হাইকোর্টের দেওয়া প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটাসহ ৫৬ শতাংশ কোটা পুনর্বহালের আদেশের বিরুদ্ধে টানা দ্বিতীয় দিনের মতো চট্টগ্রাম-রাঙ্গামাটি ও খাগড়াছড়ি মহাসড়ক অবরোধ করেছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) শিক্ষার্থীরা। এতে সড়কে যানচলাচল বন্ধ হয়েছে যার কারণে ভোগান্তিতে পোহাতে হয়েছে সাধারণ মানুষদের।
বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) দুপুর ১টার দিকে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারের সামনে থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১নং গেট পর্যন্ত শোডাউন দেয়। এরপর চট্টগ্রাম-রাঙ্গামাটি ও খাগড়াছড়ি মহাসড়ক অবরোধ করে।এসময় যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
এসময় শিক্ষার্থীদের মহাসড়কে বসে স্লোগান দিতে দেখা যায় এবং শিক্ষার্থীদের হাতে ‘এ দেশের শিক্ষা ও চাকরি কারও বাপ-দাদার উত্তরাধিকার নয়!’, ‘কোটা প্রথা নিপাত যাক, মেধার বিকাশ জারি থাক’, ‘বাপ-দাদারা অস্ত্র ধরলে, কলম ধরতে ভয় কীসের বন্ধু?’, ‘বলো রাষ্ট্র তুমি কার? কোটার না মেধার?’ ইত্যাদি প্লেকার্ড দেখা যায়।
শিক্ষার্থীদের অবস্থানের কারণে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয় যারফলে সাধারণ জনগণ গাড়ি ছেড়ে হেঁটে গন্তব্যের দিকে যেতে থাকেন। তবে, অ্যাম্বুলেন্সকে নির্বিঘ্নে চলাচলের জন্য জায়গা করে দেন মানবিক শিক্ষার্থীরা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী শামীম বলেন,"সব ধরনের সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধাদের ৩০% কোটা দিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদেরকে অপমান করা হচ্ছে।কারণ,যারা বীরের মত যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছে তারা কেন সরকারের করুণা নিয়ে চাকরি করবে।আমরা চাই সংস্কার হোক এবং আমাদের দাবি না মানা পর্যন্ত আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাবো।"
আন্দোলনরত আরেক শিক্ষার্থী বলেন, স্বাধীন দেশের শিক্ষার্থীরা যখন বৈষম্যের শিকার হয়,তখন সেই স্বাধীনতা মূল স্বাধীনতার অর্থ বহন করে না,আমরা চাই কোঠা নামক এই বৈষম্য নিপাত যাক এবং মেধাবীদের মূল্যায়ন হোক।"
আন্দোলনকারীদের চার দফার দাবিগুলো হলো
১. ২০১৮ সালে ঘোষিত সরকারি চাকুরিতে কোটা পদ্ধতি বাতিল ও মেধাভিত্তিক নিয়োগের পরিপত্র বহাল রাখতে হবে।
২. ২০১৮ এর পরিপত্র বহাল সাপেক্ষে কমিশন গঠন করে দ্রুত সময়ের মধ্যে সরকারি চাকুরিতে (সকল গ্রেডে) অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাদ দিতে হবে এবং সংবিধান অনুযায়ী কেবল অনগ্রসর ও সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীর কথা বিবেচনা করা যেতে পারে।
৩. সরকারি চাকরির নিয়োগ পরীক্ষায় কোটা সুবিধা একাধিকবার ব্যবহার করা যাবে না এবং কোটায় যোগ্য প্রার্থী না পাওয়া গেলে শূন্য পদগুলোতে মেধা অনুযায়ী নিয়োগ দিতে হবে।
৪. দুর্নীতিমুক্ত, নিরপেক্ষ ও মেধাভিত্তিক আমলাতন্ত্র নিশ্চিত করতে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে।