পহেলা ফাল্গুন, বিশ্ব ভালোবাসা ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের দিন ব্যস্ত সময় পার করেছেন ঝিনাইদহের ফুলচাষীরা। দাম ভালো পাওয়ায় মহামারি করোনায় হওয়া ক্ষতি পুষিয়ে লাভের মুখ দেখেছেন তারা। এজন্য সঠিক বাজার ব্যবস্থাপনার পাশাপাশি ফুল পরিবহনেও সরকারি সহযোগিতা পেয়েছেন তারা। এভাবেই নিজেদের উৎফুল্লের কথা জানান এলাকার ফুলচাষীরা।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের দেওয়া তথ্য মতে এ বছর জেলার ছয় উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের মাঠে ৮৭ হেক্টর জমিতে ফুলের আবাদ করা হয়েছে। যা গত বছরের চেয়ে কিছু জমিতে বেশি হলেও দুই বছর আগের চেয়ে পরিমাণে অর্ধেক।
সরেজমিনে দেখা গেছে, জেলার কোটচাঁদপুর উপজেলার ত্রিলোচনপুর গ্রামের মাঠের বাগানে শোভা পাচ্ছে গোলাপ, জারবেরা, গাঁদা, চন্দ্রমল্লিকাসহ নানা জাতের ফুল। সেই ফুলের বাগানে পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন বাগানীরা।
স্থানীয় কৃষকরা জানান, আজকে বসন্ত উৎসব ও বিশ্ব ভালোবাসা দিবস। এর পাশাপাশি সামনে ২১ শে রেফব্রুয়ারি। তাই ব্যস্ততা অনেক বেড়েছে। কেউ করছে আগাছা দমন আবার কেউ করছেন কীটনাশক স্প্রে।
ত্রিলোচনপুর গ্রামের কৃষক বকুল হোসেন জানান, চাহিদা মেটাতে দিনরাত পরিশ্রম করছেন চাষীরা। বিশেষ দিবসগুলোতে ভালো দাম পাওয়ায় সারা বছরের লাভ-লোকসানের হিসাব মিলে যায়। তাই ফুলের ফলন ভালো পেতে মাঠে কাজ করছেন সবাই।
বালিয়াডাঙ্গার রাজ্জাক আলী নামের এক ফুলচাষী বলেন, বাজার ধরার জন্য ফুলে সার ঔষুধ দিচ্ছি। ফুলটা যেন ভালো থাকে এই জন্য কাজ করছি। ফুলের সৌন্দর্য বাড়ানোর জন্য ৩ দিন পর পর ওষুধ স্প্রে করছি। সেচ ও সার দিচ্ছি। বাজারে যেন দাম বেশি পাই এই জন্য পরিচর্যা করছি।
আব্দুল আজিজ নামের এক বাগানী বলেন, গত ২ বছর করোনার কারণে আমরা ফুলের দাম পাইনি। আমাদের অনেক লোকসান হইছে। বসন্ত ও ভালোবাসা দিবসসহ এই মাসের যে ৩টা অকেশন আছে এই সময় যদি আমরা ফুলটা ভালোভাবে বেচতে পারি তাহলে লোকসান একটু কমাতে পারব। সরকারের প্রতি আকুল আবেদন এই সময় যেন বাজার ব্যবস্থাপনা আর ফুল পাঠানোর জন্য পরিবহণ ব্যবস্থা যেন একটু ভালো করে। তাহলে আমরা লাভবান হতে পারব।
এ ব্যাপারে ঝিনাইদহ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আজগর আলী জানান, ফুলচাষে কৃষকদের ভালো ফলন পেতে চাষীদের বিভিন্ন সময় প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। এছাড়াও উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের মাধ্যমে তাঁদের নিয়মিত খোঁজ নেওয়া হচ্ছে। ফুল চাষ বাড়াতে কৃষকদের নিয়মিত পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।