লালমনিরহাট ব্যাটালিয়ন (১৫ বিজিবি) এর দায়িত্বপূর্ণ সীমান্ত এলাকায় চলমান চোরাচালান ও মাদক বিরোধী কার্যক্রমের অংশ হিসেবে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ভিন্ন ভিন্ন বিওপির টহলদল ০৩টি বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে ভারতীয় ট্যাপেন্টাডল ট্যবলেট, ফেন্সিডিল, ইস্কাফ সিরাপ ও মদ জব্দ করেছে। চোরাচালান প্রতিরোধের মাধ্যমে সীমান্ত নিরাপত্তা ও মাদকবিরোধী অভিযানে বিজিবি’র দৃঢ় অবস্থানের প্রমাণ মিলেছে।

বিশ্বস্ত গোয়েন্দা সূত্রে বিজিবি জানতে পারে যে, চোরাকারবারীরা সীমান্ত দিয়ে মাদক পাচার করবে। উক্ত তথ্যানুযায়ী, ০৯ ডিসেম্বর ২০২৫ তারিখ সন্ধ্যা আনুমানিক ৭:৩০টায় বালারহাট বিওপি’র আওতাধীন বালাটারী (থানা-ফুলবাড়ী, জেলা-কুড়িগ্রাম) নামক স্থানে বিজিবি’র টহলদল বিশেষ অভিযান পরিচালনাকালীন একজন চোরাকারবারীকে বাইসাইকেলযোগে আসতে দেখে টহলদল চ্যালেঞ্জ করলে উক্ত ব্যক্তি বাইসাইকেল ফেলে ভারতের অভ্যন্তরে পালিয়ে যায়। উক্ত স্থানে তল্লাশী করে ৪০৪ পিছ ট্যাপেন্টাডল ট্যবলেটসহ ০১টি বাইসাইকেল জব্দ করা হয়।

পরবর্তীতে, ১০ ডিসেম্বর ২০২৫ তারিখ রাত আনুমানিক ১২:৩০ ঘটিকায় ঝাউরানী বিওপি’র আওতাধীন উত্তরঝাউরানী(থানা-আদিতমারী ও জেলা-লালমনিরহাট) নামক স্থানে টহল পরিচালনাকালীন চোরাকারবারীদের গতিবিধি টের পেয়ে টহলদল তাদেরকে চ্যালেঞ্জ করলে চোরাকারবারীরা তাদের সাথে থাকা মালামাল ফেলে দৌড়ে সীমান্ত অতিক্রম করে ভারতের অভ্যন্তরে চলে যায়। চোরাকারবারীদের ফেলে রাখা মালামাল তল্লাশী করে ভারতীয় ইস্কাপ সিরাপ ২০ বোতল এবং ভারতীয় ফেন্সিডিল ১১ বোতল জব্দ করা হয়।

এছাড়াও, ০৯ ডিসেম্বর ২০২৫ তারিখ দিন আনুমানিক ০২:২০ ঘটিকায় অনন্তপুর বিওপি’র আওতাধীন পশ্চিম রামখানা (থানা-ফুলবাড়ী ও জেলা-কুড়্রিগাম) এলাকায় টহলদল একজন চোরাকারবারীকে আসতে দেখে চ্যালেঞ্জ করলে মালামাল ফেলে পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে উক্ত স্থানে তল্লাশী করে ভারতীয় মদ ০৩ বোতল জব্দ করা হয়।

লালমনিরহাট ব্যাটালিয়ন (১৫ বিজিবি) এর অধিনায়কের পক্ষ থেকে জানানো হয়, উদ্ধারকৃত মাদকদ্রব্য ট্যাপেন্টাডল ট্যবলেট ৪০৪ পিছ, যার সিজার মূল্য ৪০,৪০০/- টাকা, ভারতীয় ইস্কাফ সিরাপ ২০ বোতল, যার সিজার মুল্য ৮,০০০/- টাকা, ভারতীয় ফেন্সিডিল ১১ বোতল, যার সিজার মূল্য ৪,৪০০/-টাকা, ভারতীয় মদ ০৩ বোতল, যার সিজার মূল্য ৪,৫০০/-টাকা এবং বাইসাইকেল ০১টি যার সিজার মূল্য ৮,০০০/-টাকাসহ সর্বমোট সিজার মূল্য ৬৫ হাজার ৩০০শত টাকা। এ ঘটনায় আটকৃত আসামীর বিরুদ্ধে ভুরুঙ্গামারী থানায় মামলা দায়েরপূর্বক মাদকদ্রব্যসহ থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। এছাড়া মাদক সংশ্লিষ্ঠ অন্যান্য চোরাকারবারীদের তথ্য সংগ্রহপূর্বক মামলা দায়ের প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

লালমনিরহাট ব্যাটালিয়ন (১৫ বিজিবি) এর কমান্ডিং অফিসার “লেফটেন্যান্ট কর্নেল মেহেদী ইমাম, পিএসসি” বলেন, “দেশের যুবসমাজকে মাদকমুক্ত রাখতে বিজিবি সর্বদা সতর্ক ও প্রস্তুত রয়েছে। মাদক পাচার রোধে সীমান্তের স্পর্শকাতর এলাকা চিহ্নিত করে বিজিবি’র গোয়েন্দা নজরদারি ও টহল তৎপরতা আরও জোরদার করা হয়েছে।”

এছাড়া তিনি স্থানীয় জনগণকে মাদকবিরোধী অভিযান পরিচালনা এবং প্রতিরোধে সহযোগিতা করার আহ্বান জানান এবং গোপন তথ্য প্রদানকারীদের পরিচয় গোপন রাখার নিশ্চয়তা দেন।

এই অভিযানে বিজিবির সাহসিকতা ও কৌশলগত দক্ষতা প্রশংসার দাবিদার, যা মাদকমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।