১৯৭৪ সালের গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস অনুযায়ী লতা মঙ্গেশকর সবচেয়ে বেশি গানের গায়িকা হিসেবে ইতিহাসে নাম লিখিয়েছেন। ২০ ভাষায় ২৫ হাজার গানের তালিকায় রয়েছে একক, দ্বৈত ও কোরাস। সংগীত ক্যারিয়ারের সাত দশকে ধ্রুপদি থেকে রোমান্টিক, গজল, ভজন গানের প্রতিটি ধারায় তাঁর স্বচ্ছন্দ বিচরণ সুরেলা আবেশে আচ্ছন্ন করে রেখেছে সুর পানকারীদের। ১৯৪৮ থেকে ১৯৭৪ সালের মধ্যে এই গানগুলো গেয়েছেন লতা।
রেকর্ড বুকের পরের সংস্করণে (১৯৪৮ থেকে ১৯৮৭ সাল পর্যন্ত) গানের সংখ্যা উল্লেখ করা হয় ৩০ হাজারের কম নয়। বিস্ময়কর হলেও সত্য যে ১৯৯১ সালের হিসাব অনুযায়ী নাকি লতার হিন্দি ছবির গান খুঁজে পাওয়া যায় মাত্র ৫০৫২টি। গেয়েছিলেন মোট ৩৬টি ভাষায়। অন্য ভাষার গানের সংখ্যা আর গোনা যায়নি। এ বিষয়ে অবশ্য লতা বলেছিলেন, তিনি তাঁর রেকর্ডেড গানের হিসাব রাখেন না এবং তিনি এটাও জানেন না যে গিনেস বুকে তাঁর গানের তথ্য কোথা থেকে গেছে।
লতার গানের সংখ্যার হিসাব নিয়ে গরমিল হওয়াটাই স্বাভাবিক। বেহিসেবি অথচ সুপারডুপার হিট গান করে গেছেন লতা। হিসাবের খাতা থেকে এ জন্য তাঁর নামটাও সরে গেছে। লতা কখনো হিসাবে থাকছেন না কিন্তু গণনার বাইরে গিয়ে তিনি অগণন হৃদয়ে জায়গা করে নিয়েছেন, সেটা সব সময়ই অটুট থাকবে বলে মনে করেন সংগীতসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
২০১১ সালে অবশ্য গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস কর্তৃপক্ষ তাদের রেকর্ড সংস্করণ করে আশা ভোঁসলেকে সর্বোচ্চ গায়িকা হিসেবে। তাঁর গাওয়া গানের সংখ্যা ১১ হাজার। গিনেস বুকের বর্তমান (২০১৬ সাল পর্যন্ত) সর্বোচ্চ গাওয়ার রেকর্ড দক্ষিণ ভারতের গায়িকা সুশীলার। তিনি ১৭৬৯৫টি গান গেয়েছেন।
ভারতীয় বাংলা গানে তাঁকে বাংলাদেশের বাঙালিরা তো শুনেছেনই, দেশীয় ছবি ‘রক্তাক্ত বাংলা’য়ও পাওয়া গেছে লতার কণ্ঠ। ১৯৭২ সালের ছবিটিতে লতা গেয়েছিলেন ‘ও দাদা ভাই...’ শিরোনামের গান।
লতার গানের সংখ্যা যা-ই হোক, তাঁর কণ্ঠে এমন কিছু ব্যাপার রয়েছে যা সব ভাষাতেই একই ধরনের আবেদন তৈরি করে। যার ফলে প্রত্যেক ভাষাতেই লতার গানের মাধুর্য অনুভব করতে পেরেছেন শ্রোতারা। এ কারণেই ভাষার প্রতিবন্ধকতা পেরিয়ে দাপিয়ে বেড়িয়েছেন সুরে সুরে, বিভিন্ন ভাষায়।