বিনোদন ডেস্ক: ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন, ভাষা আন্দোলন, শিক্ষা আন্দোলন, ছয় দফা, গণ–অভ্যুত্থান, মুক্তিযুদ্ধ, সামরিক শাসন, স্বৈরাচারী শাসন, যুদ্ধাপরাধের বিচারসহ নানা আন্দোলনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রয়েছে গৌরবময় অবদান। শিক্ষা ও গবেষণায়ও রয়েছে নানা রকম সাফল্য। বিশ্ববিদ্যালয়ের থিয়েটার অ্যান্ড পারফরম্যান্স স্টাডিজ বিভাগের মঞ্চায়নে ‘উদয়ের পথে এই আলোক তীর্থে’ নাটকে উঠে এসেছে সেসব। নাভেদ রহমানের নির্দেশনা ও পরিকল্পনায় শুক্রবার বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে মঞ্চস্থ হয় এ নাটক। তাতে অভিনয় করেন বিভাগের ৫৬ জন শিক্ষার্থী। এ নাটকের পাণ্ডুলিপি ও সূচনাসংগীত লিখেছেন শংকর কুমার বিশ্বাস। সমাপনী সংগীতসহ দুটি মৌলিক গান লিখেছেন বিভাগের শিক্ষক শাহমান মৈশান। সুর, সংগীত ও পোশাক পরিকল্পনা করেছেন কাজী তামান্না হক। কোরিওগ্রাফি করেছেন অমিত চৌধুরী, মহড়া ও আবহসংগীত তত্ত্বাবধান করেছে মনোহর চন্দ্র দাস।
এ আয়োজনের প্রধান সমন্বয়ক ও বিভাগের চেয়ারম্যান আশিকুর রহমান বলেন, মুক্তির সংগ্রামে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চিরকাল অগ্রণী। থিয়েটার অ্যান্ড পারফরম্যান্স স্টাডিজ বিভাগ জাতির ইতিহাস, রাজনীতি, উন্নয়ন ও মুক্তির কথা আমলে নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে প্রতিনিয়ত। এরই একটি ধারাবাহিক রূপ হলো এ বিশেষ নাটক। নাভেদ রহমান বলেন, ‘ভাষাভিত্তিক জাতীয়তাবাদে উজ্জীবিত হয়ে ৫০ বছর আগে বাংলাদেশ নামে যে রাষ্ট্রের জন্ম হয়, তার পেছনে দৃপ্ত ভূমিকা পালন করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবর্ষ এবং বাংলাদেশের অর্ধশতবর্ষ একই বৃন্তে মিলিত। এ মিলনকে শ্রদ্ধা জানাতেই আমাদের এ প্রচেষ্টা।’
উদয়ের পথে এই আলোক তীর্থে নাটকে নজরুলসংগীত, গণসংগীতসহ রাখা হয়েছে তিনটি মৌলিক গান। ব্যবহার করা হয়েছে নাকাড়া, ঢোল, খোল, কঙ্গো, বাঁশি, মন্দিরা, গং, কাহনের মতো সুর ও বাদ্যযন্ত্র। অমিত চৌধুরী বলেন, ঘটনাবহুল সেই সময়ের বেশ কিছু মুহূর্ত কোরিওগ্রাফির মাধ্যমে তুলে ধরা হয়েছে।
শতবর্ষ উদ্যাপনে বিশ্ববিদ্যালয়ের টেলিভিশন, ফিল্ম ও ফটোগ্রাফি বিভাগ তৈরি করেছে তথ্যচিত্র ‘ঢাকা ইউনিভার্সিটি: সেনটেনিয়াল ইলুমিনেশন’। শিবু কুমার শীল ও রবিউল আলমের পরিচালনায় এ তথ্যচিত্রেও আঁকা হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের কাব্যময় জয়যাত্রা। সংগীত, দৃশ্য ও ধারাবিবরণীতে উঠে এসেছে আধুনিক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছবি। নেপথ্য কণ্ঠ জানিয়েছে এর প্রতিষ্ঠা ও গৌরবময় সব অর্জনের ইতিহাস। অন্যতম নির্মাতা শিবু কুমার শীল বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়টির ইতিহাস এত দীর্ঘ আর বর্ণাঢ্য যে রূপক দিয়েও তা আমরা বোঝাতে পারব না। আমরা একটা মেটাফোরিক, নস্টালজিক জায়গা থেকে সেসব তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। শুটিংয়ের সময় করোনার কারণে মানুষ ছিল না। আমরা সেই নৈঃশব্দটাও ধরার চেষ্টা করেছি, যার মধ্য দিয়েও অনেক আলোড়ন ও ঘটনাকে তুলে ধরা হয়েছে। একটা সাউন্ড ডিজাইনের মাধ্যমে মধুর ক্যানটিনকে এমনভাবে তুলে ধরেছি, যেন এক্ষুনি কেউ এসে বসবে বা খানিক আগেই বসে ছিল। তথ্যভারে ভারাক্রান্ত না করেও একটা ডকুমেন্টারি করা যায় কি না, আমরা সেই চেষ্টা করেছি।’
এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগীত বিভাগের তত্ত্বাবধানে তৈরি হয়েছে শতবর্ষ উদ্যাপনী থিম সং। প্রতিযোগিতার মাধ্যমে বাছাই করা এর গীতিকবিতাটি লিখেছেন জি এম জাকির হোসেন, সুর পরিচালনা করেছেন ভারতের পুলক সরকার। সংগীত বিভাগের চেয়ারম্যান রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা, সৈয়দ আবদুল হাদী, ফাহিম হোসেন চৌধুরী, ফাহমিদা নবী, সামিনা চৌধুরী, রোকাইয়া হাসিন, শুভ্রদেবসহ বিভাগের শিক্ষক–শিক্ষার্থীরা একত্রে গেয়েছেন গানটি।
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর
যোগাযোগ: । [email protected] । বিজ্ঞাপন ও বার্তা সম্পাদক: 01894944220
ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।
© 2024 Sangbad Sarabela All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh