× প্রচ্ছদ বাংলাদেশ বিশ্ব রাজনীতি খেলা বিনোদন বাণিজ্য লাইফ স্টাইল ভিডিও সকল বিভাগ
ছবি ভিডিও লাইভ লেখক আর্কাইভ

নার্সারিতে অনুর সাফল্য ও হতাশা

ডিমলা (নীলফামারী) প্রতিনিধি

২১ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ০৪:৩৩ এএম

নার্সারি ব্যবসা করে নিজের ও পরিবারের ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটিয়েছেন নীলফামারীর ডিমলা  উপজেলার পন্ডিত পাড়া গ্রামের মৃত রামানন্দ রায় ছেলে অনুকূল রায় অনু (৬৫)। সফল উদ্যোক্তা হিসেবে সবার পরিচিত মুখ তিনি। একসময়ে অর্থকষ্টের মধ্য দিয়ে জীবন যাপন করলেও এখন স্ত্রী ও ছেলেমেয়ে নিয়ে সচ্ছলভাবে জীবন যাপন করছেন। গত  ৩০ বছর ধরে নিজের হাতে গাছের চারা তৈরি ও ফুল চাষ করে সরবরাহ করছেন ডিমলা উপজেলাসহ বিভিন্ন জেলায়।

জানা গেছে, এক সময় দিনমজুরি করে জীবিকা চালাতেন অনুকূল (৬৫)।বেসরকারি সংস্থা আরডিআরএস এর পরামর্শে নার্সারি করেন তিনি। নার্সারির যত্ন ও পরিচর্যা এবং কলম করা বিষয়ে ধারণা নেন আরডিআরএস থেকেই ।এরপর এনজিও থেকে ৬ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে নিজ বাড়ির পাশে ৩০ শতাংশ জমিতে শুরু করেন ফুলের চাষ ও নার্সারি।

শুরুতে লাভের মুখ না দেখলেও ধৈর্য্য আর পরিশ্রম তাকে এনে দেয় সফলতা।বাড়তে থাকে গাছের চারা ও ফুলের চাহিদা।সফল হওয়ায় পরবর্তীতে অন্যের ৩০ শতাংশ জমি লিজ নিয়ে মোট ৯০ শতাংশসহ জমির উপর গড়ে তোলেন "ভাই ভাই ধন নার্সারি"।প্রতি বছর গড়ে ১০ লক্ষ টাকার ফুল,বিভিন্ন ফলজ ও বনজ গাছের চারা বিক্রি করেন অনু। বর্তমানে তার নার্সারিতে সারা বছরই চারজন শ্রমিকের কর্মসংস্থান হয়েছে। ফুলের মধ্যে গাঁদা, গোলাপ, রজনীগন্ধা, চায়না টগর, হাছনাহেনা, বকুল, কৃষ্ণচুড়া, বেলি, গন্ধরাজ, জবা, পাতাবাহার, ঝাউ গাছসহ প্রায় শতাধিক প্রজাতির চারা রয়েছে।

এছাড়া বিভিন্ন জাতের বনজ ঔষধি চারা ছাড়াও দেশি-বিদেশি জাতের নারিকেল,সুপারি, আম, জাম, কাঠাল, পেয়ারা, বেদানা, কমলা, আমড়া, শরুফা, লেবু, জাম্বুরা, সফেদা, মাল্টা, বড়ই, কামরাঙ্গা, মিষ্টি তেতুল, চালতা, লিচু, বেল, লটকনসহ প্রায় দেড়'শ জাতের চারা রয়েছে।দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে চারা কিনে নিয়ে যান অনেকে। অনু জানান, বসন্ত ও ভালোবাসা দিবস উপলক্ষে গত সপ্তাহে ৫০ হাজার টাকার ফুল বিক্রি হয়েছে। বিভিন্ন দিবস আসলে ফুলের চাহিদা বেশি থাকায় দামও বেশি পাওয়া যায়। এছাড়া বাগানে যে পরিমাণ ফুল আছে আরো প্রায় ৫০ হাজার টাকার মতো বিক্রি হবে। ভালোবাসা দিবস ছাড়াও বসন্ত বরণ, একুশে ফেব্রুয়ারি, ২৬ মার্চ, ১৬ ডিসেম্বর ও বিভিন্ন অনুষ্ঠানসহ সারা বছরই ফুলের কদর রয়েছে।

ফুল ও চারা বিক্রিতে কোনো সমস্যা হয় না। তার বাগান থেকে রংপুর, বগুড়া,নীলফামারী ও রাজশাহীসহ বিভিন্ন জেলায় ফুল ও চারা সরবরাহ করা হয় বলে তিনি জানান। তবে নার্সারি করতে সহযোগিতা না পাওয়ার আক্ষেপ রয়েছে তার। করোনাকালে সরকারের প্রণোদনাসহ পাননি ব্যাংকঋণ বা অন্যকোনো সহযোগিতা।করোনা মহামারী সংকট অনেকটাই পথে বসিয়েছে কঠোর পরিশ্রমী এ উদ্যোক্তাকে।

অনুকূল জানান,করোনায় সবকিছু বন্ধ থাকায় গত দুই বছরে প্রায় ১০ লক্ষ টাকা লোকসান গুনতে হয়েছে। তবু হাল ছাড়েননি। প্রনোদনা বা ব্যাংকঋণ না মিললেও বিভিন্ন এনজিও থেকে চড়া সুদে ঋণ নিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা শহীদুল ইসলাম বলেন, বিভিন্ন এলাকায় যারা নার্সারি করেছেন, তাদের নার্সারি নিয়মিত পরিদর্শন করা হচ্ছে। বৃক্ষমেলায় তাদের চারা গাছ বিক্রি করারও সুযোগ রয়েছে। পোঁকামাকড়ের আক্রমণ থেকে মুক্তির জন্য পরমার্শ দিচ্ছি। উপজেলা নির্বার্হী কর্মকর্তা বেলায়েত হোসেন জানান, এ ধরনের উদ্যোক্তারা যাতে করে ব্যবসায়ী হিসেবে টিকে থাকতে পারেন এবং দেশের বনায়নে ভূমিকা রাখতে পারেন সে জন্য প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করা হবে।

Sangbad Sarabela

সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর

যোগাযোগ: । [email protected] । বিজ্ঞাপন ও বার্তা সম্পাদক: 01894944220

ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।

আমাদের সঙ্গে থাকুন

© 2024 Sangbad Sarabela All Rights Reserved.