× প্রচ্ছদ বাংলাদেশ বিশ্ব রাজনীতি খেলা বিনোদন বাণিজ্য লাইফ স্টাইল ভিডিও সকল বিভাগ
ছবি ভিডিও লাইভ লেখক আর্কাইভ

জুড়ীতে সবুজ মাল্টা চাষে সাফল্যের স্বপ্ন দেখছেন চাষীরা

খোর্শেদ আলম, জুড়ী (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি।

১৭ অক্টোবর ২০২৪, ১৪:১৮ পিএম । আপডেটঃ ১৭ অক্টোবর ২০২৪, ১৪:২০ পিএম

ছবিঃ সংগৃহীত

মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলায় সময়ের ব্যবধানে বেড়েছে মাল্টা চাষ। মাল্টার ফলন ভালো হওয়ায় চাষীরা ঝুঁকছেন এই ফল চাষে। সরকারি উদ্যোগের পাশাপাশি অনেকেই ব্যক্তি উদ্যোগে চাষ করছেন মাল্টা। আগে এক সময় কমলার দিকে ঝোঁক থাকলেও এখন অনেকেই মাল্টার বাগান গড়ে তুলছেন। প্রতিবছর বাড়ছে মাল্টা বাগানের সংখ্যা।

তেমনি একটি বাগান গড়ে তুলেছেন জাবের আহমদ। তার বাগানে ১২ শতাধিক মাল্টা গাছ রয়েছে। মাল্টার পাশাপাশি কিছু অংশে গড়ে তুলেছেন কমলার বাগান। তিন বছর আগে কৃষি বিভাগের পরামর্শে সাড়ে ৩ একর জায়গার উপর এই বাগান গড়ে তুলেছেন।

কৃষি বিভাগ জানায়, মাল্টা দেখতে সবুজ হলেও খেতে অত্যন্ত সু-স্বাদু ও মিষ্টি। বারি-১ জাতের এই মাল্টার উৎপাদন বাড়ছে মৌলভীবাজার জেলার জুড়ীতে। সম্ভাবনাময় এই ফসল চাষাবাদে তুলনামূলক খরচ কম থাকায় সহজে ফলন হয়। সে জন্য কৃষকরা ঝুঁকছেন এখন মাল্টা চাষে।কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, জুড়ী উপজেলায় ২৪ হেক্টর জমিতে মাল্টা বাগান গড়ে উঠেছে। গত বছর যা ছিল ২১ হেক্টর। উপজেলার সবকটি ইউনিয়নে কম বেশি হচ্ছে মাল্টার আবাদ। রয়েছে ছোট বড় শতাধিক বাগান। জুড়ী উপজেলার পূর্বজুড়ী, ফুলতলা, সাগরনাল ও গোয়ালবাড়ী ইউনিয়নে এর ফলন হচ্ছে বেশি। কেউ করেছেন সখের বসে চাষাবাদ আবার কেউ কেউ বাণিজ্যিক চিন্তাধারা নিয়ে।

এবছর জুড়ীতে মাল্টা উৎপাদনের লক্ষ্য মাত্রা ধরা হয়েছে ৭৭ টন। সরজমিনে পূর্ব জুড়ী ইউনিয়নের বিনন্দপুর গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, রাস্তার পাশে বড় বড় দুটি পাহাড়ে প্রায় ১২ শতাধিক মাল্টার গাছ দিয়ে তৈরি করেছেন বিশাল বাগান। মাত্র ৩ বছর পূর্বে প্রায় সাড়ে ৩ একর জমিতে মাল্টা চাষ শুরু করেন জাবের আহমদ। গাছ রোপণের পরের বছর থেকে ফল পাওয়া শুরু হয়। গতবছর থেকে তিনি এই বাগান থেকে মাল্টা পাচ্ছেন। মাল্টার পাশাপাশি তার একই টিলা ভূমিতে রয়েছে কমলা ও জারালেবু। এবং পাশের জমিতে রয়েছে মাছের ঘের, হাঁস-মুরগি ও গরু ছাগলের খামার। কিছুটা সরকারি হলেও বাকি সম্পূর্ণ করেছেন ব্যক্তিগত উদ্যোগে। বাগানের নিয়মিত পরিচর্চা করা রমজান আলী বলেন, এবছর ফলন অনেক ভালো হয়েছে। গাছের চেয়ে ফল বেশি হওয়ায় ফুল থাকতেই মেডিসিন দিয়ে ঝরানো হয়েছে। অতিরিক্ত ফল হলে গাছ দূর্বল হয়ে যায়। তাই কৃষি অফিসারের পরামর্শে এই কাজ করা হয়। আগামী বছর থেকে গাছে যে ফল আসবে সবগুলো রাখা যাবে। তিনি বলেন, বাজারে যে মাল্টা পাওয়া যায় তার চেয়ে এই ফলগুলো বেশি মিষ্টি। সাইজেও এই মাল্টাগুলো বড় হয়। ৬ থেকে ৭টি মাল্টায় কেজি হয়। বাজারে মাল্টা কেজি বিক্রি হয় সাড়ে ৩শত টাকা করে। আর আমরা বিক্রি করি ২শত টাকা করে।

জুড়ীর বর্তমান সময়ের সবচেয়ে বড় মাল্টা বাগানের মালিক জাবের আহমদ বলেন, পূর্বজুড়ী ইউনিয়নের উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা সুরঞ্জিত ধর রনি এর পরামর্শে আমি মাল্টা বাগান শুরু করি। সরকার থেকে সার সহ সকল ধরণের সহযোগীতা পেয়েছি। কৃষি অফিসের কর্মকর্তাগণ নিয়মিত বাগান দেখেছেন এবং পরামর্শ দিয়েছেন। এবছর মাল্টার ফলন ভালো হয়েছে। গাছ ছোট থাকায় ভারসাম্য রক্ষার জন্য কিছু গাছের মাল্টা আমরা গাছ থেকে ছাটাই করেছি কৃষি অফিসারের পরামের্শ। আশাকরি আগামী বছর আমাদের মাল্টার বাম্পার ফলন হবে। তিনি বলেন, আমাদের বাগানে সরকার থেকে প্রদর্শনীসহ নিজ খরছে ১২০০শত মাল্টা গাছ, ৪শত কমলা গাছ সহ লেবু জাতীয় বিভিন্ন প্রজাতির ফলের গাছ লাগানো হয়েছে। প্রায় সাড়ে ৩ একর জায়গার উপর আমাদের মাল্টা বাগান। প্রতিনিয়ত ২জন লোক আমাদের বাগানে কাজ করে।

উপজেলার ফুলতলা ইউনিয়নের কোনাগাও গ্রামের ওয়ারিছ আলী ৩ বছর আগে ৩০ শতক জায়গার উপর গড়ে তুলেন মাল্টা বাগান। গত বছর ফল আসলেও তেমন ভালো হয়নি। এ তুলনায় এবার প্রত্যেক গাছে বারি-১ জাতের মাল্টায় স্বপ্ন দেখছেন তিনি। ফলন ভালো হওয়ায় নিজের চাহিদা মিটিয়ে বাজারে বিক্রি করছেন এসব মাল্টা। সুস্বাদু এই মাল্টার প্রতি আগ্রহ মানুষের। যার জন্য বিক্রি হয়ে যাচ্ছে খুব সহজেই। ওয়ারিছ আলী জানান, সরকারি ভাবে জুড়ী উপজেলা থেকে ৩০ শতাংশ যায়গায় প্রায় ৬০ টি গাছের একটি প্রদর্শনী পান তিনি। গাছের বয়স এখন ৩ বছর হয়েছে। এই বছর প্রতিটি গাছে প্রায় ১৫০- ২০০ টি করে ফল এসেছে। ছোট ছোট গাছের ফল দেখে অনেকের উৎসাহ বেড়েছে মাল্টার প্রতি। কেউ কেউ উদ্যোগ নিয়েছেন আগামীতে মাল্টা চাষে মনযোগ দিবেন।

জুড়ী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো: মাহমুদুল আলম খাঁন সংবাদ সারাবেলাকে বলেন, লেবু জাতীয় ফসলের উৎপাদন বাড়াতে কৃষি বিভাগ কাজ করে যাচ্ছে। কৃষি অফিসের পরামর্শে মাল্টা চাষে ঝুঁকছে কৃষকরা। শুকনো মৌসুমে মাল্টার উৎপাদন বাড়াতে গাছের পরিচর্চায় আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার করা হবে। এই প্রযুক্তিতে পানি ও সার একসাথে দেওয়া যাবে ড্রিপ ইরিগেশনের মাধ্যমে। তিনি বলেন, যারা মাল্টা চাষ করেছে তাদের ফলন ভালো হয়েছে। এবছর নতুন মাল্টা চাষী ৪৫ জন বেড়েছেন। অফিস থেকে প্রদর্শনী প্রাপ্ত কৃষকদের ৬ রকমের সার, কীটনাশক, ছত্রাক নাশক, সিকেচার, স্প্রে মেশিন এবং মাটি পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এছাড়াও শুকনো মৌসুমের জন্য মালচিং পেপার বিতরণ করা হয়েছে।

Sangbad Sarabela

সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর

যোগাযোগ: । [email protected] । বিজ্ঞাপন ও বার্তা সম্পাদক: 01894944220

ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।

আমাদের সঙ্গে থাকুন

© 2024 Sangbad Sarabela All Rights Reserved.