ছবি: সংগৃহীত।
বাংলাদেশের ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রিতে নিজের জায়গা তৈরি করছেন স্টাইল ডিরেক্টর ও মডেল গ্রুমার এডলফ খান।
এডলফ খান একাধারে ফ্যাশন ডিজাইনার, কোরিওগ্রাফার, মডেল ও মডেল-প্রশিক্ষক। তার যাত্রা শুরু হয় মডেল হিসেবে ২০০৭ সালে। বর্তমানে তিনি মডেলিং, গ্রুমিং ও স্টাইলিং-স্কুল পরিচালনায় সক্রিয়।
সংবাদ সারাবেলার সঙ্গে তার একান্ত কথপোকথন এর চম্বুক অংশ পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো:-
সংবাদ সারাবেলা: প্রথমেই আপনার কাছে জানতে চাইব আপনিতো একজন কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার। কিন্তু আপনার সীমানা ছেড়ে কিভাবে ফ্যাশন ডিজাইনকে বেছেস নিলেন?
এডলফ খান: আমি মূলত কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে পড়াশোনা করেছেন। এই পেশাটিকে আমি অনেক পছন্দ করি। তবে এই পেশায় আমার আগ্রহ কম ছিল। আমি একজন শিল্পসত্ত্বার মানুষ। আমি সবসময় শিল্পের বিষয়টিকে প্রাধান্য দিয়েছি। আমার পছন্দের তালিকায় রয়েছে গ্ল্যামার ওর্য়াল্ড, মিডিয়া, জনপ্রিয়তা। আমি ব্যতিক্রম হতে চেয়েছি। আমি চেয়েছি এডলফ খান একজন ব্র্যান্ড হয়ে পরিচিতি পাবে। আমি তাই হয়েছি। ১০টা -৫টার চাকরি বা অন্য কিছু যেমন ব্যবসা- এ ধরনের বিষয়গুলো আমার খুব একটা ভালো লাগে না। আমি যেটা চেয়েছি তাই হয়েছি। এ সবকিছু আমি ভালোবেসে করেছি। আল্লাহও আমাকে ভালোবেসে তাই দিয়েছে।
স.সা:আপনার নিজের ফ্যাশন হাউজ, মডেলিং স্কুল ও গ্রুমিং প্রোগ্রামের মূল উদ্দেশ্য কী?
এডলফ খান: আমার দুটি ফ্যাশন হাউজ আছে। একটা অটোগ্রাফ আরেকটি রয়েল রেওয়াজ। অটোগ্রাফে আছে ফ্যাশন্যাবল সব আউটফিট, পার্টি ড্রেস,সময় উপযোগী ট্রেন্ডে ফ্যাশন। রয়েল রেওয়াজে আছে সব ব্রাইডাল কালেকশন। বিয়ের যাবতীয় পোশাক।
আমার একটি গ্রুমিং স্কুল আছে। সেটির নাম এডলাফ খান গ্রুমিং স্টুডিও। এই টিমটি নিয়ে আমার অনেক পরিকল্পনা রয়েছে। যেহেতু আল্লাহ্র দোয়া ও ভক্তদের ভালোবাসায় আমার একটা অবস্থান আছে, পরিচিতি আছে। আমার মডেলিং স্কুল ও গ্রুমিং প্রোগ্রামগুলো নতুন প্রজন্মকে সুযোগ দিচ্ছে।
আমার ডিজাইন, কালেকশন ,কোরিওগ্রাফি, স্কুলের গ্রুমিং প্রত্যেকটা বিষয়কে আমি অনেক দূর এগিয়ে নিতে চাই। যেটা দেখে সবাই বলতে পারে এডলফ খান আমাদের অনেক ভালো ভালো কাজ উপহার দিয়েছেন। যাতে আমার কাজগুলো সর্বমহলে সমাদৃত হয়, মৃত্যুর পরেও আমি সবার কাছে সমানভাবে জনপ্রিয় হয়ে থাকতে পারি। এটাই আমার চাওয়া। আমার স্কুল, আমার শিক্ষার্থীদের এমন একটি জায়গায় নিয়ে যেতে চাই যেখান থেকে ওরা আমাকে রিপ্রেজন্ট করে। তেমনি আমার ডিজাইনগুলোকেও আমি এমনভাবে তৈরি করতে চাই, যাতে এগুলো যারা পরিধান করবে তারা ভালোবাসে আমাকে মনে রাখবেন। মিডিয়া ব্যক্তিত্ব যারা আমার ডিজাইন পরে তারা সবাই আমার কথা বলেন।
স.সা:আপনার ক্যারিয়ারে সবচেয়ে বড় শিক্ষা কী?
এডলফ খান: আমার ক্যারিয়ারের সবচেয়ে বড় শিক্ষা হলো-মানুষ। মানুষ কখনও চাই না কেউ ওপরে উঠুক, সফল হউক, নিজেকে অনেক দূর ছাড়িয়ে নিয়ে যাক। মানুষ সবসময় পেছনে কথা বলবে, তার কাজই হচ্ছে কেউ ওপরে উঠতে চাইলে তাকে পা ধরে টেনে নিচে নামানো। আমাদের সমাজব্যবস্থায় সমালোচনা করাটা বেশি লক্ষ্য করা যায়। বাইরের দেশে এই ধরণের মনোভাব কমই দেখা যায়।
আমাদের এখানে কিছু সংর্কীণতা আছে, বাধা আছে। আমরা চাইলেই সবকিছু করতে পারি না। আমাদের নিজেদের স্বাধীনতার ব্যাপারে কারো না কারো হস্তক্ষেপ থেকে যাই। তবুও আমাদের সবকিছু নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। নিজের কাজ নিজেকে করতে হবে ,কাজকে ভালোবাসতে হবে। যে কোন কাজে পরিশ্রম ও ভালোবাসা থাকলে তা থেকে সফলতা আসবেই।
নিজেকে মিডিয়া ব্যক্তিত্বে পরিণত করতে হলে পরিশ্রমের কোন বিকল্প নেই। কাজকে প্রচুর ভালোবাসতে হবে নিজেকে ভালোবাসতে হবে। দর্শক চাহিদা অনুযায়ী তাদের ফোকাস কোন বিষয়ে- সেগুলোকে নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে।এভাবেই কাজের সফলতা আসে। একবার নাম হয়ে গেলে আর পিছু ফিরে তাকাতে হয় না। শত্রু ও সমস্যা এগুলো থাকবেই। তারকা খ্যাতি পেতে হলে অনেক চড়াই উৎরাই থাকবে। এসবকিছু মেনে নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে।
স.সা: মানুষের সমালোচনা আপনি কিভাবে গ্রহণ করেন?
এডলফ খান: আমি এডলফ খান হতে চেয়েছি। আমি তা হয়ে দেখিয়েছি। আমার সফলতার পেছনে অনেক বির্তক ও সমালোচনা । মানুষ আমার সমালোচনা করতে করতে আমাকে সুপারহিট করে দিয়েছে। আমার একটা জায়গা তৈরি করে দিয়েছে। আমি এই মুহূর্তে সেই সফলতার সময় পার করছি। প্রচুর কাজের অফার, কাজের অনেক ডিমান্ড, অনেক অর্জন- সবকিছু মিলিয়ে একটি চমৎকার সময় পার করছি। আরও অনেক পথ যাওয়া বাকি আছে। যা পেয়েছি সেটাকে অনেক দূর নিয়ে যেতে চাই।
এখন অনেক কাজের অফার আসছে এবং সমালোচনা তো থাকবেই। তবে আমি এসবের পাত্তাই দিই না। আমার একমাত্র লক্ষ্য হলো নিজের কাজের প্রতি নিষ্ঠা বজায় রেখে দর্শককে ভালো কিছু উপহার দেওয়া।
স.সা: মিডিয়ার ব্যবহার আপনার ক্যারিয়ারে কীভাবে প্রভাব ফেলেছে?
এডলফ খান: মিডিয়ার প্রতি মানুষের আগ্রহ একেবারে অন্যরকম। কারো কাছে খুব ভালো আবার কারো কাছে ভালো নয়। কারো কারো দৃষ্টিভঙ্গি একেবারেই বদলানো যায় না। কিছু কিছু মানুষ সবাইকে ছোট করে দেখতে চাই। মিডিয়ার মানুষকে নিয়ে সমালোচনা করতে তাদের হেয় করে কথা বলতে অনেকে পছন্দ করেন। সবাই একি নয়। যারা পছন্দ করে, যারা গুনি মানুষ, যারা মানুষের গুণগুলোকে বোঝে তারা ব্যতিক্রম। তারা সবার সফলতাকে প্রশংসা করে।
আমরা যারা মিডিয়ায় কাজ করি, মিডিয়াকে ভালোবাসি বলে এখনও সবকিছু ছেড়েও এটিকে আকঁড়ে ধরে আছি। এটিকে নিজের জীবনের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে নিয়েছি। আমার কাছে মিডিয়া একটা ভালোবাসা, আর ভালোলাগার জায়গা। এই ভালোবাসা আমার আমৃত্যু থাকবে।
স.সা: সবশেষ আমাদের পাঠকদের জন্য আপনার পরামর্শ জানতে চাই?
এডলফ খান: এই সময় তিনি অনেকটাই নিজের ভিতরে হারিয়ে যান। একটু স্বাভাবিক হয়ে তিনি বলেন, প্রথমেই আমাদের দৃষ্টিভঙ্গিকে শাণিত করতে হবে। যেন দৃষ্টিভঙ্গি প্রমাণ করে যে, নিজের আবেগ এবং প্রতিভার প্রতি নিয়মিত নিষ্ঠা ও পরিশ্রমের মাধ্যমে আমরা আমাদের স্বতন্ত্র পরিচয় তৈরি করতে চাই।
এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ হলো নিজের কাজকে ভালোবাসা। কাজের প্রতি নিষ্ঠা এবং ভালোবাসা থাকলে সাফল্য আসবেই।
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর
যোগাযোগ: । [email protected] । বিজ্ঞাপন ও বার্তা সম্পাদক: 01894944220
ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।
© 2025 Sangbad Sarabela All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh
