মিয়ানমারের সংবাদমাধ্যম ইরাবতী নিউজের তথ্য অনুযায়ী, গত মঙ্গলবার থেকেই মিয়ানমারের উপকূলীয় বিভিন্ন শহর ও গ্রাম থেকে অপেক্ষাকৃত উঁচু এলাকায় আশ্রয় নিতে আসছেন লোকজন।
পুরো মিয়ানমার জুড়ে এই অবস্থা পরিলক্ষিত হলেও পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ রাখাইন এবং তার সংলগ্ন আয়রাবতী অঞ্চলের বাসিন্দাদের আশ্রয় নেওয়ার হার সবচেয়ে বেশি দেখা গেছে।
মিয়ানমারের দৈনিক মিয়ানমার নাওয়ের তথ্য অনুযায়ী, শুক্রবার পর্যন্ত কেবল আয়রাবতী অঞ্চলের লাবুত্তা ও মায়াউংমায়া শহর থেকেই বাড়ি ছেড়ে আশ্রয়কেন্দ্রে আসা লোকজনের সংখ্যা ১০ হাজার ছাড়িয়ে গেছে।
বাংলাদেশ, মিয়ানমার ও ভারত— তিন দেশের আবহওয়া দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী এখনও বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করা ঘূর্ণিঝড় মোখা রোববার বাংলাদেশের কক্সবাজার এবং মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশের কিয়ুকফিউ শহরের উপকূলে আছড়ে পড়বে এবং সে সময় ঝড় উপদ্রুত অঞ্চলে বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় ১০০ কিলোমিটার ছাড়িয়ে যেতে পারে।
মিয়ানমারের আবহাওয়া দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ৬ লাখ ৭৬ হাজার ৫৭০ বর্গকিলোমিটার আয়তনের এই দেশটির প্রায় সব শহর ও গ্রামে ঝড়ের প্রভাব অনুভূত হবে তবে মূল ধাক্কা যাবে রাখাইন ও আয়রাবতীর বিভিন্ন গ্রাম ও শহরের ওপর দিয়ে।
দেশটির উপকূলীয় অঞ্চলগুলোতে আশ্রয়কেন্দ্রের সংখ্যা প্রয়োজনের তুলনায় বেশ কম। তাই বাড়িঘর ছেড়ে আসা আশ্রয়প্রার্থীদের অনেকেই শহরের বিভিন্ন স্কুল, বৌদ্ধ মঠ ও আত্মীয়দের বাড়িতে।
ঝড়ের হুমকি সত্ত্বেও ঝুঁকিপূর্ণ বিভিন্ন এলাকায় এখনও কিছু মানুষ রয়ে গেছেন। নিজেদের বাড়িঘর ও সহায়-সম্পত্তি রক্ষার উদ্দেশ্যেই এলাকা ছেড়ে বেরোননি তারা।
জাতিসংঘের মানবিক সহায়তা সংস্থা ইউএনওসিএইচএ ঘূর্ণিঝড় মোখায় মিয়ানমারের সম্ভাব্য পরিস্থিতি নিয়ে ইতোমধ্যে উদ্বেগ প্রকাশ করে বিবৃতি দিয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, ‘মিয়ানমারের রাখাইন (আরাকান) প্রদেশে ২ লাখ ৩২ হাজারেরও বেশি মানুষের বসবাস এবং জনসংখ্যার অনুপাতে প্রদেশটির উপকূলীয় এলাকায় আশ্রয়কেন্দ্রের সংখ্যা কম। যেসব আশ্রয়কেন্দ্র আছে, সেগুলোর অবস্থাও ভালো নয়। আমরা বিশেষভাবে রাখাইনের লোকজন নিয়ে চিন্তিত।’