সাম্প্রতিক বছরগুলোর তুলনায় বাংলাদেশে এ বছর প্রাণঘাতি ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব বেশি দেখা যাচ্ছে। গত এপ্রিল থেকে মশাবাহিত এ রোগে বাংলাদেশে ১ লাখ ৩৫ হাজারের বেশি আক্রান্ত ও ছয়শরও বেশি মানুষ মারা গেছেন বলে জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)।
আর ডব্লিওএইচও-এর এক বিশেষজ্ঞ জানিয়েছেন, জলবায়ু সংকট এবং আবহাওয়ার অস্বাভাবিক অবস্থা এল নিনোর কারণে বাংলাদেশ ডেঙ্গুর এমন ভয়াবহ কবলে পড়েছে। এছাড়া জলবায়ু সংকটের প্রভাব কী রকম ভয়াবহ হতে পারে— বাংলাদেশে ডেঙ্গুর মহামারি সেটি দেখিয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি। এ বিশেষজ্ঞ হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, এটি বিশ্ববাসীর জন্য একটি সতর্কবার্তা।
আব্দেল মাহামুদ নামের বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এ বিশেষজ্ঞ বলেছেন, ‘আমরা দেখতে পাচ্ছি এসব রোগের ভয়াবহ ভার বহন করছে আরও অনেক দেশ। জলবায়ু সংকট এবং বিশ্বব্যাপী শুরু হওয়া এল নিনো জলবায়ু প্যাটার্ন— যেটির কারণে উষ্ণ ও শুষ্ক আবহাওয়া দেখা যায়— এটি পরিস্থিতি আরও খারাপ করছে।’
ডেঙ্গু পরিস্থিতি যে শুধু বাংলাদেশে খারাপ হয়েছে তা নয়। দক্ষিণ আমেরিকার দেশ পেরু এই সংকট মোকাবিলায় হিমশিম খাচ্ছে। ডেঙ্গুর প্রকোপ থেকে বাদ যায়নি যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির ফ্লোরিডার অঙ্গরাজ্যের বেশ কয়েকটি জায়গায় সতর্কতা জারি করা হয়েছে। অপরদিকে এশিয়ায় বাংলাদেশ ছাড়াও শ্রীলঙ্কা, থাইল্যান্ড এবং মালয়েশিয়ায় ডেঙ্গুর ভয়াবহ প্রকোপ দেখা গেছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এ বিশেষজ্ঞ হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, ‘এ বিষয়টি জলবায়ু সংকটের ভয়াবহতার একটি আগাম সতর্কতা।’ আর এই সংকট মোকাবিলা করতে বিশ্বের সবার সহযোগিতা প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন তিনি।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান ট্রেডোস আধনম গেব্রেইয়েসুস বুধবার (৬ সেপ্টেম্বর) এক সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন, বাংলাদেশে ডেঙ্গুতে মারা যাওয়া ৬৫০ জনের মধ্যে ৩০০ জনেরেই মৃত্যু হয়েছে আগস্টে।
ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব বাংলাদেশে প্রতি বছর দেখা যায়, বিশেষ করে বর্ষার মৌসুমে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে যায়। কিন্তু এ বছর এপ্রিল থেকেই ডেঙ্গু ছড়িয়ে পড়ে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান আরও জানিয়েছেন, ডেঙ্গুর ওপর পর্যবেক্ষণ, ল্যাবের ক্ষমতা বৃদ্ধি, রোগ বিষয়ক ব্যবস্থাপনা, ভেক্টর নিয়ন্ত্রণ ও স্বাস্থ্যবিষয়ক জরুরি বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারকে তারা সহায়তা করে আসছেন।