ছবিঃ সংগৃহীত।
ইসরায়েল ফিলিস্তিনি
স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের প্রধান নেতা ইয়াহিয়া সিনওয়ারকে হত্যার দাবি
করেছে। দেশটির প্রতিরক্ষা বাহিনী আইডিএফ সিনওয়ারের অন্তিম মুহূর্তের ড্রোন ভিডিও ফুটেজ
প্রকাশ করেছে।
আজ (১৮ অক্টোবর)
ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম জেরুজালেম পোস্ট এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মৃত্যুর কিছু মুহূর্ত আগে হামাস প্রধান ইয়াহিয়া সিনওয়ারকে আইডিএফ ড্রোনের দিকে লাঠি ছুড়তে দেখা যায় বলে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর প্রকাশিত ফুটেজে দেখা গেছে।
সিনওয়ারের অন্তিম মুহূর্তের ড্রোন ভিডিও ফুটেজ।
ফুটেজটিতে
একটি কক্ষে সিনওয়ারকে বসে থাকতে দেখা যায়। সেই কক্ষের ভেতরে ভবনের ভেঙে পড়া বিভিন্ন
সামগ্রী ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকতে দেখা যায়। একপর্যায়ে মুখোশধারী সিনওয়ার আইডিএফ ড্রোনের
দিকে একটি লাঠি ছুড়ে মারেন।
মূলত
গত বুধবার গাজার রাফায় ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় হামাসের প্রধান নেতা ইয়াহিয়া সিনওয়ার নিহত হন। তবে দখলদার ইসরায়েলি সেনারা জানত না তারা সিনওয়ারকে
হত্যা করেছে। পরে বৃহস্পতিবার বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর নিশ্চিত হয়ে
ইসরায়েলি হামলায় হামাস প্রধানকে হত্যার দাবি করেন ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ।
আইডিএফ
মুখপাত্র ড্যানিয়েল হাগারি বৃহস্পতিবার গভীর রাতে সিনওয়ারের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে বিবৃতি দেওয়ার সময় ফুটেজটি প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেছেন, “সিনওয়ার এমন একটি এলাকায় লুকিয়ে ছিলেন যেটিকে আমাদের বাহিনী দীর্ঘ সময় ধরে ঘিরে রেখেছিল। আমরা জানতাম না যে তিনি
সেখানে আছেন, কিন্তু আমরা দৃঢ় সংকল্পের সাথে আমাদের কাজ চালিয়ে গিয়েছি।”
হাগারি
বলেন, গাজায় একটি বাড়ির মধ্যে পালিয়ে আসা তিন যোদ্ধাকে শনাক্ত করার পরে এই হামলা চালানো
হয়েছিল। তার ভাষায়, “সিনওয়ার একাই একটি বিল্ডিংয়ে পালিয়ে গিয়েছিলেন। আমাদের বাহিনী এলাকাটিতে নজরদারি চালানোর জন্য ড্রোন ব্যবহার করে, যেটি আপনারা এখানে আমার উপস্থাপন করা ফুটেজে দেখতে পাচ্ছেন।”
হাগারি
জোর দিয়ে বলেন, “আমাদের ইতিহাসে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে সবচেয়ে নৃশংস হামলার জন্য সিনওয়ার দায়ী ছিলেন।”
তার
দাবি, “গত বছর থেকে
সিনওয়ার ন্যায়বিচার থেকে পালানোর চেষ্টা করছিলেন। কিন্তু তিনি ব্যর্থ হয়েছেন। আমরা বলেছিলাম, আমরা তাকে খুঁজে বের করব এবং তাকে বিচারের আওতায় আনব, এবং আমরা তা করেছি। ইয়াহিয়া
সিনওয়ারই গাজায় বেসামরিক লোকদের আড়ালে লুকিয়ে ইসরায়েলের সাথে যুদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন।”
প্রসঙ্গত,
ইয়াহিয়া সিনওয়ার ১৯৬২ সালে গাজার খান ইউনিস শরণার্থী ক্যাম্পে জন্মগ্রহণ করেন। তার পরিবারের আদি বাসস্থান ছিল মাজদাল আসকালানে। পরবর্তীতে দখলদার ইসরায়েল যার নাম দেয় আসকেলন। ১৯৪৮ সালে জাতিসংঘের ভোটাভুটির মাধ্যমে ইসরায়েলের সৃষ্টি হওয়ার পর সিনওয়ারের পরিবারকে
মাজদাল আসকালান ছেড়ে গাজার খান ইউনিসে চলে যেতে হয়। সেখানে শরণার্থী হিসেবে জীবন শুরু করেন তারা।
সিনওয়ার
তার জীবনের ২২ বছর দখলদার
ইসরায়েলের কারাগারে ছিলেন। ১৯৮৮ সালে দুই ইসরায়েলি সেনাকে জিম্মি এবং তাদের হত্যা করায় সিনওয়াকে আটক করা হয়েছিল। ২০১১ সালে বন্দি বিনিময় চুক্তির মাধ্যমে মুক্তি পান তিনি।
সিনওয়ার
যখন কারাগারে ছিলেন তখন ইসরায়েলি সরকার তাকে পর্যবেক্ষণ করে বলেছিল, তিনি ‘দয়ামায়াহীন’ এবং ‘শক্তিশালী’। ইসরায়েলি কারাগারে
বন্দি থাকার সময় হিব্রু ভাষা আয়ত্ত করেন ইয়াহিয়া সিনওয়ার।
২০১৭
সালে হামাসের গাজা শাখার প্রধান হন তিনি। এরপর
চলতি বছরের জুলাইয়ে ইসমাইল হানিয়া যখন গুপ্তহত্যার শিকার হন তখন তিনি
হামাসের প্রধান নেতার দায়িত্ব পান।
দখলদার
ইসরায়েলে গত বছরের ৭
অক্টোবর যে হামলা চালানো
হয় সেটির ‘মাস্টারমাইন্ড’ হিসেবে অভিহিত করা হয় সিনওয়ারকে।
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর
যোগাযোগ: । [email protected] । বিজ্ঞাপন ও বার্তা সম্পাদক: 01894944220
ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।
© 2024 Sangbad Sarabela All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh