নরসিংদী সদর উপজেলার বীরপুর এলাকার মকবুল হোসেনের ছেলে দশম শ্রেণির ছাত্র মো. আবদুল্লাহ মাত্র ১০ হাজার টাকা পুঁজিতে বাড়ির ছাদে মাশরুম চাষ শুরু করেন। ছয় মাস যেতে না যেতেই প্রতিমাসে আয় করছেন ৩০ হাজার টাকা। বর্তমানে তার বিনিয়োগ দুই লাখ টাকা। আবদুল্লাহ নরসিংদী আইডিয়াল স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্র। তার মাশরুম বাগানের নাম ফিউচার মাশরুম সেন্টার।
জানা যায়, চলতি বছরের এপ্রিল মাসে স্কুল বন্ধ থাকার সময় বাসায় বেকার বসে না থেকে নতুন কিছু শেখার এবং নতুন কিছু করার প্রত্যয়ে আবদুল্লাহ অনলাইনে মাশরুম সম্পর্কে ঘাঁটাঘাঁটি করে। একপর্যায়ে সাভার মাশরুম উন্নয়ন ইসস্টিটিউট থেকে ছয় হাজার টাকার বিনিময়ে একটি অনলাইন কোর্স করে। সেখান থেকে প্রাথমিক ধারণা নিয়ে জুন মাসের দিকে মাত্র ১০ হাজার টাকা পুঁজি নিয়ে বাড়ির ছাদে মাশরুম চাষ শুরু করে। প্রথমে কোনো রকমে পুঁজি উঠলেও গত দুই মাস ধরে গড়ে ৩০ হাজার টাকা আয় হচ্ছে তার।
তিন তলা বাড়ির ছাদের এক পাশে টিনের শেড। শেডের নিচে পাটের রশির শিকা। শিকায় ঝুলছে মাশরুমের বীজপত্র। খড় দিয়ে বিশেষ পদ্ধতিতে বানানো এই বীজপত্রের চারপাশ দিয়ে রয়েছে ছোট বড় মাশরুম।
আবদুল্লাহ বলেন, বাবার কাছ থেকে মাত্র ১০ হাজার টাকা নিয়ে কাজ শুরু করেছিলাম। গত ছয় মাস কাজ করেছি। তিন মাস লাগে একটা বীজপত্র বা মাইসিলিয়াম শেষ হতে। প্রতিটি মাইসিলিয়াম থেকে দেড় কেজি মাশরুম আসে। প্রতি কেজি মাশরুম বিক্রি হয় ২৫০ টাকায়। এখন আমার পুঁজি আছে দুই লাখ টাকা। প্রতি মাসে ৫০ হাজার টাকার বেশি বিক্রি হয়। সব খরচা বাদ দিয়ে প্রতিমাসে গড়ে আমার ৩০ হাজার টাকা লাভ হয়। আমার এখানে শুধুমাত্র ‘ওয়েস্ট্রা পি ও ২’ জাতের মাশরুম আছে।
আবদুল্লাহ বলেন, বিভিন্ন ফেসবুক পেজ ও গ্রুপের মাধ্যমে বিক্রি করি। অনলাইনে অর্ডার নেই, কুরিয়ার করি। আবার অনেকে এসে বাড়ি থেকেই নিয়ে যায়। বেশিরভাগ মাশরুম যায় রেস্টুরেন্টগুলোতে। নরসিংদীতে মাশরুম বাজারজাতকরণ ও মাশরুম চাষিদের প্রশিক্ষণের কোনো সেন্টার দেখিনি।
আবদুল্লাহর বাবা মকবুল হোসেন বলেন, ছেলের এ রকম কাজে আমি খুব খুশি। অবসরে বসে না থেকে উৎপাদনমুখী কাজ করছে, এটাই অনেক।
নরসিংদী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা মাহবুবুর রশীদ বলেন, আঞ্চলিকভাবে নরসিংদীতে যারা মাশরুম চাষ করে সহজভাবে বাজারজাতকরণের লক্ষ্যে তাদেরকে বিভিন্ন চাইনিজ রেস্টুরেন্টের সঙ্গে যোগাযোগ করিয়ে দেই।