× প্রচ্ছদ বাংলাদেশ বিশ্ব রাজনীতি খেলা বিনোদন বাণিজ্য লাইফ স্টাইল ভিডিও ঘটনাবহুল ২০২৪ সকল বিভাগ
ছবি ভিডিও লাইভ লেখক আর্কাইভ

ফেনীতে পান চাষে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন চাষীরা

এস এম ইউসুফ আলী

১০ জানুয়ারি ২০২২, ২৩:৩৭ পিএম

পান একটি মুখরোচক খাবার। দেশের প্রায় সব জেলাতে কমবেশি পানের চাষ হয়। ফেনীর দাগনভূঞা উপজেলার জায়লস্কর ইউনিয়নের হীরাপুর ও সোনাগাজী উপজেলার চরদরবেশ ও চর মজলিশপুর ইউনিয়নেও স্বল্প পরিসরে পান চাষ হয়। এ সব এলাকার মাটি ও আবহাওয়া পান চাষের জন্য অত্যন্ত উপযোগী হওয়ায় শত বছর আগেও এখানে ব্যাপক হারে পান চাষ হতো।

বর্তমানে ব্যক্তি উদ্যোগে ৮৫ একর জমিতে চাষ হচ্ছে পান। উৎপাদন খরচ বেশি হওয়ায় ও প্রশিক্ষণ এবং সহায়তার অভাবে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে পান চাষিরা। জানা যায়, এখানকার উৎপাদিত পান ফেনীর চাহিদা মিটিয়ে সরবরাহ করা হয় নোয়াখালী, কুমিল্লা, লক্ষ্মীপুরসহ দেশের বিভিন্ন জেলায়।

 বিভিন্ন স্থান থেকে পাইকাররা এসে সোনাগাজী বাজার, কুঠিরহাট, দাসের হাট, কারামতিয়া ও কাজিরহাট ও হীরাপুর থেকে সপ্তাহে দুই দিন পান সংগ্রহ করে নিয়ে যেত দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে। সপ্তাহের দুদিন পাইকারদের চাহিদা অনুযায়ী পান বাজারজাত করতেন চাষিরা।

সোনাগাজীর উত্তর চর সাহাভিকারী গ্রামের পানচাষি শেখ আলী আহম্মদ জানান, নিজস্ব ৭০ শতক জমিতে পান করেন। উৎপাদন বাড়ানো, রোগব্যাধি নির্মূল, সার ও কীটনাশকের সঠিক ব্যবহার সম্পর্কে ধারণা না থাকায় নতুন করে পান চাষে কেউ আগ্রহ দেখাচ্ছে না।

উপাদানের খরচের পরিমাণ বেশি হওয়ায় পুরনোরা ও মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন পান চাষ থেকে। ফলে ধীরে ধীরে হারিয়ে যেতে বসেছে জেলার এ পান শিল্প।

চর সাহাভিকারী গ্রামের যজ্ঞেশ্বর মজুমদার জানান, পারিবারিক ভাবে তারা ৫০ বছরের বেশি সময় পান চাষ করছেন। তার সংসারের একমাত্র আয়ের উৎস পানের বরজ। কিন্তু বর্তমানে উৎপাদন খরচ বেশি হওয়ায় পান চাষ কমিয়ে সেই জমিতে অন্যান্য সবজি চাষ করেন। কোন প্রকার সহযোগিতা বা প্রশিক্ষণ দেয় না কৃষি দপ্তর।

 পান চাষি রতন দাস বলেন, পরিবারের ঐতিহ্য হিসেবে পূর্ব পুরুষদের ন্যায় আমরা মাত্র ত্রিশ শতক জমিতে পান চাষ অব্যাহত রেখেছি। আগে দেড়-দুই একর জমিতে চাষ করতাম। সরকারি সুযোগ সুবিধা পেলে আবারো চাষাবাদ বৃদ্ধির ইচ্ছা আছে।

 কৃষক শ্রীনাথ মজুমদার বলেন, জীবিকা নির্বাহের জন্য দীর্ঘদিন যাবত ৫০ শতক জমিতে পান চাষ করি। বর্ষা মৌসুমে এখানে উৎপাদিত পান প্রতি বিড়া (৭২টি) ৪৫-৫০ টাকা আর শীতের মৌসুমে ৭০-৮০টাকায় বিক্রি হয়। উৎপাদন ব্যয় অনুযায়ী তেমন লাভ হয় না। পরিবারের বিকল্প উপার্জন না থাকায় চরম অর্থকষ্টে আছেন বলে জানান পান চাষি শ্রীনাথ।

 সোনাগাজীর চর দরবেশ ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম ভুট্টো জানান, পান চাষিদের জন্য কৃষি দপ্তর বা ইউনিয়ন পরিষদের বিশেষ কোন বরাদ্দ নেই। তবে পরিষদের পক্ষ থেকে সব সময় চাষিদের সহযোগিতা করা হয়। অত্র ইউনিয়নের ঐতিহ্যবাহী পান চাষ যাতে হারিয়ে না যায়, সেজন্য ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে উদ্যোগ নেয়া হবে বলে জানান তিনি।

 সোনাগাজী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাজ্জাদ হোসেন মজুমদার জানান, চর দরবেশ ও চর মজলিশপুরে ৭০জন কৃষক প্রায় ৭৫ একর জমিতে পান চাষ করছেন। তিন-চার বছর আগেও এর পরিমাণ দ্বিগুণ ছিল।

পান চাষিদের সরকারি ভাবে কোনও প্রশিক্ষণের বা প্রণোদনা দেয়ার মত বরাদ্দ নেই। তবে চাষিরা যদি কোনও পরামর্শ চায় তখন আমরা বিভিন্ন বিষয়ে পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা করি। পান চাষিরা যদি প্রশিক্ষণের জন্য আবেদন করেন তাহলে কৃষি দপ্তর থেকে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা যেতে পারে বলে জানান তিনি।

Sangbad Sarabela

সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর

যোগাযোগ: । [email protected] । বিজ্ঞাপন ও বার্তা সম্পাদক: 01894944220

ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।

আমাদের সঙ্গে থাকুন

© 2024 Sangbad Sarabela All Rights Reserved.