ছবিঃ সংগৃহীত
২০২৪ সাল শোবিজ অঙ্গনে ছিল নানা চমক, সাফল্য এবং উত্থান-পতনের বছর। এই বছরের আলোচিত ঘটনাগুলোর মধ্যে সম্পর্কের টানাপোড়েন ও বিচ্ছেদ ছিল একটি উল্লেখযোগ্য বিষয়। তারকাদের ব্যক্তিজীবন সবসময়ই ভক্তদের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকে, আর যখন কোনো সম্পর্কের ইতি ঘটে, তা হয়ে ওঠে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু।
এই বছরও অনেক প্রিয় মুখের সম্পর্ক ভাঙার খবর আমাদের বিস্মিত করেছে। কেউ কেউ বিচ্ছেদের পেছনে ব্যক্তিগত মতানৈক্যকে কারণ হিসেবে দেখিয়েছেন, আবার কারো ক্ষেত্রে বিষয়টি রয়ে গেছে রহস্যাবৃত। আসুন, ফিরে দেখি ২০২৪ সালের শোবিজ অঙ্গনের সেই আলোচিত সম্পর্ক ভাঙার গল্পগুলো, যা বছরের আলোচনায় জায়গা করে নিয়েছে।
মাহি-রাকিবঃ ২০২৪ সালের শুরুতেই জাতীয় নির্বাচনের পরপরই বিচ্ছেদের ঘোষণা দেন ঢাকাই সিনেমার নায়িকা মাহিয়া মাহি। ২০১৬ সালে ভালোবেসে পারভেজ মাহমুদ অপুর সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন মাহি। বিয়ের পর সুখেই ছিলেন দুজনে। তবে সেই সুখ যেন তাঁর কপালে সইলো না। এই চিত্রনায়িকার সংসারে বেজে ওঠে বিচ্ছেদের সুর। ২০২১ সালের জুন মাসে দাম্পত্য জীবনের ইতি টানেন মাহি-অপু।
পরবর্তীতে ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে গাজীপুরের ব্যবসায়ী রাকিব সরকারের সঙ্গে সংসার পাতেন এই নায়িকা। ২০২৩ সালের ২৮ মার্চ তাদের কোলজুড়ে আসে পুত্রসন্তান ফারিশ। তবে মাহির এই সংসারও ভেঙে যায় চলতি বছর। ২০২৪ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিচ্ছেদের ঘোষণা দেন তারা।
সানিয়া-শোয়েবঃ চলতি বছরের প্রাক্কালে হঠাৎই সংবাদমাধ্যমে ফাঁস হয় ভারতীয় টেনিস তারকা সানিয়া মির্জা ও পাকিস্তানি ক্রিকেট তারকা শোয়েব মালিকের বিবাহবিচ্ছেদের খবর। যদিও প্রথমে অবশ্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিজের তৃতীয় বিয়ের খবর প্রকাশ করেন শোয়েব। তবে পরবর্তিতে ২০ জানুয়ারি পাকিস্তানি টেলিভিশনে অভিনেত্রী সানা জাভেদকে বিয়ের খবর প্রকাশ্যে আসার পরই নেটিজেনরা জানতে আগ্রহী হয়ে ওঠে সানিয়া ও শোয়েবের বিয়ের পরিণতি সম্পর্কে। আর তখনই সানিয়ার বোন আনাম মির্জা চলতি বছর ২১ জানুয়ারি ইনস্টাগ্রামে বিবৃতি দিয়ে জানান, শোয়েব আর সানিয়ার বিবাহবিচ্ছেদ কয়েক মাস আগেই হয়ে গেছে।
জেনিফার-বেন অ্যাফ্লেকঃ চলতি বছরেই বিচ্ছেদের পথে হেঁটেছেন মার্কিন অভিনেতা ও প্রযোজক বেন অ্যাফ্লেকের সঙ্গে গায়িকা জেনিফার লোপেজ। ২০০০ সালে এ জুটি প্রথম প্রেমের সম্পর্কে জড়ান। দীর্ঘ সময় প্রেমের পর ২০০২ সালে করেন আংটি বদল। কিন্তু হঠাৎই তাদের বিয়ে ভেঙে যায়। এরপর অন্য জীবনসঙ্গীকে সাথে নিয়ে জীবন কাটিয়ে দিতে শুরু করেন তারা। এভাবে তাদের বিচ্ছেদের ২০ বছর পার হওয়ার পর আবারও এ জুটি একে অন্যের প্রেমে পড়েন ২০২২ সালে।
আংটি বদল করে সে বছরই জুলাই মাসে ধুমধাম করে বিয়ে করেন। কিন্তু বিয়ের দুই বছর পেরোতেই জটিলতা শুরু হয় তাদের মাঝে। বেনের সঙ্গে আর্থিক বিরোধে কোনো আইনজীবী ছাড়া নিজেই আদালতে বিবাহ বিচ্ছেদের আবেদন করেন জেনিফার। ২০২৪ সালে জুলাই মাস থেকেই তারা আলাদা থাকতে শুরু করেন। এ বিবাহবিচ্ছেদ জেনিফারের জীবনে চতুর্থ এবং বেনের জীবনে দ্বিতীয় অভিজ্ঞতা।
এশা-ভরতঃ ২০১২ সালের জুন মাসে হিরে ব্যবসায়ী ভরত তখতানির সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধেন এশা। ২০১৭ সালে প্রথম সন্তান রাধ্যার জন্ম হয়। এর ঠিক দুবছর পর দ্বিতীয় সন্তান মীরার জন্ম হয়। তবে তাদের সুখের সংসারে হঠাৎই ভাঙনের সুর ওঠে চলতি বছর ৬ ফেব্রুয়ারি। ওইদিন একই সঙ্গে সোশ্যাল মিডিয়ায় বিচ্ছেদের ঘোষণা দেন তারা। বিচ্ছেদের কারণ প্রসঙ্গে ভরত কিছু না জানালেও সংবাদমাধ্যমে এশা জানান, শাশুড়ির অসংখ্য আদেশ, নিষেধ মেনে এতদিন সংসার করেছেন। তবে এবার তার আদেশ, নিষেধ চরমে পৌঁছায়, যে কারণে সংসার আর টিকিয়ে রাখতে পারেননি অভিনেত্রী।
পিঙ্কি-কাঞ্চনঃ ওপার বাংলার দর্শকপ্রিয় অভিনেতা কাঞ্চন মল্লিক। তার সঙ্গে পিঙ্কি বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিচ্ছেদ অনেক হলেও দীর্ঘ আইনি জটিলতা শেষ করে ১০ জানুয়ারি চূড়ান্ত বিবাহবিচ্ছেদের পথে হাঁটেন তারা। মূলত ২০২১ সালে কাঞ্চন-পিঙ্কির দাম্পত্য কহলের খবর প্রকাশ্যে আসে। পিঙ্কির অভিযোগ ছিল, অভিনেত্রী শ্রীময়ী চট্টরাজের সঙ্গে পরকীয়া রয়েছে কাঞ্চনের। এ অভিযোগকে সত্য প্রমাণ করে পিঙ্কির সঙ্গে আইনি বিচ্ছেদের পরই শ্রীময়ীকে বিয়ে করেন কাঞ্চন।
সংযুক্তা-দীপনঃ ঢাকাই সিনেমার নির্মাতা দীপঙ্কর দীপন ও সংযুক্তা মিশুরও বিবাহবিচ্ছেদ ঘটে এ বছর। মাত্র তিন মাস আগে নিজের বিবাহবিচ্ছেদের খবর প্রকাশ করে হঠাৎই ফেসবুকে নির্মাতা জানান, পারষ্পরিক সমঝোতা ও একে অপরের প্রতি সম্মান রেখে পরিবারের অনুমতিতে বিবাহবিচ্ছেদ করেছেন তিনি।
২০১৪ সালের ৩০ মে দীপন মানিকগঞ্জের মেয়ে সংযুক্তার সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। সংযুক্তা স্ট্যান্ডার্ড চাটার্ড ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা। এক নায়িকার ফেসবুক পোস্টকে কেন্দ্র করে দূরত্ব তৈরি হয় তাদের মধ্যে। এরপর থেকেই দীর্ঘদিন ধরে আলাদা বসবাস করছিলেন। চলতি বছর সে সম্পর্কের সম্পূর্ণ ইতি টানেন এ জুটি।
সায়রা- এ আর রহমানঃ বছরের একেবারে শেষদিকে ১৯ নভেম্বর হঠাৎই অস্কারজয়ী এ আর রহমান ও সায়রা বানু মিডিয়ায় প্রকাশ করেন তাদের বিবাহবিচ্ছেদের খবরটি। বলা চলে চলতি বছরের অন্যতম আলোচিত বিচ্ছেদ এটি। কেননা তাদের এই বিচ্ছেদের খবর এ আর রহমান ভক্তরা যেনো কিছুতেই মেনে নিটে পারছে না।
দীর্ঘ ২৯ বছরের দাম্পত্য ভেঙে যাওয়ার কারণ হিসেবে রহমান ও সায়রা সোশ্যাল মিডিয়ায় জানান, অগাধ প্রেমের অভাব নয়, মানসিক চাপ ও নিজেদের মধ্যে পারস্পরিক দূরত্ব তৈরি হওয়াতেই তারা হেঁটেছেন বিচ্ছেদের পথে।
এদিকে বিচ্ছেদের খবর একদিন যেতে না যেতেই সুরকারের সঙ্গে প্রেমের গুঞ্জনে নাম জড়ায় রহমানের দলের বেজিস্ট মোহিনী দে। এ প্রেমের গুঞ্জনকে মোহিনী, সায়রা ও রহমান তিনজনই মিথ্যা বলেছেন।
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর
যোগাযোগ: । [email protected] । বিজ্ঞাপন ও বার্তা সম্পাদক: 01894944220
ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।
© 2025 Sangbad Sarabela All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh