যুক্তরাষ্ট্রের
ভূখণ্ডে জন্মগ্রহণ করলে জন্মসূত্রে নাগরিকত্বপ্রাপ্তির আইনটি বাতিলের ঘোষণা দিয়েছেন
দেশটির সদ্যনির্বাচিত ৪৭তম প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং যুক্তরাষ্ট্রের
পরবর্তী ভাইস প্রেসিডেন্ট জে ডি ভ্যান্সের প্রচারাভিযান সংক্রান্ত দাপ্তরিক সাইটে এ
তথ্য জানানো হয়।
দাপ্তরিক
সাইটে এ প্রসঙ্গে বলা হয়েছে, “যুক্তরাষ্ট্রের ভূখণ্ডে জন্ম নেওয়া কোনো শিশুর স্বয়ংক্রিয়ভাবে
নাগরিকত্ব প্রাপ্তির জন্য ওই শিশুর পিতা কিংবা মাতা— যে কোনো এক জনের নাগরিক হওয়া বা যুক্তরাষ্ট্রে
বৈধভাবে বসবাসের অনুমোদন থাকা জরুরি। অবিলম্বের দেশের কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলোকে এই নির্দেশনা
পাঠানো হবে।”
আগামী
২০ জানুয়ারি আনুষ্ঠানিকভাবে প্রেসিডেন্ট ও ভাইস প্রেসিডেন্টের
দায়িত্ব গ্রহণ করবেন ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং জে ডি ভ্যান্স।
ওই দিন থেকেই এই নির্দেশনা কার্যকর
হবে বলে জানানো হয়েছে সাইটে।
এদিকে
যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন সংক্রান্ত আইনজীবীরা জানিয়েছেন, ট্রাম্পের এই নির্দেশনা মার্কিন
সংবিধানবিরোধী এবং যদি ক্ষমতা গ্রহণের পর সত্যিই এই
নির্দেশনা কার্যকর হয়, তাহলে সংবিধান লঙ্ঘনের মতো গুরুতর ঘটনা ঘটবে।
মার্কিন
অভিবাসন আইনজীবী গ্রেগ সিসকাইন্ড সাংবাদিকদের বলেন, “এই নির্দেশনা যুক্তরাষ্ট্রের
সংবিধানের ১৪তম সংশোধনীর সরাসরি লঙ্ঘন। যদি সত্যিই এটি কার্যকরের পদক্ষেপ নেওয়া হয়, তাহলে সরকারের বিরুদ্ধে মামলা করা যাবে।”
২০২২
সালে পিউ রিসার্চ সেন্টার পরিচালিত শুমারি অনুযায়ী যুক্তরাষ্ট্রের মোট জনসংখ্যা ৩৩ কোটি ৪৯
লাখ। এই জনসমষ্টির একটি
বিশাল অংশ বৈধ-অবৈধ অভিবাসী। এদের মধ্যে লাখ লাখ বাংলাদেশিও রয়েছেন। অন্যান্য দেশের অভিবাসনপ্রত্যাশীদের মতো তাদেরও একমাত্র লক্ষ্য যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকত্ব ও গ্রিনকার্ড অর্জন।
মার্কিন
নাগরিকত্ব-গ্রিনকার্ড অর্জনের একটি সহজ এবং জনপ্রিয় পথ মার্কিন ভূখণ্ডে
সন্তান জন্মদান। কারণ যুক্তরাষ্ট্রের আইন অনুযায়ী কোনো শিশু ভূমিষ্ঠ হওয়া মাত্র তাকে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক হিসেবে গণ্য করা হয় এবং ওই
শিশুর বয়স ১৮ পার হওয়ার
আগ পর্যন্ত তাকে বড় করা এবং
দেখাশোনা করার জন্য তার পিতা-মাতাকে বৈধভাবে বসবাসের অনুমতি দেওয়া হয়। আর একবার বৈধ
বসবাসের অনুমতি পেলে নাগরিকত্ব ও গ্রিনকার্ড প্রাপ্তির
পথও অনেক সহজ হয়। ফলে ট্রাম্পের এই নির্দেশনা যুক্তরাষ্ট্রে
বসবাসকারী বৈধ কাগজপত্র ও নথিবিহীন অভিবাসীদের
জন্য একটি বড় ধাক্কা।
পিউ
রিসার্চ সেন্টারের শুমারির তথ্য বলছে, যুক্তরাষ্ট্রে বর্তমানে বাসব করছেন ১১ লাখ ৮৭
হাজার ৮১৬ জন অভিবাসী। এই
অভিবাসীদের একটি উল্লেখযোগ্য অংশেরই বৈধ নথি নেই।
সূত্র
: টাইমস অব ইন্ডিয়া