বাতিঘর থিয়েটারের একযুগ পূর্তি উপলক্ষে আজ ৮ জুন ও আগামীকাল ৯ জুন দুই দিনব্যাপী নাট্যোৎসবের আয়োজন করা হয়েছে। উৎসবে প্রদর্শিত হবে বাতিঘরের নতুন নাটক ‘ভগবান পালিয়ে গেছে’। নাটকটির রচনা ও নির্দেশনায় মুক্তনীল।
উৎসবের প্রথম দিন আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টায় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির পরীক্ষণ থিয়েটার হলে হতে যাচ্ছে নাটকটির উদ্বোধনী মঞ্চায়ন। নিয়মিত প্রদর্শনী ৯ জুন সন্ধ্যা ৭টায়, একই হলে।
প্রদর্শনীর টিকিট মূল্য ৫০০ টাকা, ৩০০ টাকা ও ২০০ টাকা।
নাটকের কাহিনী সংক্ষেপ
বিশ্বাস এক বিশাল বটবৃক্ষ। মাটির উপরে যেমন তার বিশালতা; মাটির নিচেও সে সমান বিস্তৃত। বিশ্বাসের উপর ভর করে মানুষ আশ্রয় খোঁজে, ভরসা চায়। মানব সৃষ্টির শুরু থেকেই লৌকিকতা এবং অলৌকিকতার দোলাচলে লৌকিকতার পরাজয় ঘটেছে। পূর্বপুরুষ থেকে প্রাপ্ত- আজন্ম লালিত অলৌকিকতার প্রতি মানুষের এক দুর্নিবার আকর্ষণ।
বিশ্বাস পুঁজি করে মানুষ এগিয়েছে সাফল্যের চূড়ায়। তেমনি তলিয়ে গেছে অতল অন্ধকার গহব্বরে। বিজ্ঞান যখন প্রত্যন্ত অঞ্চলে আলোর স্ফুরণ পৌঁছে দিয়েছে। তখনো বিশ্বাসীরা তাদের স্বীয়শক্তিতে অন্ধত্বের চরমে মুখ থুবড়ে পড়ছে। ধর্মবিশ্বাস এরমধ্যে দুর্দান্ত প্রতাপে এগিয়ে। যেহেতু মানুষের আশ্রয় প্রয়োজন, ধর্মের কাছে এসে তারা সেই আশ্রয় গ্রহণ করে। খেলার আরম্ভটা হয় সেখান থেকে।
শাস্ত্র অনুযায়ী ঈশ্বরের কোনো রূপ নেই, কিন্তু তার ইচ্ছে আছে। অর্থাৎ ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে বিষয়টিকে এভাবেও ব্যাখ্যা করা যায়, আপনার ভেতরে একটা সত্ত্বা আছে, যাকে আপনি দেখতে পান না। কিন্তু সে প্রতিনিয়ত আপনাকে দেখছে—আপনি খাচ্ছেন, কথা বলছেন, হাঁটাচলা করছেন, ইত্যাদি। এই সবকিছু করতে গিয়ে আপনি নিশ্চই অনুভব করেন যে আপনার গভীরে একজন ‘আমি’ বসবাস করে। আপনার বাহ্যিক আচরণের হয়তো অনেক কিছুর সাথেই রয়েছে সেই আমি’র দ্বন্দ। আপনি হয়তো রাগ করে কোন আজেবাজে কথা বলে ফেলেছেন, অথচ আপনার ভেতরের সেই আমি চাইছে না আপনি এই কথা বলুন। এই আচরণের জন্য পরবর্তীতে হয়তো আপনি অনুশোচনায় ভুগছেন।
ভেতরের সেই চরম অনুভূতিশীল মানবিক যে সত্ত্বা প্রতিমুহূর্তে আপনাকে দেখে যাচ্ছে তাঁকেই আমি (লেখক) বলছি ভগবান। যে চোখ দিয়ে দেখছে না, দেখছে বিবেক দিয়ে। বিবেকের কণ্ঠস্বরই হচ্ছে ভগবানের কণ্ঠস্বর। ‘ভগবান পালিয়ে গেছে’ আসলে আক্ষরিক অর্থে ভগবানের পলায়ন নয়। এটা আমার আমি’র পলায়ন। দিনে দিনে আমরা সবাই যাকে হারিয়ে ফেলছি। আমাদের সত্ত্বা, বিবেচনা, মানবিকতা সর্বোপরি আমাদের বিবেক।