ব্রাজিলের দক্ষিণাঞ্চলে ভয়াবহ বন্যায় এখন পর্যন্ত শতাধিক মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। এখনো বহু মানুষ নিখোঁজ রয়েছেন। তাদের উদ্ধারে কাজ করছেন জরুরি বিভাগের কর্মীরা।
দেশটির স্থানীয় বেসামরিক প্রতিরক্ষা সংস্থা এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
ব্রাজিলের রিও গ্র্যান্ডে ডো সুল রাজ্যের প্রায় ৪০০ পৌরসভা বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এখন পর্যন্ত বন্যার কারণে কয়েকশ মানুষ আহত হয়েছেন। এছাড়া প্রায় এক লাখ ৬০ হাজার মানুষ তাদের বাড়িঘর ছেড়ে যেতে বাধ্য হয়েছেন। রাজ্যের বেসামরিক প্রতিরক্ষা বিভাগ জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত ১২৮ জন নিখোঁজ রয়েছেন।
ব্রাজিলের জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপণা বিভাগ জানিয়েছে, রাজ্যের দক্ষিণাংশ আরও বন্যার উচ্চঝুঁকিতে রয়েছে। অনেক স্থানেই বিশুদ্ধ খাবার পানির অভাব দেখা দিয়েছে। এছাড়া বহু বাড়িঘর বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন অবস্থায় রয়েছে।
বন্যার কারণে রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে ভূমিধসের খবর পাওয়া গেছে। এছাড়া রাস্তাঘাট ভেসে গেছে এবং বেশ কিছু সেতু ভেঙে পড়েছে। বেসামরিক প্রতিরক্ষা বিভাগ জানিয়েছে, প্রায় ১০ লাখ মানুষ পানির অভাবে দিন কাটাচ্ছে।
গত বৃহস্পতিবার বন্যাকবলিত অঞ্চলটি পরিদর্শন করেছেন ব্রাজিলিয়ান প্রেসিডেন্ট লুলা ডি সিলভা। এই বিপর্যয়ের জন্য জলবায়ু পরিবর্তনকে দায়ী করেছেন তিনি।
জলবায়ু বিশেষজ্ঞ ফ্রান্সিসকো এলিসেউ অ্যাকুইনো বলেছেন, বিশ্বব্যাপী উষ্ণায়ন এবং আবহাওয়ার এল নিনো পরিস্থিতির ‘বিপর্যয়কর মিশ্রণের’ ফলাফল ছিল ব্রাজিলে আঘাত হানা সাম্প্রতিক বিধ্বংসী ঝড়।
দক্ষিণ আমেরিকার বৃহত্তম দেশটি সম্প্রতি বেশ কয়েকবার প্রতিকূল আবহাওয়ার সম্মুখীন হয়েছে। এর মধ্যে গত সেপ্টেম্বরে একটি ঘূর্ণিঝড়ে অন্তত ৩১ জন প্রাণ হারিয়েছেন বলে দাবি করা হয়েছে।
অ্যাকুইনো বলেছেন, ভৌগোলিক কারণে অঞ্চলটি প্রায়শই গ্রীষ্মমণ্ডলীয় এবং মেরু বায়ুর সংঘর্ষের মুখোমুখি হয়। তবে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এসব ঘটনা আরও তীব্র হয়ে উঠেছে। বন্যাকবলিত বিভিন্ন স্থানে প্রায় ১৫ হাজার সেনাসদস্য, দমকলকর্মী, পুলিশ এবং স্বেচ্ছাসেবী কাজ করছেন বলে জানা গেছে।