যুক্তরাজ্যে সাধারণ নির্বাচন আজ (বৃহস্পতিবার)। স্থানীয় সময় সকাল ৭টায় (বাংলাদেশ সময় বেলা ১২টা) শুরু হবে ভোটগ্রহণ; চলবে রাত ১০টা (বাংলাদেশি সময় রাত ৩টা) পর্যন্ত।
যুক্তরাজ্যের সাধারণ নির্বাচন নিয়ে চলছে নানা হিসাব-নিকাষ। এতে ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টির ভরাডুবির আশঙ্কা করছেন বিশ্লেষকরা। অন্যদিকে বলা হচ্ছে, সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে পারেন বিরোধী নেতা কিয়ার স্টার্মারের দল লেবার পার্টি।
ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাকের আগাম নির্বাচনের ঘোষণায় নড়েচড়ে বসে দেশটির অন্যতম প্রধান বিরোধী দল লেবার পার্টি। এতে কিছুটা বিপাকে পড়ে যায় ১৪ বছর ধরে ক্ষমতায় থাকা শাসক দল কনজারভেটিভ পার্টি। এরই মধ্যে নির্বাচনে কার জনপ্রিয়তা বেশি- তা নিয়ে জরিপ চালায় বিভিন্ন গণমাধ্যম। এসব জরিপের ফলাফলে উঠে আসা তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে ধারণা করা হচ্ছে, এবার ভরাডুবি হতে যাচ্ছে প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাকের দলের।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম টেলিগ্রাফের একটি জরিপের ওপর ভিত্তি করে বিশ্লেষণে বলা হয়, হাউজ অব কমন্সে বর্তমানে যাদের ৩৬৫ আসন রয়েছে, ক্ষমতাসীন দল হয়েও তারা এবার মাত্র ৫৩ আসন পাবে। পার্লামেন্টের ৬৫০ আসনের মধ্যে লেবার পার্টি পাবে ৫১৬ আসন। এমনকি নিজের আসনেও হেরে যেতে পারেন ঋষি সুনাক।
আরও বেশকিছু গণমাধ্যমের অনুমানে বলা হয়, বৃহত্তম দলের স্থানও হারাতে চলছে কনজারভেটিভ পার্টি। এমনকি লিবারেল ডেমোক্র্যাটদেরও তাদের চেয়ে বেশি আসন পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
তবে এমন অনুমান যে বাতাসে বেরিয়ে আসছে না, তাও স্পষ্ট করেছে কয়েকটি গণমাধ্যম। বেশকিছু কারণও তুলে ধরেছে সংবাদ মাধ্যমগুলো। ২০১০ সালে যখন ডেভিড ক্যামরুনের হাত ধরে টোরিরা ক্ষমতায় আসেন; এরপর থেকেই দেখা দেয় অর্থনৈতিক বিপর্যয়, মহামারি ও ব্রেক্সিটের মতো নানা সংকট।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ২০০৮ সালের পর অর্থনৈতিক দুর্দশা থেকে বেরোতে পারেনি যুক্তরাজ্য। কনজারভেটিভ পার্টির শাসনমালে যুক্তরাজ্যে সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়েছে; বেড়েছে স্বাস্থ্য খাতেও। এছাড়া নিত্যপণ্যের দাম বাড়লেও বাড়েনি মানুষের আয়।
এরই মধ্যে বুধবার (৩ জুলাই) প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক একটি বিদ্যালয় পরিদর্শনের সময় বলেন, লেবার পার্টির অভাবনীয় জয়ের ধারণা করা হলেও নির্বাচনের ফলাফলে ভারসাম্য থাকবে। তার দল লেবার পার্টির কাছে কখনোই আত্মসমর্পণ করবে না বলেও জানান ঋষি সুনাক।
বিপর্যস্ত সুনাক জনপ্রিয় নির্বাচনের মাধ্যমে নয়, দলের অভ্যন্তরীণ ব্যালটের মাধ্যমে ক্ষমতায় এসেছেন। তার নেতৃত্বে টোরিরা এখন শুধু লেবার পার্টির বিরুদ্ধে হেরে যাওয়ার লড়াই করছে না, একই সঙ্গে উদীয়মান রিফর্ম ইউকে পার্টি যে ক্ষতি করছে, তা ঠেকাতেও লড়ছে। এ দলটির নেতৃত্ব দিচ্ছেন নাইজেল ফারাজ, তিনি জাতীয়তাবাদী এবং সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সমর্থক হিসেবে বেশি পরিচিত।