মোটরসাইকেল নারীদের
জন্য সবচেয়ে নিরাপদ একটি যানবাহন হিসেবে পরচিত। নেই কোনো হুরোহুরি, নেই কোনো ধাক্কাধাক্কি।
বরাবরই মোটরসাইকেলে স্বাচ্ছন্দ বোধ করেন নারীরা। তবে কুমিল্লার নারীরা মোটরসাইকেলে
চড়তে নয় চালাতে বেশি পছন্দ করেন।
জেলায় নারীদের মধ্যে
মোটরসাইকেল চালানোর বিষয়ে বেড়েছ আগ্রহ। সামাজিক সংকীর্ণতা পারি দিয়ে এগিয়ে যাচ্ছেন
তারা উদ্যম গতিতে।
জেলার সড়ক-মহাসড়কগুলোতে প্রায়ই স্কুটি ও মোটরসাইকেল চালাতে দেখা যাচ্ছে নানা বয়সী নারীদের। পারিবারিক ও পেশাগত প্রয়োজনেই মোটরসাইকেল নিয়ে ছুটছেন তারা।
নজরকাঁড়া জামা কিংবা শাড়ি আর মাথায় হেলমেট পড়ে নানা রঙের স্কুটার নিয়ে শুক্রবার ছুটির দিনে কুমিল্লা শহর ঘুরতে বেরিয়েছেন একদল নারী। পেশাদার বাইকারদের মতই পরিবারের সদস্য আর বন্ধুদের নিয়ে নগরীর এই প্রান্ত থেকে ওই প্রান্তে ছুটেছেন তারা। এই দলে আছেন নানা বয়সী, নানা শ্রেণি-পেশার নারী।
নেত্রকোনা থেকে কুমিল্লায় পড়তে আসা ভিক্টোরিয়া নার্সিং কলেজের শিক্ষার্থী পুতুল আক্তার ডলি জানান, খুব সকালে ক্লাস থাকায় তিনি স্কুটি চালিয়ে সহজেই এবং নিরাপদে কলেজে আসতে পারছেন। শুধুমাত্র মনের সাহস ও ইচ্ছাশক্তি থাকার ফলেই তার এ কাজটি সহজ হয়েছে। নগরীর যানজট এড়িয়ে সময় বাঁচানোর জন্যই স্কুটারের ব্যবহার জনপ্রিয় হচ্ছে বলেও তিনি জানান।
স্কুটার ব্যবহারকারী আরও কয়েকজন জানান, সব বাইকারদেরেই উচিত ট্রাফিক আইন মেনে চলা, অবশ্যই সকলের ড্রাইভিং লাইসেন্স থাকা উচিত।
শুধু নারী মোটরসাইকেল চালক নয়, কুমিল্লায় নারী মোটরসাইকেল চালনায় প্রশিক্ষক রয়েছেন। উৎসাহী-আগ্রহীদের নিয়ে বাইক চালানোর নিয়ম কানুন- ট্রাফিক আইন ও সেফটি বাইকিং প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন লেডি ট্রেইনাররা।
স্কুটার ট্রেইনিং সেন্টারের প্রশিক্ষক স্বপ্নীল সুলতানা জানান, মূলত শখের বশেই তিনি বাইক চালানো শুরু করেছিলেন। এরপর এ বাইক চালানোকেই পেশা হিসেবে গ্রহণ করেন তিনি। নারীদের জন্য কোনও ট্রেনিং সেন্টার না থাকায় তিনি ট্রেনিং এর ব্যবস্থা করেছেন। যেখান থেকে ট্রেনিং নিয়ে অনেক নারীই এখন বাইক চালানোকে পেশা হিসেবে গ্রহণ করে নিজের এবং পরিবারের খরচ মেটাচ্ছেন।
তবে মোটর বাইক কিংবা স্কুটার নিয়ে রাস্তায় বের হলে এখনো মাঝে মাঝে নারীদের শুনতে হয় কটুক্তি। তাদের প্রত্যাশা- বাইকিং এবং রাইডিংয়ে সবার সহযোগিতায় নিরাপদ ও সহজ হবে নারীদের এই পথচলা।
কুমিল্লা জেলা ট্রাফিক ইন্সপেক্টর এমদাদুল হক বলেন, সবাইকে আইন মেনে বাইক বা স্কুটার চালাতে হবে। সবাইকে অবশ্যই ট্রাফিক আইন ও লাইসেন্সের বিষয়ে সচেতন হতে হবে। আইন নারী-পুরুষ বোঝে না। তবে ছেলেদরে তুলনায় মেয়ে হেলমেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা বেশি। আর নারী বাইকাররা কোন সমস্যার সম্মুখীন হলে তাদেরকে সহযোগিতার সর্বোচ্চ চেষ্টা করব।