কিছুদিন আগে আপাতত বৈশ্বিক কোন কনসার্টে গান না গাওয়ার কথা ঘোষণা দেয় বিটিএস। এসময় গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ে যে, ব্যান্ডটি বোধ হয় ভেঙ্গে যাচ্ছে। কিন্তু পরে জানা গেল, দক্ষিণ কোরিয়ার বাধ্যতামূলক সামরিক পরিষেবার জন্য আপাতত বিরতি নিয়েছে বিটিএস।
দক্ষিণ কোরিয়ায় সামরিক পরিষেবার আওতায় ১৮ থেকে ২৮ বছর বয়সী সমস্ত পুরুষদেরকে দেশরক্ষার প্রচেষ্টার অংশ হিসাবে প্রায় দুই বছর সেনাবাহিনীতে কাজ করতে হয়।
অবশ্য বছরের পর বছর ধরে পুরুষরা নির্দিষ্ট কিছু ক্ষেত্রে ছাড় পেয়েছে। তবে সেক্ষেত্রে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য পরিষেবা বন্ধ করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে বা কম পরিষেবা করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে অলিম্পিক বা এশিয়ান গেমসে পদক জয়ী পুরুষ এবং উচ্চ পুরষ্কার জেতা শাস্ত্রীয় সঙ্গীতশিল্পী এবং নৃত্যশিল্পীরা ।
২০১৯ সালের সংশোধিত আইনের আওতায় বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত কে-পপ তারকাদের ৩০ বছর বয়স পর্যন্ত তাদের পরিষেবা বন্ধ করার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। তবে দেশটির সংসদ এখন একটি নতুন সংশোধনী নিয়ে বিতর্ক করছে যা বিটিএস তারকাদের মাত্র তিন সপ্তাহের সামরিক প্রশিক্ষণের অনুমতি দেবে।
বিটিএস বিশেষ করে ব্যান্ডের সবচেয়ে বয়স্ক সদস্য জিনের জন্য দেশটির সংসদের এই আলোচনার ফলাফল হবে গুরুত্বপূর্ণ।
যদিও ব্যান্ডের ব্যবস্থাপনা কোম্পানি দীর্ঘদিন ধরে বলে আসছে যে, বিটিএস সদস্যরা তাদের দায়িত্ব পালনে আগ্রহী। তারা দুই বছরের পূর্ণ সামরিক সেবা দেওয়ার জন্য প্রস্তুত।
তথ্যমতে, জিনের বয়স এখন ২৯। এতদিন তিনি তার পরিষেবা বন্ধ রেখেছেন। ফলে এটা নিয়ে দক্ষিণ কোরিয়া জুড়ে ব্যাপক বিতর্ক হচ্ছে।
এ প্রসঙ্গে দেশটির সংসদ সদস্য ইউন সাং-হিউন বলেন, আসলে জিন এবং তার ব্যান্ড সঙ্গীদের পার্লামেন্টের সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য অপেক্ষা করা অত্যন্ত চাপের। তবু তারা পারফর্ম করা থেকে বিরতি নিচ্ছেন। বিটিএসের সদস্যরা ক্লান্তি এবং বিশ্রামের প্রয়োজনীয়তাকে তাদের বিরতির প্রধান কারণ হিসাবে উল্লেখ করেছেন। তবে আসল কারণটি ছিল, জিনের সামরিক পরিষেবা।
ইউন বলেন, বিটিএস বিশ্বজুড়ে দক্ষিণ কোরিয়ার ভাবমূর্তি যতটা কতটা উন্নীত করেছে তা তাদের সামরিক পরিষেবা বিবেচনা করার সময় আমাদের মাথায় রাখা উচিত। বিটিএস দেশের জন্য এমন একটি কাজ করেছে যা করতে ১,০০০ এরও বেশি কূটনীতিক লাগবে।
২০১৩ সালে আত্মপ্রকাশের পর থেকে বিটিএস বিশ্বব্যাপী তরুণদের কাছে আইকনে পরিনত হয়েছে।
বিটিএস গত বছর আমেরিকান মিউজিক অ্যাওয়ার্ডে বছরের ‘সেরা শিল্পী’ পুরস্কার জয় করে। ইতিহাসের প্রথম কোনো এশীয় ব্যান্ড এই কীর্তি গড়ে। তাছাড়া যুক্তরাষ্ট্র জুড়ে এশিয়ানদের প্রতি যে ঘৃণা বাড়ছে তা নিয়ে কথা বলতে হোয়াইট হাউসে যায় ব্যান্ডটি।