× প্রচ্ছদ বাংলাদেশ বিশ্ব রাজনীতি খেলা বিনোদন বাণিজ্য লাইফ স্টাইল ভিডিও সকল বিভাগ
ছবি ভিডিও লাইভ লেখক আর্কাইভ

নাটোরে বারি-১৮ সরিষার অভিষেক

নাটোর প্রতিনিধি

১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ০০:৪৩ এএম

উচ্চ ফলনশীল এবং স্বাস্থ্যকর তেলের উৎস হিসেবে বারি-১৮ জাতের সরিষা চাষের অভিষেক হয়েছে নাটোরে। বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইন্সটিটিউট উদ্ভাবিত এ সরিষা চাষ করে সফল হয়েছেন কৃষি উদ্যোক্তা আরিফুল ইসলাম।

বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইন্সটিটিউট এর গবেষণায় বলা হয়েছে, বারি-১৮ বিঘাপ্রতি ফলন সাড়ে আট মণ। তাই প্রচলিত সরিষার চেয়ে তেলের পরিমাণ বৃদ্ধি পায় অন্তত দুই শতাংশ। প্রচলিত সরিষার ইউরেসিক এসিডের হার আড়াই শতাংশের উপরে থাকায় অনেকে ভোজ্যতেল হিসেবে সরিষাকে পরিহার করেন। কিন্তু বারি-১৮ জাতের সরিষার তেলে ইউরেসিক এসিডের হার পয়েন্ট পাঁচ শতাংশের নীচে। এ কারণে এ তেল স্বাস্থ্যসম্মত। ফ্যাটি এসিডের হার কম থাকায় হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপের জন্যে মোটেই ক্ষতিকর নয়। এ সািরষা  জাতকে সম্প্রসারিত করতে পারলে দেশে উপকারী ভোজ্যতেলের অপার সম্ভাবনাময় ক্ষেত্র তৈরী হবে। তেল আমদানীতে বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয়ের ক্ষেত্র হবে সংকুচিত।

সরিষাকে বলা হয় সুযোগ সন্ধানী শস্য। কখনো বা বলা হয়, দুই মৌসুমের ধান চাষের মেলবন্ধন রচনাকারী শস্য। আমন ধানের জমিতে ধান কাটার দুই সপ্তাহ আগে জমিতে সরিষার দানা ছিটিয়ে দেওয়া হয়। ধান কাটতে কাটতেই অংকুরোদগম হয় সরিষা বীজের। সরিষার জীবনচক্রে সময়ের সর্বোত্তম সদ্ব্যবহার করা যায়। ১১০ দিনের মাথায় সরিষা ঘরে ওঠে। এরপর এ জমিতে আবাদ হয় বোরো ধান। অনায়াসলব্ধ এ শস্যের উৎপাদন খরচ খুবই কম। সরিষা আবাদে জমি চাষের প্রয়োজন হয়না। প্রয়োজন হয়না তেমন কোন সেচ। আগাছা থাকে কম থাকায় নিড়ানীর প্রয়োজন নেই। সারের ব্যবহারও কম।

নাটোর সদর উপজেলার দিয়াড়সাতুরিয়া গ্রামের বিস্তৃর্ণ আবাদি জমি এখন যেন হলুদের আবরণে ঢাকা। একই প্লটে সাড়ে সাত বিঘা জমিতে বারি-১৮ জাতের সরিষা আবাদ করেছেন আরিফুল। পাশেই বারি-১৪ জাতের আরো একটি আবাদি জমির প্লট। সরিষা ফুলের সুবাস আর মৌমাছির গুঞ্জনে মুখর চারিদিক। হলুদের সমারোহ আর মৌমাছির ব্যাপক উপস্থিতিতে সফল পরাগায়ন জানান দিচ্ছে, ফলন হবে সমৃদ্ধ।  

সম্প্রতি সমৃদ্ধ এ গ্রামীণ জনপদে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল বারি-১৮ সরিষার মাঠ দিবস। নাটোর সদর উপজেলা কৃষি বিভাগে কর্মরত কৃষিবিদ আর এলাকার কৃষকদের সমাবেশ। এ সমাবেশে নতুন এ সরিষার সাথে মেলবন্ধন তৈরী করে দেওয়া হলো কৃষকদের। সামনের রবি মৌসুমে এ সরিষা চাষে আগ্রহী হয়ে উঠলেন তাঁরা।

মাঠ দিবসে উপস্থিত হালসা এলাকার কৃষি উদ্যোক্তা এস এম মহসিন উল হক বলেন, সামনের মৌসুমে আমি বারি-১৮ সরিষা আবাদ করবো। আরিফ ভাইয়ের কাছ থেকে বীজ নিতে চাই। জমিতে দেখলাম, ১০টি মৌ-বক্স। এসব মৌ-বক্স থেকে লক্ষ টাকার মধুও পাওয়া যাবে।

বারি-১৮ সরিষা চাষের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করে উদ্যোক্তা আরিফুল ইসলাম বললেন, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইন্সটিটিউট থেকে বীজ সংগ্রহ করে বারি-১৮ জাতের সরিষা সাড়ে সাত বিঘা জমিতে আবাদ করেছি। আশা করছি, ৬০ মণ ফলন পাবো।

নাটোর সদর উপজেলা কৃষি অফিসার মোঃ মেহেদুল ইসলাম বলেন, প্রদর্শনী খামার পর্যবেক্ষণ আর মাঠ দিবসে উপস্থিতির মাধ্যমে বারি-১৮ জাতের নতুন উদ্ভাবিত সরিষা সম্পর্কে জেনেছেন কৃষকবৃন্দ। উচ্চ ফলনশীল এবং রোগবালাইমুক্ত হওয়ার কারণে এ সরিষা চাষে আগ্রহী হয়েছেন তাঁরা। আগামী রবি মৌসুম থেকে নাটোরে নতুন এ সরিষা চাষের ব্যাপক সম্প্রসারণ ঘটবে বলে আশা করা হচ্ছে। এ ব্যাপারে কৃষি বিভাগ কৃষকদের সব রকমের সহযোগিতা প্রদান করবে।

Sangbad Sarabela

সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর

যোগাযোগ: । [email protected] । বিজ্ঞাপন ও বার্তা সম্পাদক: 01894944220

ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।

আমাদের সঙ্গে থাকুন

© 2024 Sangbad Sarabela All Rights Reserved.