প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বার্ষিক পরীক্ষা শুরুর প্রথম দিনেই শিক্ষক ধর্মঘটের প্রভাব পড়তে শুরু করেছে কুড়িগ্রামে। তিন দফা দাবিতে কর্মবিরতিতে থাকা শিক্ষকরা পরীক্ষার দায়িত্ব পালন না করায় অভিভাবক ও শিক্ষা কর্মকর্তাদের ওপর পড়েছে পরীক্ষা নেওয়ার দায়িত্ব। এতে ক্ষোভ জানিয়েছেন অভিভাবকেরা।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের তথ্য অনুযায়ী, কুড়িগ্রামের ১ হাজার ২৪০টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রায় ১৫ হাজার ৭২৪ শিক্ষার্থীর বার্ষিক পরীক্ষা চলছে। তবে শিক্ষকরা কর্মবিরতিতে থাকায় অনেক বিদ্যালয়ে পরীক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। কোথাও অভিভাবকেরা নিজেরাই পরীক্ষা নিচ্ছেন, আবার কোথাও শিক্ষা কর্মকর্তারা উপস্থিত হয়ে পরীক্ষা পরিচালনা করছেন।
রৌমারী মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, শিক্ষকরা বিদ্যালয়ে থাকলেও লাইব্রেরিতে অবস্থান করছেন। এমন পরিস্থিতিতে ওই উপজেলার সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা নাজমুল করিম প্রধান শিক্ষক ও কয়েকজন অভিভাবককে সঙ্গে নিয়ে পরীক্ষা নিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘রৌমারী উপজেলার ১১৫টি বিদ্যালয়ে পরীক্ষা হচ্ছে। কিন্তু কোনো বিদ্যালয়েই শিক্ষকরা পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছেন না। কোথাও প্রধান শিক্ষক অফিস সহকারীসহ পরীক্ষা নিচ্ছেন, কোথাও অভিভাবকেরা পরীক্ষার দায়িত্ব পালন করছেন।’
এই অবস্থায় অভিভাবকদের অনেকে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। আব্দুল কাদের নামের এক অভিভাবক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লিখেছেন, ‘দাবি ন্যায্য হোক বা যৌক্তিক—পরীক্ষার সময় শিক্ষকদের এভাবে কর্মবিরতি গ্রহণ সমর্থনযোগ্য নয়।’
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা স্বপন কুমার রায় চৌধুরী বলেন, ‘বার্ষিক পরীক্ষা একটি সিডিউল পরীক্ষা। ১ থেকে ১০ ডিসেম্বর পর্যন্ত এই পরীক্ষা চলবে। এর পরই বৃত্তি পরীক্ষা। ঠিক এই সময় আন্দোলনে যাওয়া নৈতিকভাবে ঠিক হয়নি। শিক্ষার্থীদের জিম্মি করে কোনো সচেতন মানুষ আন্দোলনকে সমর্থন দেবেন না।’
শিক্ষকদের কর্মবিরতিতে পুরো জেলার পরীক্ষার পরিবেশ অস্বাভাবিক হয়ে পড়েছে। অভিভাবকেরা দ্রুত সংকট সমাধানে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উদ্যোগ প্রত্যাশা করছেন।