ফিলিস্তিনের
অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ড থেকে ফিলিস্তিনিদের বিতাড়িত করতে পানিকে "যুদ্ধের অস্ত্র" হিসেবে ব্যবহার করার অভিযোগ করেছেন ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস। তিনি আরও বলেছেন, ইসরায়েল গাজায় সমস্ত মৌলিক পরিষেবা বন্ধ করে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার কনভেনশন লঙ্ঘন করছে। গতকাল (২৩ মার্চ) এক
প্রতিবেদনে বার্তাসংস্থা আনাদোলু এ তথ্য জানিয়েছে।
বিশ্ব
পানি দিবস উপলক্ষ্যে দেওয়া এক ভাষণে ফিলিস্তিনি
প্রেসিডেন্ট আব্বাস বলেন, “দখলদার ইসরায়েল আমাদের জনগণের দুর্ভোগ, বাস্তুচ্যুতি এবং ধীরে ধীরে মৃত্যুর হার বাড়ানোর জন্য পানি এবং মৌলিক সেবাগুলিকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে।” তিনি উল্লেখ করেন, বিশেষভাবে পানি বন্ধ করে এবং মানবিক সাহায্য প্রবাহ বন্ধ করে ইসরায়েল এই কাজ করছে,
যা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার কনভেনশন এবং রেজোলিউশনের স্পষ্ট লঙ্ঘন।
ফিলিস্তিনের
সরকারি সংবাদ সংস্থা ওয়াফা জানিয়েছে, আব্বাস গাজার পানি সংকটের সমাধানের জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে "বাস্তবসম্মত এবং মৌলিক পদক্ষেপ" নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “বিশ্বকে বুঝতে হবে, গাজার ফিলিস্তিনি শিশুদের নিরাপত্তার চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আর কিছু নেই।
এই শিশুরা এক লিটার পানি
পেতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে
দাঁড়িয়ে থাকে, দূষিত পানি পান করে, খাদ্য ও ওষুধ থেকে
বঞ্চিত হয়, পানিশূন্যতা ও তৃষ্ণায় মারা
যায় এবং বিশ্বের অন্যান্য শিশুদের মতো নিরাপদে বেঁচে থাকার অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়।”
আব্বাস
আরও বলেন, ইসরায়েল পানিকে যুদ্ধের অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে এবং এটি “ফিলিস্তিনিদের জীবন নিয়ন্ত্রণ, তাদের ভূমি থেকে উৎখাত, অবৈধ বসতি সম্প্রসারণের রাজনৈতিক এজেন্ডা বাস্তবায়ন এবং দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধানকে ক্ষুণ্ন করার জন্য দীর্ঘদিনের পরিকল্পিত নীতি”।
২০২৩
সালের ৭ অক্টোবর থেকে
গাজায় ইসরায়েলের আগ্রাসন শুরু হয়, যা এখন পর্যন্ত
৫০ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনির প্রাণ কেড়ে নিয়েছে। দীর্ঘ ১৫ মাসের সামরিক
অভিযান শেষে যুক্তরাষ্ট্র এবং আন্তর্জাতিক চাপের পর গত ১৯
জানুয়ারি যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করে ইসরায়েল। তবে হামাসের সঙ্গে মতানৈক্যর কারণে গত মঙ্গলবার থেকে
ফের বিমান হামলা শুরু হয়। ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর আকস্মিক হামলায় গত কয়েক দিনে
৭০০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত এবং ১০০০ জনের বেশি আহত হয়েছে, ফলে জানুয়ারিতে কার্যকর হওয়া যুদ্ধবিরতি ও বন্দি বিনিময়
চুক্তি অকার্যকর হয়ে গেছে।