৫১০০
কোটি ডলারের কাছাকাছি আন্তর্জাতিক ঋণ মাথায় নিয়ে সম্প্রতি নিজেকে দেউলিয়া
ঘোষণা করেছে শ্রীলঙ্কা। ঘোষণার আরো আগে থেকেই দেশটিতে খাবার, জ্বালানিসহ
নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের অভাব দেখা দিয়েছে। এ ঘোষণার পর দেশের অর্থনৈতিক সংকট
আরে তীব্রভাবে সামনে আসে। সে পথে এবার ওষুধের ঘাটতিও চরম আকার ধারণ করেছে
শ্রীলঙ্কায়।
দেশটির এ পরিস্থিতিতে লাখ লাখ মানুষ অসহায় হয়ে পড়েছেন। ফরাসি সংবাদ সংস্থা এএফপি তেমনই এক অসহায় মানুষের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেছে।
দাউদ
মোহাম্মদ গনি জন্মসূত্রে শ্রীলঙ্কার নাগরিক। সম্প্রতি তার স্ত্রী
ক্যানসারে আক্রান্ত হন। প্রতিদিনই তাকে ওষুধ খেতে হয়। কিন্তু দেশে কোথাও
ওষুধ নেই। নির্দিষ্ট ওষুধের জন্য এক ফার্মেসি থেকে আরেক ফার্মেসিতে
কাঙ্ক্ষিত ওষুধের সন্ধান করছেন। কিন্তু কোথাও সেই ওষুধ পেলেন না তিনি।
গনি
বলেন, এবারই প্রথম স্ত্রীর ক্যানসারের ওষুধ খুঁজে পেলাম না। সে খুবই
অসুস্থ। আমি কি করব? খুব অসহায় বোধ করছি। তবে তাকে বাঁচাতে আমার যা যা করা
দরকার তার সবটাই করব।
শুধুমাত্র একজন
গনি নয়, তার মতো লাখো শ্রীলঙ্কানের অবস্থাটা এখন এমনই। বৈদেশিক মুদ্রার
অভাবে ওষুধের মতো জীবন রক্ষাকারী পণ্য আমদানি করতে পারছে না দেশটি।
বর্তমানে সবচেয়ে বেশি রুগ্ন হয়ে পড়েছে লঙ্কার স্বাস্থ্যখাত। প্রয়োজনীয় অনেক
ওষুধ ফুরিয়ে গেছে সেখানে।
কলম্বোর
লেডি রিজওয়ে হসপিটালের শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ বিরাজ জয়সিংহে জানিয়েছেন, তাদের
হাসপাতালে ছয় মাসের ওষুধ সংরক্ষিত থাকে। কিন্তু বর্তমানে তাদেরও ওষুধ সঙ্কট
শুরু হয়ে গেছে।
দেশটির
স্বাস্থ্যকর্মীরা জানিয়েছেন, শ্রীলঙ্কার হাসপাতাল ও ফার্মেসিগুলোর
প্রয়োজনীয় ওষুধ প্রায় শেষ। বাধ্য হয়ে ওষুধসহ জরুরি চিকিৎসাসামগ্রীর
দাবিতে শত শত চিকিৎসক রাজপথে নেমেছেন। অনেক প্রতিষ্ঠান-ব্যক্তি জরুরি
সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন।
লঙ্কান
ওষুধ ও স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ বলছে, এই সাহায্য তাদের জন্য যথেষ্ট নয়। তাদের
আরো সাহায্য প্রয়োজন। প্রসঙ্গত, শ্রীলঙ্কাকে ৮৫ শতাংশ ওষুধই বাইরে থেকে
আমদানি করতে হয়। - সূত্র: ফার্স্ট পোস্ট