ছবিঃ সংগৃহীত।
কাশ্মীরের পেহেলগামে ভয়াবহ বন্দুকধারীদের হামলায় ২৬ জন ভারতীয় পর্যটক নিহত হওয়ার পর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সম্পর্ক নতুন করে তীব্রভাবে অবনতি ঘটেছে। ঘটনার জন্য পরোক্ষভাবে পাকিস্তানকে দায়ী করে একের পর এক কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে নয়াদিল্লি। ভারত সরকার ইতোমধ্যে দুই দেশের মধ্যকার কয়েক দশকের পুরোনো সিন্ধু নদীর পানি বণ্টন চুক্তি অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করেছে। পাশাপাশি প্রধান স্থল সীমান্ত বন্ধ করে দেওয়া এবং পাকিস্তানি নাগরিকদের ১ মে'র মধ্যে ভারত ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ভারতের
এই প্রতিক্রিয়াকে ‘শিশুসুলভ' বলে মন্তব্য করেছে পাকিস্তান। ইসলামাবাদ বলছে, নয়াদিল্লির এমন পদক্ষেপে পরিণত সিদ্ধান্তের অভাব স্পষ্ট। ভারতের কূটনৈতিক প্রতিক্রিয়ার জবাব দিতে পাকিস্তানের সরকার এক জরুরি জাতীয়
নিরাপত্তা কমিটির (NSC) বৈঠকের ডাক দিয়েছে, যেখানে দেশের সামরিক ও বেসামরিক শীর্ষ
কর্মকর্তারা উপস্থিত থাকবেন। সাধারণত কেবলমাত্র বড় ধরনের সন্ত্রাসী
হামলা বা বহিরাগত হুমকির
সময় এই ধরনের উচ্চ
পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
পাকিস্তানের
উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার
এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ভারতের প্রতিক্রিয়াগুলো শিশুসুলভ এবং তাতে গুরুত্বের অভাব রয়েছে। তিনি বলেন, ভারত প্রতিটি ঘটনার জন্য পাকিস্তানকে দোষারোপ করে এবং অতীতের মতো এবারও একই পথ অনুসরণ করছে।
তবে পাকিস্তান এবার উপযুক্ত জবাব দেবে, এই জবাব কম
হবে না।
বিশ্বব্যাংকের
মধ্যস্থতায় ১৯৬০ সালে স্বাক্ষরিত সিন্ধু পানি চুক্তি সম্পর্কে ইসহাক দার বলেন, পাকিস্তানের সঙ্গে ভারতের দীর্ঘদিনের পানি-সংক্রান্ত মতানৈক্য রয়েছে। তবে ভারতের হাতে যদি কোনো বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ থাকে, তাহলে তাদের উচিত তা জনসমক্ষে আনা।
এদিকে
পাকিস্তান সরকার কাশ্মীরের এই হামলাকে ভারতের
একটি “ফলস ফ্ল্যাগ অপারেশন” হিসেবে চিহ্নিত করেছে। অর্থাৎ তারা দাবি করছে, ভারত নিজেই এই হামলা সাজিয়েছে
যাতে পাকিস্তানকে অভিযুক্ত করা যায়। পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ বলেন, এই আশঙ্কাকে পুরোপুরি
উড়িয়ে দেওয়া যায় না, বরং অতীতের কিছু ঘটনা দেখলে এটি সম্ভাব্য বলেই মনে হয়।
ভারতীয়
মন্ত্রিসভার নিরাপত্তাবিষয়ক কমিটির বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সভাপতিত্বে এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, যতদিন না পাকিস্তান আন্তঃসীমান্ত
সন্ত্রাসে মদদ দেওয়া বন্ধ করছে, ততদিন সিন্ধু পানি চুক্তি কার্যকর থাকবে না। এটি ভারতের সবচেয়ে কঠোর কূটনৈতিক সিদ্ধান্তগুলোর একটি বলে বিবেচনা করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য,
কাশ্মীরের ভারত-শাসিত অঞ্চলে ১৯৮৯ সাল থেকে স্বাধীনতাকামী আন্দোলন চলছে। বহু কাশ্মীরি মুসলমান চায়, অঞ্চলটি হয় পাকিস্তানে যোগ
দিক অথবা একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করুক। ভারত একে পাকিস্তান-সমর্থিত সন্ত্রাসবাদ হিসেবে দেখলেও পাকিস্তানের মতে, এটি একটি ন্যায্য ও স্বাধীনতাকামী সংগ্রাম।
কয়েক দশকের এই সংঘাতে এখন
পর্যন্ত হাজার হাজার বেসামরিক মানুষ, নিরাপত্তাকর্মী এবং বিদ্রোহী প্রাণ হারিয়েছেন।
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর
যোগাযোগ: । [email protected] । বিজ্ঞাপন ও বার্তা সম্পাদক: 01894944220
ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।
© 2025 Sangbad Sarabela All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh