়ে বিয়ে করেছেন, ভবিষ্যতে সেটি নিয়েই সংসারে জটিলতা তৈরি হয়। যেসব পুরুষের বুদ্ধিমত্তা কম, তাঁরা প্রায়ই অস্বাস্থ্যকর সম্পর্কের কারণ হয়ে দাঁড়ান। অনেক ক্ষেত্রে তা বিচ্ছেদ পর্যন্ত গড়ায়।