ছবিঃ সংগৃহীত।
বর্তমানে শোবিজ অঙ্গনে তারকাদের মাদকের সঙ্গে জড়িত থাকা নিয়ে চলছে তুমুল তোলপাড়। এ নিয়ে মাদকাসক্ত মডেল, অভিনেতা-অভিনেত্রীসহ সংশ্লিষ্ট অনেকেই এখন উদ্বিগ্ন।
জানা
গেছে, শোবিজের অনেকেই শুধু মাদক সেবন নয়, মাদক কারবারেও জড়িত। ফলে মাদকসংশ্লিষ্টতার বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করা হতে পারে- এমন আতঙ্কে ভুগছেন তাদের অনেকেই। অন্যদিকে চাঞ্চল্যকর এ ঘটনায় নেতৃত্ব
দেওয়া কর্মকর্তাকে হঠাৎ করেই সরিয়ে দেওয়ায় নানা প্রশ্ন উঠেছে। কেউ কেউ বলছেন সন্দেহভাজন ব্যক্তিরা নানাভাবে তাদের প্রভাব খাটাচ্ছেন।
মাদকদ্রব্য
নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের (ডিএনসি) মহাপরিচালক (ডিজি) খোন্দকার মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে খতিয়ে দেখা হচ্ছে। যারা জড়িত তাদের আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে। সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের তলবের জন্য ব্যবস্থা নেবেন তদন্ত কর্মকর্তা।
মাদকসহ
গ্রেপ্তার হওয়া বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া এক ছাত্রকে জিজ্ঞাসাবাদের
সূত্র ধরে তথ্যপ্রমাণসহ সাফা কবির, মুমতাহিনা চৌধুরী টয়া, তানজিন তিশা এবং সুনিধি নায়েকের নাম বেরিয়ে আসে। একটি বিশেষ হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের মাধ্যমে তারা নিয়মিত মাদক সংগ্রহ করে আসছিলেন। ওই হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের
অ্যাডমিন নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী অরিন্দম রায় দীপকে এরই মধ্যে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ থেকে বেরিয়ে আসছে অনেক চাঞ্চল্যকর তথ্য।
অনেক
পরিচিত নায়ক, নায়িকা ও মডেল মাদক
সেবন এবং মাদক কারবারে জড়িত বলে জানা গেছে। ঘটনা প্রসঙ্গে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিএনসি ঢাকা মেট্রো উত্তরের সহকারী পরিচালক রাহুল সেন গণমাধ্যমকে বলেছেন, দীপকে গ্রেপ্তারের পর তার কাছ
থেকে আমরা কয়েকজন প্রথম সারির অভিনেত্রী ও মডেলের মাদক
সম্পৃক্ততার প্রমাণ পেয়েছি। এ বিষয়ে তদন্ত
চলছে। তদন্ত শেষে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ডিএনসিসহ
একাধিক সূত্র বলছে, গত ৪ ডিসেম্বর
এডি রাহুল সেনের নেতৃত্বে রমনা সার্কেলের একটি দল গুলশান ও
পল্টন এলাকায় অভিযান চালিয়ে ট্রেট্রাহাইড্রো ক্যানাবিনলযুক্ত কুশ, ক্যানাবিনলযুক্ত ক্যান্ডি, তরল ক্যানাবিনয়েড, ম্যাজিক মাশরুম, মাদক বিক্রয়ের অর্থসহ তিন মাদক কারবারিকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার কাজী মারুফুল ইসলাম রাজ (২৬) এবং ইসমাইল বেপারী (৩০) গুলশান এবং সাকিব নঈম (২৭) ধানমন্ডি এলাকার উচ্চবিত্ত পরিবারের সন্তান। তাদের কাছ থেকে অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য আদায় করা সম্ভব হয়েছে।
জানা
গেছে, গ্রেপ্তার হওয়া কাজী মারুফুল ইসলাম রাজ যুক্তরাজ্যে পড়াশোনা করেন। তিনি গুলশানের উচ্চবিত্ত পরিবারের সন্তান। তার কাছে শোবিজ অঙ্গনের অনেকের মাদক সম্পৃক্ততার খবর মেলে। তবে এর আগে ১৭
অক্টোবর ঢাকা বিমানবন্দরে গ্রেপ্তার হন অরিন্দম রায়
ওরফে দীপ (২৬)। এ
সময় তার কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ সিসা, এমডিএমএ, এলএসডি, কুসসহ বেশ কিছু মাদক উদ্ধার করা হয়। পরে নারকোটিক্সের একটি বিশেষায়িত টিম দীপকে দুই দিনের রিমান্ডে রেখে জিজ্ঞাসাবাদ করে। এ সময় দীপের
মোবাইল ফোনের কললিস্ট ও হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাটিং
পরীক্ষা করা হয়। এতে জনপ্রিয় কয়েকজন অভিনেত্রীর মাদক সম্পৃক্ততার তথ্য মেলে। এমনকি তাদের পক্ষ থেকে দেওয়া মাদকের অর্ডারসংক্রান্ত কয়েকটি সুনির্দিষ্ট হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাটিং রেকর্ডও পাওয়া যায়।
শোবিজ
অঙ্গনের সঙ্গে জড়িত একাধিক ব্যক্তির মত, শোবিজ তারকারা প্রথমে স্লিমিংয়ের জন্য ইয়াবাসহ বেশ কিছু বিদেশি মাদক নিয়ে থাকেন। একপর্যায়ে তারা আসক্ত হয়ে পড়েন। গত ১০ বছরে
মিডিয়া অঙ্গনে কাজ শুরু করেছেন, তাদের বেশির ভাগই মাদকে আসক্ত হয়ে পড়েছেন। তাদের নিয়মিত মাদক প্রয়োজন হয়। এদের আবার অনেকে অনেকটাই ওপেন সিক্রেট। তাদের বিভিন্ন সময় সোশ্যাল মিডিয়ায় ভিডিও ভাইরালও হয়েছে। তবু তারা নির্বিকার। জানা গেছে, বনানী মাঠের পার্শ্ববর্তী একটি রেস্টুরেন্ট, বনানী প্রেসক্রিপশন পয়েন্ট এর কাছাকাছি একটি
ভবনের রুফটপের সিসা বারে নিয়মিত মধ্যরাতে মাদক সেবন করেন শোবিজের অনেক অভিনেতা ও অভিনেত্রী। গুলশান
পিংক সিটির পেছনে একটি রেস্টুরেন্টেও নিয়মিত মাদক নেন অনেকে অভিনেতা-অভিনেত্রী। ডিএনসি এবং বিভিন্ন সংস্থার সদস্যরাও বিষয়টি অবগত। তবে রহস্যজনক কারণে তাদের নীরব থাকতে দেখা যায়।
এদিকে,
মাদক সম্পৃক্ততার অভিযোগের বিষয়ে এখনো কেউ কোন কথা বলেননি। শুধু টয়া গণমাধ্যমকে বলেন, আমার বিরুদ্ধে আসা অভিযোগ সত্য নয়। আমাকে এখনো মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর থেকে ডাকা হয়নি। আমি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল।
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর
যোগাযোগ: । [email protected] । বিজ্ঞাপন ও বার্তা সম্পাদক: 01894944220
ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।
© 2024 Sangbad Sarabela All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh