খুলনা প্রকৌশল
ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট) ৩৭ শিক্ষার্থীর সাময়িক বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার
করেছে কর্তৃপক্ষ। একইসঙ্গে খুলে দেওয়া হচ্ছে সাতটি আবাসিক হল।
আজ
(২৩ এপ্রিল) দুপুরে কুয়েটের ১০২তম জরুরি সিন্ডিকেট সভায় এসব সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মাছুদ।
এর আগে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনে এ সভা শুরু
হয়।
সিন্ডিকেট
সভায় আগামী ৪ মে থেকে
শিক্ষা কার্যক্রম পুনরায় শুরুর পূর্বঘোষিত সিদ্ধান্তও বহাল রাখা হয়েছে।
এর
আগে সকাল ১০টার দিকে ক্যাম্পাসে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন সরকারের শিক্ষা উপদেষ্টা সি. আর. আবরার। তবে আলোচনায় অংশ নিয়েও শিক্ষার্থীরা জানিয়ে দেন, উপাচার্যের পদত্যাগ বা অপসারণ না
হওয়া পর্যন্ত তারা আন্দোলন থেকে সরে আসবেন না।
আলোচনা
শেষে শিক্ষা উপদেষ্টা জানান, এই পরিস্থিতি পর্যালোচনার
জন্য বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। তিনি বলেন, “এই কমিটি যে
সুপারিশ করবে, তা আইনের আলোকে
দ্রুত বাস্তবায়ন করা হবে। একইসঙ্গে তিনি আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের অনশন কর্মসূচি থেকে সরে এসে ধৈর্য ধারণের আহ্বান জানান।
তবে
শিক্ষা উপদেষ্টা ক্যাম্পাস ত্যাগ করার পরপরই শিক্ষার্থীরা ফের বিক্ষোভে ফেটে পড়েন।
অন্যদিকে
দুপুরে ক্যাম্পাসে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে
কুয়েটের শিক্ষকরা জানান, ১৮ ফেব্রুয়ারির সংঘর্ষের
ঘটনায় প্রকৃত দোষীদের বিচার নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত
তারা ক্লাসে ফিরবেন না। দোষীদের শাস্তির দাবিতে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে তাদের ঐক্যমত থাকলেও আন্দোলনের ধরন নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেন শিক্ষকরা। তাদের ভাষায়, শিক্ষার্থীদের বোঝানোর চেষ্টা করা হলেও তারা আন্দোলন থেকে পিছু হটেনি, যা পরিকল্পিত বলেই
মনে করছেন শিক্ষকরা।
তারা
আরও জানান, উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিকে শিক্ষক সমাজ নিজেদের অপমান হিসেবেই দেখছেন এবং এই দাবি তারা
প্রত্যাখ্যান করেছেন।
প্রসঙ্গত,
গত ১৮ ফেব্রুয়ারি কুয়েট
শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বহিরাগতদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এর জেরে বিশ্ববিদ্যালয়ের
শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করা হয় এবং ৩৭
শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়। এরপর শিক্ষার্থীরা শিক্ষা কার্যক্রম শুরু, প্রকৃত দোষীদের শাস্তি ও উপাচার্যের অপসারণসহ
একাধিক দাবিতে আন্দোলনে নামেন।
সর্বশেষ
সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আগামী ৪ মে থেকে
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম পুনরায় শুরু হওয়ার কথা রয়েছে।