আজ একুশে ফেব্রুয়ারী। ১৯৫২ সালের এই দিনে মাতৃভাষা বাংলার জন্য শহিদ হয়েছিলে রফিক, সালাম, জব্বার, বরকত ও শফিউরসহ আরও কয়েকজন৷ এই বীরদের আত্মত্যাগে আমরা পেয়েছি মায়ের ভাষা। শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে ইউনেস্কো এই দিনটিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিশেবে ঘোষণা করে। এরপর থেকেই বিশ্বব্যাপী পালন করা হয় দিনটি।
ভাষা আন্দোলনের ৭০ বছর পেড়িয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত বরগুনার ৫২৮টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নির্মিত হয়নি শহিদ মিনার। এগুলোর কোনটিতে কলাগাছ ও বাঁশ দিয়ে শহীদ মিনার বানিয়ে শহিদদের শ্রদ্ধা জানানো হলেও বেশীরভাগ স্কুলেই পালিত হচ্ছে না দিবসটি। ফলে মাতৃভাষা দিবসের ইতিহাস এবং তাৎপর্য জানতে পারছেনা কোমলমতি শিক্ষার্থীরা।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসসূত্রে জানা যায়, বরগুনায় মোট প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে ৭৯৮ টি, যারমধ্যে ৫২৮ টি স্কুলেই নেই শহীদ মিনার। সদর উপজেলায় ২২৮ টি স্কুল থাকলেও শহিদ মিনার আছে ১২৯ টিতে, আমতলী উপজেলায় ১৫২ টি স্কুলের মধ্যে শহিদ মিনার আছে ১৪টি স্কুলে, বেতাগীতে ১২৯টি স্কুলের ৫৪টি স্কুলে আছে শহিদ মিনার। এ ছাড়াও পাথরঘাটার ১৪৯ টি স্কুলের মধ্যে ৪ টি, বামনায় ৬২ টি স্কুলের মধ্যে আছে ৫৬ টি এবং তালতলী উপজেলার ৭৮ টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে শহিদ মিনার আছে মাত্র ১৩ টি স্কুলে। জেলার মোট ৭৯৮ টি স্কুলের মধ্যে মাত্র ২৭০ টি স্কুলে আছে শহিদ মিনার।
এ বিষয়ে শিক্ষকরা বলেন, আমাদের স্কুলে স্থায়ী শহিদ মিনার না থাকায় মাটি ও কলাগাছ দিয়ে মিনার বানাতে হয়। এতে শহিদ মিনারের ডিজাইন ঠিক থাকেনা। নিজ স্কুলে শহিদ মিনার না থাকলে শিক্ষার্থীদের এই দিবস সম্পর্কে তেমন গুরুত্ব থাকেনা। ছোট ছোট শিশুদের ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস সম্পর্কে ধারনা দিতে প্রতি স্কুলেই স্থায়ী শহিদ মিনার দরকার। এতে শিক্ষার্থীরা শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হবে।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এমএম মিজানুর রহমান বলেন, জেলার দুই তৃতীয়াংশ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শহিদ মিনার নেই। সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সাথে আলোচনা করা হবে। শিগগিরই শতভাগ স্কুলে স্থায়ী শহিদ মিনার নিশ্চিত করা হবে।
বরগুনা জেলা প্রশাসক হাবিবুর রহমান বলেন, প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহিদ মিনার থাকা প্রয়োজন। এতে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা প্রাথমিক পর্যায়ে ভাষার জন্য জীবন দেয়া শহিদদের সম্পর্কে সম্যক ধারণা পাবে। প্রতিটি উপজেলার প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাদের সাথে আলোচনা করে প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দ্রুত সময়ের মধ্যে শহিদ মিনার নির্মাণের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।