আজ (২ নভেম্বর)
জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতিক বিষয়ক অঙ্গসংস্থা ইউনেস্কোর প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে
বিশ্বজুড়ে সাংবাদিক হত্যা বৃদ্ধি নিয়ে ভয়াবহ তথ্য উঠে এসেছে। এতে বলা হয়েছে ২০২০-২১
সালের তুলনায় ২০২২-২৩ সালে সারাবিশ্বে সাংবাদিক হত্যা বেড়েছে ৩৮ শতাংশ যা সংখ্যায় ১৬২
জন। এরমধ্যে নারী সাংবাদিক আছেন ১৪ জন।
এ ব্যাপারে
ইউনেস্কো ডিরেক্টর জেনারেল অদ্রি আজ্যুলে বলেছেন, "২০২২ ও ২০২৩ সালে সারাবিশ্বে
প্রতি চারদিনে একজন সাংবাদিক শুধুমাত্র তাদের
দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে সত্য প্রতিষ্ঠার জন্য হত্যার শিকার হয়েছেন"।
হত্যাকান্ডের
শিকার হওয়া অধিকাংশ সাংবাদিকই যুদ্ধকবলিত দেশগুলোতে দায়িত্বরত অবস্থায় হত্যার শিকার
হয়েছেন। এর ভেত্রে একটা বড় অংশই তাদের নিজভূমে নিহত হন।
অপরদিকে ইউনেস্কোর
এই প্রতিবেদনে উঠে এসেছে আরও একটি চাঞ্চল্যকর তথ্য। সাংবাদিকদের একটি বড় অংশ সংঘবদ্ধ
অপরাধ ও দুর্নীতি নিয়ে অনুসন্ধান করতে গিয়ে হত্যার শিকার হন। আরেকদল আছেন যারা বিভিন্ন
বিক্ষোভ ও প্রতিবাদের রিপোর্ট করতে গিয়ে নিহত হয়েছেন।
বিপজ্জ্বনক
অঞ্চল
প্রতিবেদনটিতে
সাংবাদিকদের জন্য সবচেয়ে বিপজ্জ্বনক এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে লাতিন আমেরিকা,
ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জ এবং মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোকে।
২০২২ সালে
১৯টি পৃথক ঘটনায় মেক্সিকোতে সবচেয়ে বেশি সাংবাদিক হত্যার ঘটনা ঘটেছে। ২০২৩ সালে এই
সংখ্যাটি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৪'এ। যা ফিলিস্তিন ও নিকটবর্তী এলাকায় সংঘটিত হয়েছে।
মুদ্রার অপরপিঠ
দেখা যায় উত্তর আমেরিকা এবং পশ্চিম ইউরোপীয় দেশগুলোতে। সাংবাদিকদের জন্য এসব দেশগুলো
সবচেয়ে বেশি নিরাপদ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে ইউনেস্কোর এই প্রতিবেদনে। ২০২২-২৩ সালে এসব
অঞ্চলে মাত্র ছয়জন সাংবাদিক হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটে।
নিহত সাংবাদিকদের
মধ্যে নারীর সংখ্যা ১৪ জন, যা শতকরা হিসেবে ৯ শতাংশ। এই ১৪ নারী সাংবাদিকের মধ্যে ৫
জনের বয়স ১৫ থেকে ২৪ বছর বয়সের মধ্যে।
বিচারহীনতার সংস্কৃতি
২০০৬ সাল
থেকে বিশ্বব্যাপী যত সাংবাদিক হত্যার ঘটনা ঘটেছে এর মধ্যে ৮৫ শতাংশ ঘটনারই কোনো বিচার
ঘটেনি। এরমধ্যে বেশকিছু ঘটনা এখনও বিচারাধীন রয়েছে, নয়তো কোনো সুরাহা হয়নি। ২০১২ সালে
সবচেয়ে বেশি ৯৫ শতাংশ ঘটনার কোনো নিষ্পত্তি হয়নি।
এ বিষয়ে অদ্রি
বলেছেন, “আমরা প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের বিচার চাই এবং জাতিসংঘের সদস্যরাষ্ট্রদের প্রতি
আমাদের আহ্বান, অপরাধীরা যেন বিনা শাস্তিতে পার না পেয়ে যায়।"
সূত্রঃ এএফপি, ডয়েচে ভেলে।