ছবিঃ সংগৃহীত
২০২২ সালের ফেব্রুয়ারী মাসে শুরু হওয়া রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের শুরুতেই রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বারবার বলে এসেছেন, এই যুদ্ধে অন্য যারাই বিভিন্নভাবে যুক্ত হবে কিংবা তাদের সামনে বাঁধা হয়ে দাঁড়াবে তারা রাশিয়ার মানুষ ও তাদের দেশের বিরুদ্ধে শত্রু বলে বিবেচিত হবে। যদিও পশ্চিমা বিশ্ব শুরু থেকেই ইউক্রেনকে নানাভাবে সাহায্য করে আসছে। এ তালিকায় আছে ট্যাংক, অত্যাধুনিক মিসাইল সিস্টেম ও সম্প্রতি নতুন যুক্ত হওয়া এফ-১৬ আমেরিকান ফাইটার জেট। তবে এবার ইউক্রেনকে দুরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র দেওয়ার ব্যাপারে পশ্চিমা বিশ্বের প্রতি সতর্কবার্তা দিয়েছেন পুতিন।
আজ (১৩ সেপ্টেম্বর) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসিতে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানা যায়।
সেইন্ট পিটার্সবার্গে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন পশ্চিমাদের ইউক্রেনকে দুরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহ না করার জন্য আহ্বান জানান। তিনি বলেন, এতে এই যুদ্ধের মূল বিষয়বস্তুই পাল্টে যাবে। তৈরি হবে নতুন বিরোধ।
তিনি আরও বলেন, যদি পশ্চিমারা রাশিয়ায় ব্যবহারের জন্য ইউক্রেনকে দুরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহ করে, তাহলে সেটিকে এই যুদ্ধে ন্যাটোর অন্তর্ভুক্ত দেশগুলোর সরাসরি অংশগ্রহণ হিসেবে বিবেচিত হবে। অতএব ন্যাটো অন্তর্ভুক্ত দেশ, যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপিয়ান রাষ্ট্র গুলো সরাসরি রাশিয়ার সঙ্গে লড়ছে বলে ধরে নেওয়া হবে।
পুতিনের দাবি, রাশিয়ায় ক্ষেপণাস্ত্র হামলার জন্য ইউক্রেনের পশ্চিমাদের স্যাটেলাইট থেকে সরবরাহকৃত তথ্য প্রয়োজন হবে। এসব তথ্য শুধু ন্যাটো সদস্যভুক্ত দেশগুলো থেকেই পাওয়া সম্ভব।
উল্লেখ্য যে, ক্রিমিয়ায় ইউক্রেন আমেরিকার সরবরাহকৃত এটিএসিএমএস ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করেছে বলে রাশিয়া ইতোমধ্যেই অভিযোগ তুলেছে।
গত দু'বছরে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধকে কেন্দ্র করে পশ্চিমাদের বিভিন্ন কার্যকলাপকে রাশিয়ার বিরুদ্ধে পশ্চিমা দেশগুলো যুদ্ধ শুরু করে দিয়েছে বলে দেশটির কর্তাব্যক্তিরা এবং রুশ জাতীয় গণমাধ্যম বারবার প্রচার করে আসছে।
তবে পুতিনের এবারের বক্তব্যে এটা পরিষ্কার হয়েছে যে, যদি আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত রুশ অঞ্চলে পশ্চিমা দুরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হানে তবে পুরো যুদ্ধের মোড় ঘুরে যাবে। কিন্তু এর পাল্টা জবাব কেমন হবে সেটা পরিষ্কার করেনি মস্কো। পুতিন বলেছেন, আমাদের ওপর যেরকম আঘাত আসার শঙ্কা সৃষ্টি হবে আমরা সেই অনুযায়ী পদক্ষেপ নেবো।
এ বছরের জুন মাসে আন্তর্জাতিক সংবাদসংস্থা গুলোর আয়োজিত এক বৈঠকে পুতিনকে প্রশ্ন করা হয়, যদি ইউক্রেন ইউরোপের সরবরাহকৃত ক্ষেপণাস্ত্র দ্বারা রাশিয়ার মাটিতে হামলা চালায় তাহলে রাশিয়ার প্রতিক্রিয়া কেমন হবে? এর জবাবে তিনি বলেন, প্রথমত আমরা আমাদের আকাশ প্রতিরক্ষা সিস্টেম উন্নত করব যেন আমরা ক্ষেপণাস্ত্র গুলো ভূপাতিত করতে পারি। দ্বিতীয়ত কোন দেশ যদি ভাবে একটি যুদ্ধ কবলিত অঞ্চলে আমাদের বিপদ বাড়াতে এ ধরণের অস্ত্র সরবরাহ করবে, তাহলে আমরা কেন সেই মানের অস্ত্র ওইসব দেশের গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে আঘাত হানার জন্য আশেপাশের অঞ্চলে সরবরাহ করব না?
এ মাসের শুরুর দিকে রাশিয়ার পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী সার্গেই রিয়াবকভ ঘোষণা দিয়েছেন, রাশিয়া তাদের পারামাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের নীতিমালা পুনরায় সংশোধন করবে। তিনি বলেছেন, পশ্চিমা বিশ্বের সাথে রাশিয়ার ক্রমবর্ধমান সংঘাতের কারণেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এদিকে ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার ওয়াশিংটনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে এ ব্যাপারে বৈঠক করতে যাওয়ার সময় বলেছেন, রাশিয়া বেআইনী ভাবে ইউক্রেনে আক্রমণ করে এই যুদ্ধের সূচনা করেছে। এই সংঘাত রাশিয়া চাইলে যেকোনো মূহুর্তেই থামিয়ে দিতে পারে।
এখন পশ্চিমা নেতাদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে কোন বিষয়টি বেশি জরুরি, এই সংঘাত বাড়লে যে ক্ষয়ক্ষতি হবার আশংকা আছে সেগুলো বিবেচনায় রাখা, নাকি ইউক্রেনে পশ্চিমা ক্ষেপণাস্ত্র পাঠানো।
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর
যোগাযোগ: । [email protected] । বিজ্ঞাপন ও বার্তা সম্পাদক: 01894944220
ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।
© 2024 Sangbad Sarabela All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh