উত্তর গাজার সর্বশেষ সক্রিয় কামাল আদওয়ান হাসপাতাল জ্বালিয়ে দিয়েছে দখলদার ইসরায়েলের বাহিনী। এর আগে সেখান থেকে কয়েকশ রোগীকে জোরপূর্বক বের করে দেয় তারা। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা এ খবর জানিয়েছে।
গতকাল শুক্রবার (২৭ ডিসেম্বর) সকালে ইসরায়েলি সেনারা হাসপাতালটিতে প্রবেশ করে। এবং ব্যাপক অভিযান চালায়। এতে হাসপাতালটির বেশিরভাগ ওয়ার্ড ধ্বংস হয়ে গেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
সামাজিক মাধ্যমে এক পোস্টে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে, প্রাথমিক প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে ইসরায়েলি বাহিনীর অভিযানের সময় কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিভাগ মারাত্মকভাবে পুড়ে গেছে এবং ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে।
গাজার উপস্বাস্থ্যমন্ত্রী ইউসেফ আবু এল-রিশ জানিয়েছেন, হাসপাতালটির অস্ত্রোপচার বিভাগ, ল্যাবরেটরি এবং গুদামে আগুন দেওয়া হয়েছে। এরপর আগুন হাসপাতালের সব ভবনে ছড়িয়ে পড়ে এবং উত্তর গাজায় প্রায় সব হাসপাতালের কার্যক্রমই বন্ধ রয়েছে বলে আলাদা এক বিবৃতিতে জানায় উপত্যকাটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
এদিকে,দখলদার সেনারা কামাল আদওয়ান হাসপাতালের পরিচালক হুসাম আবু সাফিয়াকেও আটক করেছে। কিন্তু এখন তিনি কোথায় এবং কী অবস্থায় আছেন তা কেউ জানে না।
এক বিবৃতিতে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী দাবি করেছে যে, হামাসকে লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয়েছে।
অব্যাহত হামলার পর শুক্রবার সকালে সেখানে প্রবেশ করে তারা। এরপর ৪০০ জনকে আটক করে দখলদার ইসরায়েলি সেনারা। আজ শনিবার তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তাদের মধ্যে কয়েকজন পায়ে হেটে জাবালিয়া আল-নোজলা এলাকায় আসেন। তারা জানিয়েছেন, আটকের পর ইসরায়েলি সেনারা রাইফেলের বাট দিয়ে তাদের মারধর করে। এছাড়া ঠাণ্ডার মধ্যে রাখা হয় অনেককে।
সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা জানিয়েছে, আগুন লাগার পর সেটি নেভাতে কয়েক ব্যক্তি ডায়ালাইসিসের মেশিনের পানি ব্যবহার করেন। ওই পানিতে ক্লোরিন মিশ্রিত ছিল। এতে কয়েকজনের হাত ও মুখমণ্ডল পুড়ে যায়।
এদিকে জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থী সংস্থা (ইউএনআরডব্লিউএ) অবিলম্বে গাজায় মানবিক সহায়তার প্রবাহ দাবি করেছে। কারণ শিশুরা ঠাণ্ডায় মারা যাচ্ছে।
উল্লেখ্য, গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরায়েলি অভিযানে এ পর্যন্ত কমপক্ষে ৪৫ হাজার ৪৩৬ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে কমপক্ষে ১ লাখ ৮ হাজার ৩৮ জন।