× প্রচ্ছদ বাংলাদেশ বিশ্ব রাজনীতি খেলা বিনোদন বাণিজ্য লাইফ স্টাইল ভিডিও সকল বিভাগ
ছবি ভিডিও লাইভ লেখক আর্কাইভ

জয়পুরহাটে মাইক্রোবাসচালকের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার, হত্যার অভিযোগ স্ত্রীর

জয়পুরহাট প্রতিনিধি :

১৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৭:০৫ পিএম

ছবি: সংবাদ সারাবেলা।

জয়পুরহাটের আক্কেলপুরে ইউনিয়ন পরিষদের এক সদস্যের ব্যক্তিগত কার্যালয় থেকে সুজন মন্ডল (৩২) নামে এক মাইক্রোবাসচালকের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিহতের স্ত্রীর দাবি, টাকা চুরির অভিযোগে ইউপি সদস্য ও তাঁর সহযোগীরা সুজনকে রাতভর পিটিয়ে হত্যা করেছেন। পরে ঘটনাটি আড়াল করতে আত্মহত্যার নাটক সাজানো হয়।

বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) সকাল ১১টার দিকে আক্কেলপুর উপজেলার গোপীনাথপুর ইউনিয়নের কাশিরা বাজারে ৭ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য সেলিম হোসেনের ব্যক্তিগত কার্যালয় থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়।

নিহত সুজন মন্ডল কাশিরা পুকুরিয়া গ্রামের ওসমান মন্ডলের ছেলে। তিনি পেশায় মাইক্রোবাসচালক ছিলেন।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, বুধবার বিকেলে গোপীনাথপুর ইউনিয়নের পাকুরদাড়িয়া গ্রামে বিজয় দিবস উপলক্ষে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এ সময় সুজন মন্ডল তাঁর খালাতো বোন সোনাভানের বাড়িতে গিয়ে দরজা ভেঙে ৭০ হাজার টাকা চুরি করেন বলে অভিযোগ ওঠে। পরে সন্ধ্যার দিকে ইউপি সদস্য সেলিম হোসেনের সহায়তায় তাঁকে ধরে এনে গ্রামবাসী মারধর করেন। একপর্যায়ে সুজন টাকা চুরির কথা স্বীকার করেন এবং ৪৫ হাজার টাকা ফেরত দেন।

এরপর ইউপি সদস্য সেলিম হোসেন তাঁকে কাশিরা বাজারে তাঁর ব্যক্তিগত কার্যালয়ে নিয়ে যান। সেখানে আবারও দফায় দফায় মারধরের শিকার হন সুজন। এতে তিনি গুরুতর আহত হন। পরে থানায় খবর দিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে শাস্তি দেওয়ার কথা বলা হলেও রাত হওয়ায় পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়নি। পরে দুইজন গ্রাম পুলিশ পাহারায় রেখে সুজনকে ওই কার্যালয়ে আটকে রাখা হয়।

বৃহস্পতিবার সকালে সুজন মন্ডল তাঁর স্ত্রী মারুফা আকতারের সঙ্গে মুঠোফোনে কথা বলেন। কিছু সময় পর পাহারায় থাকা গ্রাম পুলিশরা তাঁর আত্মহত্যার খবর দেন। পরে স্বজন ও এলাকাবাসী এসে দেখেন, কার্যালয়ের ভেতরে ফ্যানের হুকের সঙ্গে গলায় রশি পেঁচানো অবস্থায় সুজন মন্ডলের লাশ ঝুলছে।

নিহতের স্ত্রী মারুফা আকতার বলেন, “আমার স্বামীকে রাতভর নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে। তাঁর মাথায় ব্যান্ডেজ ও শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। আমার স্বামী চুরি করে থাকলে তার বিচার করার দায়িত্ব পুলিশের, ইউপি সদস্যের নয়। আমি এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত সবার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।”

অভিযোগ অস্বীকার করে ইউপি সদস্য সেলিম হোসেন বলেন, পাকুরদাড়িয়া গ্রামের লোকজন সুজনকে মারধর করেছে। পরে তাঁকে তাঁর কার্যালয়ে এনে থানায় খবর দেওয়া হয়। পুলিশ জানায়, রাতে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসানো সম্ভব নয়। এরপর দুইজন গ্রাম পুলিশ পাহারায় রেখে তিনি বাড়িতে চলে যান। তাঁর দাবি, পাহারার ফাঁকে সুজন আত্মহত্যা করেন।

গোপীনাথপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান বলেন, ইউপি সদস্যের ব্যক্তিগত কার্যালয়ে কাউকে আটকে রাখার কোনো আইনগত এখতিয়ার নেই। বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।

আক্কেলপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহিন রেজা বলেন, ইউপি সদস্যের ব্যক্তিগত কার্যালয় থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। নিহতের মাথায় ব্যান্ডেজ এবং শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করা হচ্ছে। লাশটি উদ্ধার করে জয়পুরহাট জেনারেল হাসপাতাল মর্গে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়ার পর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ঘটনার পর এলাকায় উত্তেজনা ও চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

Sangbad Sarabela

সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর

যোগাযোগ: । [email protected] । বিজ্ঞাপন ও বার্তা সম্পাদক: 01894944220

ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।

আমাদের সঙ্গে থাকুন

© 2025 Sangbad Sarabela All Rights Reserved.