ছবিঃ সংগৃহীত।
জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কোন রোডম্যাপ এখানো ঘোষণা হয়নি। কিন্তু রাজনৈতিক দলগুলো ভোট নিয়ে নানা হিসেব নিকেষ শুরু করেছে। বড় রাজনৈতিক দলগুলো ছোট ছোট রাজনৈতিক দলগুলোকে নিয়ে ভোটের জোট করার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে।
দৃশ্যমান হচ্ছে, ছোট ছোট দলগুলোকে ঘিরে বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপি'র পৃথক পৃথক বলয় তৈরির তৎপরতা। আজ শনিবার ঢাকার বনানীতে বিএনপির আহ্বানে বাম গণতান্ত্রিক জোটের দুটি দল সিপিবি-বাসদের শীর্ষ নেতারা। বৈঠকে আলোচনার মুল বিষয় ছিল নির্বাচন। বিএনপি ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের যে দাবি করছে, দলটি সেই দাবির প্রতি সিপিবি-বাসদের নেতাদের সমর্থন চেয়েছে। সিপিবি-বাসদের নেতারাও ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের পক্ষে রয়েছেন। বিএনপি ও ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের বাইরে স্বতন্ত্র বাম গণতান্ত্রিক জোটে রয়েছে সিপিবি ও বাসদ।
এবার জাতীয় নির্বাচনে বিএনপির সঙ্গে দল দুটোর বৈঠকে একটি রাজনৈতিক জোটে রূপ নিতে পারে, এমন আলোচনা শুরু হলেও সিপিবি-বাসদ অবশ্য সেটা নাকচ করে দিয়েছে। তবে বিএনপি এ মুহুর্তে কোনো জোট গঠনের কথা না বললেও ছোট দলগুলোকে তাদের পক্ষে রাখতে চাইছে। সেজন্য বিভিন্ন দলের সঙ্গে ধারাবাহিক বৈঠক করছে তারা। অন্যদিকে, জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে অন্যান্য ইসলামী দলের ঐক্য নিয়েও ভেতরে ভেতরে তৎপরতা চলছে।
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের নেতৃত্ব দেওয়া ছাত্রদের দল এনসিপিও বৈঠক করছে বিভিন্ন দলের সঙ্গে। এমন পরিস্থিতিতেও বিএনপি, জামায়াত এবং এনসিপি'র তৎপরতায় রাজনীতিতে স্পষ্ট হচ্ছে তিনটি বলয়। বাংলাদেশে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে যেসব রাজনৈতিক দল একসঙ্গে ভূমিকা রেখেছিলো, সেই দলগুলোর মধ্যে এখন বিভক্তি স্পষ্ট। নির্বাচন এবং সম্ভাব্য ক্ষমতার লড়াইয়ে বিএনপি এবং জামায়াতের মধ্যে দূরত্ব তৈরি হয়েছে। এনসিপিও রাজনীতিতে তৎপর হয়েছে নিজস্ব বক্তব্য নিয়ে। বিএনপি ছোট ছোট দলগুলোর সঙ্গে বৈঠক শুরু করেছে চলতি বছরের শুরুতে। প্রথম বৈঠক হয় খেলাফত মজলিসের সঙ্গে। এরপর আরেকটি দলের সঙ্গে বৈঠক হলেও পরে আর এ নিয়ে খুব একটা এগোয়নি দলটি। তবে কয়েকমাস পর আবারও তৎপর হয়েছে বিএনপি। মূলত: ডিসেম্বরে নির্বাচন আদায়ে প্রধান উপদেষ্টার কাছ থেকে সুনির্দিষ্ট আশ্বাস না পাওয়ার পরই বিএনপি ছোট দলগুলোর সঙ্গে আবার আলোচনা শুরু করেছে। যেটাকে অনেকেই বলছেন, একটি রাজনৈতিক জোট গঠনের উদ্যোগ। যদিও বিএনপি এখনই সেটা বলছে না। এটা কোন জোটের রূপ না। আমরা চাচ্ছি জনগনের কাছে যাওয়ার জন্য। নির্বাচন নিয়ে জনগনের যে দাবি, সেটা নিয়েই দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা হচ্ছে।
বিএনপির দলীয় সূত্রে জানা গেছে,বিএনপির ঐক্য প্রক্রিয়ায় আছে অতীতে যুগপৎ আন্দোলনে থাকা ১২ দলীয় জোট, জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট, গণতন্ত্র মঞ্চ, এলডিপি, লেবার পার্টি, গণঅধিকার পরিষদের মতো দলগুলো। এর বাইরেও বিভিন্ন দলকে কাছে টানার চেষ্টা করছে বিএনপি। প্রাথমিকভাবে এসব বৈঠক শেষে ডিসেম্বরে যেন নির্বাচন হয়, সেই দাবিতে প্রয়াজনে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের চিন্তা রয়েছে। কিন্তু সেটা কি জোটগতভাবে হবে নাকি আলাদা- এমন প্রশ্নে গণতন্ত্র মঞ্চের অন্যতম শীর্ষ নেতা ও বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন,জোটগত আন্দোলনের বিষয়টি এখনও নিশ্চিত নয়। তিনি বলেন, পরিস্থিতিই সব বলে দেবে। তবে আমরা আশা করি, আন্দোলনের মতো পরিস্থিতির উদ্ভব হবে না।"
এদিকে জামায়াত ইসলামী বলছে, ইসলামী দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা হলেও সেখানে নির্বাচন কবে হবে, সংস্কার কী হবে -এ ধরণের কোনও বিষয় নিয়ে তারা কাজ করছেন না। "জোট দুই ধরনের হয়। একটা হয় আন্দোলনের, আরেকটা হয় নির্বাচনের। আমরা নির্বাচনী জোট করতে চাই। ইসলামী দলগুলো সকলেই এটা বলছে যে, জাতীয় নির্বাচনে আমরা বিভিন্ন আসনে ইসলামী দলগুলো থেকে একক প্রার্থী রাখবো। ইসলামী দলগুলোর একাধিক প্রার্থী যেন না থাকে। এই আলোচনাই চলছে। সুতরাং এই জোট যখন হবে, সেটা নির্বাচন কেন্দ্রীক হবে। এদিকে জুলাই আন্দোলনের নেতৃত্ব দেওয়া এনসিপি বলছে তারা কোন জোটের দিকে ঝুকবে না। তবে গত রোববার এনসিপির নেতারা বৈঠক করেছে খেলাফত মজলিসের নেতাদের সঙ্গে। এর আগে হেফাজতে ইসলামের নেতাদের সাথেও বৈঠক করেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি।
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর
যোগাযোগ: । [email protected] । বিজ্ঞাপন ও বার্তা সম্পাদক: 01894944220
ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।
© 2025 Sangbad Sarabela All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh