দক্ষিণ আফ্রিকার
জোহানেসবার্গের দক্ষিণ-পশ্চিমের একটি পরিত্যক্ত স্বর্ণ খনি থেকে অন্তত ৬০ জনের মরদেহ
উদ্ধার করেছে দেশটির পুলিশ।
আজ (১৫ জানুয়ারি)
ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি'র এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে
বলা হয়েছে, জোহানেসবার্গ থেকে প্রায় ১৪০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমের স্টিলফন্টেইন শহরের খনিতে শতাধিক শ্রমিকের প্রাণহানির আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এরপর সোমবার কর্তৃপক্ষ ওই খনি থেকে
মৃতদেহ উদ্ধার এবং জীবিতদের বের করে আনার চেষ্টা শুরু করে।
পুলিশের
এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, অভিযানের দু'দিনে অবৈধ
খনন কাজের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে মোট ১০৬ জন জীবিত অবৈধ
খনি শ্রমিককে উদ্ধার এবং গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ সময় ৫১
জনকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। এছাড়া আগের দিন অর্থাৎ রোববার আরও ৯ জনের মরদেহ
উদ্ধার করা হয়।
স্টিলফন্টেইন
শহরের ওই স্বর্ণ খনিটি
ভূপৃষ্ঠ থেকে ২ দশমিক ৬
কিলোমিটার ভূগর্ভে অবস্থিত। সোমবার সেখান থেকে অবৈধ খনি শ্রমিক ও মৃতদেহ উদ্ধারের
জন্য বিশেষ এক ধরনের মেশিন
ব্যবহার করেছে কর্তৃপক্ষ।
দক্ষিণ
আফ্রিকানরা এই খনি শ্রমিকদের
জুলু ভাষায় ‘‘জামা জামাস" বলে ডাকেন। এই খনি শ্রমিকরা
কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ছাড়াই অবৈধভাবে খনি থেকে স্বর্ণ সংগ্রহ করেন। দেশটির সরকার অবৈধ খনি শ্রমিকদের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে অভিযান চালিয়ে আসছে। অবৈধ খনি শ্রমিকরা প্রতিবেশী বিভিন্ন দেশ থেকে আসা অভিবাসী বলে স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন।
ওই
খনিতে আরও শতাধিক অবৈধ শ্রমিক থাকতে পারেন বলে ধারণা করছে দক্ষিণ আফ্রিকার পুলিশ। মঙ্গলবার খনি এলাকা পরিদর্শনে গিয়ে দেশটির পুলিশবিষয়ক মন্ত্রী সেনজো মুচুনু সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেছেন। তবে খনিতে ঠিক কতজন শ্রমিক অবস্থান করছেন, সেই বিষয়ে নির্দিষ্ট কোনও তথ্য জানাতে অস্বীকার করেন তিনি।
"পৃথিবীতে
এমন কোনও উপায় নেই যে সেখানে থাকা
শ্রমিকদের সংখ্যা নির্দিষ্ট করে বলা যায়। তবে আমি নিশ্চিত, খনিতে এখনও অনেক শ্রমিক আছেন। আমাদের এখানে থাকা প্রতিটি সংখ্যাই কেবল ধারণা।"
খনি
শ্রমিকদের সমর্থনকারী স্থানীয় সংস্থা ম্যাকুয়া সোমবার ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপির কাছে একটি ভিডিও পাঠিয়েছে। ভিডিওতে খনিতে কাপড়ে মোড়ানো কয়েক ডজন শ্রমিকের মরদেহ দেখা যায়।
গত বছরের
আগস্ট থেকে এখন পর্যন্ত দক্ষিণ আফ্রিকার স্টিলফন্টেইন শহর থেকে দেড় হাজারের বেশি অবৈধ
খনি শ্রমিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এই খনি শ্রমিকদের মধ্যে ১২১ জনকে ইতোমধ্যে দেশ
থেকে বিতাড়িতও করেছে দক্ষিণ আফ্রিকার পুলিশ।
সূত্র: এএফপি।